শিশু সায়মাকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৫৩ এএম, ৭ জুলাই ২০১৯ রবিবার
সামিয়া আফরিন সায়মা। সাত বছরের ফুটফুটে শিশুটি দুষ্টুমিতে মাতিয়ে রাখত সারা ঘর। মা-বাবা আর তিন ভাইবোনের সঙ্গে থাকত রাজধানীর ওয়ারীর বনগ্রাম এলাকায় ১৩৯ নম্বর বহুতল ভবনের ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটে।
ওই ফ্ল্যাটে সায়মার বইখাতা, খেলনা-কাপড় সব কিছুই রয়েছে থরে থরে সাজানো। নেই কেবল সায়মা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘর থেকে খেলতে বেরিয়ে ছিল সে। এর পর ওই ভবনেই এক নরপশুর নির্মম লালসার শিকার হয়ে কুসুমকোমল এ শিশুটি চলে গেছে না ফেরার দেশে।
শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ভবনটির নবম তলার খালি একটি ফ্ল্যাটের রান্নাঘরের মেঝেতে গলায় রশি, মুখ বাঁধা অবস্থায় মেলে রক্তাক্ত সায়মার নিথর দেহ। চিকিৎসকরা বলছেন, হত্যার আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল এইটুকুন শিশুটি।
এ ঘটনায় সায়মার বাবা আবদুস সালাম বাদী হয়ে শনিবার অচেনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে ওয়ারী থানায় মামলা করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের এ মামলায় বহুতল ওই ভবনটির মালিক, নিরাপত্তাকর্মী ও তার ছেলেসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল দুপুরে সায়মার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, ধর্ষণের পর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় সায়মাকে।
ময়নাতদন্তে শিশুটির যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্ন, মুখে রক্ত ও আঘাতের চিহ্ন, ঠোঁটে কামড়ের দাগ দেখা গেছে। শিশুটির বাবা নবাবপুরের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, চার ভাইবোনের মধ্যে ছোট সায়মা রাজধানীর ওয়ারী সিলভারডেল স্কুলের নার্সারিতে পড়ত।
প্রতিদিন বিকালে নিচে ও ভবনের ওপরের ফ্ল্যাটে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে বের হতো সে। শুক্রবার সন্ধ্যায়ও মাকে বলে গিয়েছিল খেলতে বের হচ্ছে সে। কিন্তু মাগরিবের নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বাসায় ফিরে জানতে পারেন সায়মা তখনো ফেরেনি।
এর পর স্ত্রীসহ তিনি মেয়েকে খুঁজতে শুরু করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ভবনটির নবম তলার খালি ফ্ল্যাটে মেলে শিশুটির লাশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নুরুল আমিন জানান, শিশু সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে ঘটনার কারণ বলা যাবে।
এ কাণ্ডে ছয়জনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি বলে জানান তিনি। বলেন, সম্ভাব্য সব দিক মাথায় রেখে এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।