ঢাকা, সোমবার ০৬, মে ২০২৪ ৪:১০:৪৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

অস্থির সময় পার করছি আমরা : রাজীব ঘোষ

রাজীব ঘোষ

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০৫ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৯ বুধবার

রাজীব ঘোষ

রাজীব ঘোষ

খুব অস্থির সময় পার করছি আমরা, খুব। এবারই প্রথম তা নয়, নানান বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে গুজব। অনেক দূরের ঘটনা নয়, এইত কদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সফল একটি আন্দোলনকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিল একটি মহল, শুধুমাত্র গুজব ছড়িয়ে। পেছনে পেছনে অপতৎপরতা চালানো একটি রাজনৈতিক মহলতো ছিলই, সাথে যোগ দিলেন আমাদের মুখ পরিচিত অনেক বিজ্ঞজন। শেষ রক্ষা হয়নি, আইনি প্রক্রিয়াতে অপরাধীদের পড়তেই হয়েছে। মাঝে ক্ষতি, বাচ্চাগুলোকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিল।

আর সাঈদী সাহেবকেতো চাঁদে দেখার খুশিতে মাইকিং করে হোলি খেললো সুযোগসন্ধানীরা, প্রাণ গেল সাধারণ মানুষের।

এখন যে ছেলেধরার গুজব শুরু হল সেটাও একসময় থেমে যাবে। তবে মানুষের মধ্যে যে ভয় ঢুকেছে তা কাটতে সময় লাগবে। তবে সবগুলো ঘটনার শুরু সাথে সাথে একটি রাজনৈতিক ফায়দাওয়ালা গ্রুপ দাঁড়িয়ে যায়, যারা বরাবরই চেষ্টা করে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। একেতো গুজব মহামারি আঁকার ধারণ করেছে, অন্যদিকে আমরা সেসব গুজবকে ফুঁ দিচ্ছি।

বাড্ডার ঘটনাই বলি। বাচ্চার স্কুলের খোঁজ নিতে এসে গুজবের বলি হলেন এক মা। যারা মারছে ভিডিওতে একদমই স্পস্ট কয়েকজন। আমরাই সেই ছবি স্টিল করে ফেইসবুক ভাসিয়ে দিলাম, পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য। ফলাফল, এক নিরপরাধ ছেলে ধরা পড়ল পুলিশের হাতে। নিশ্চিত না হতেই ছেলেটির ছবিসহ হত্যাকারি গ্রেপ্তার হয়েছে মর্মে আবারও ফেইসবুক ভাসিয়ে দিলাম। ছেলেটি যে বাড্ডার প্রকাশ হওয়া ভিডিওর হৃদয় না সেটা কিন্তু পুলিশ নিশ্চিত, কিন্তু আমাদের কি আর তর সয়! ছবিসহ আরেকটা ছেলের জীবনকে বিপন্নের দিকে ঠেলে দিলাম।
যে কারণে আমার এই লেখা এবার আসি সেই কথায়। আমরা সংবাদকর্মীরা কি করলাম? নিশ্চিত না হয়েই নিউজ চালিয়ে দিলাম রেনুর হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আরও একটা গুজব তৈরি করলাম। কে কার আগে নিউজ দিবে সেই প্রতিযোগিতা চলছে অনেকদিন ধরেই।

আমি বলি কি, একটু পরে সংবাদ পরিবেশন করলে কি ক্ষতি হয়? যতক্ষণ না পর্যন্ত তথ্যটা যাচাই করা না যায়। আগে দিলে পাঠক বা দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পাবে পরে দিলে পাবে না এই মতাদর্শে বিশ্বাসী না, সংবাদটির সত্যতা কতটুকু, তথ্যের ভিত্তি আছে কি না সেটাই পাঠক বা দর্শকরা গ্রহণ করবেন। এই গ্রহণযোগ্যতা একটি প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ মজবুত করবে। এটা আমি বিশ্বাস করি।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমরা এতটাই ফেইসবুক নির্ভর হয়ে গেছি যে সংবাদ সংগ্রহের সবচেয়ে বড় মাধ্যম বলে মনে করি একে। অবশ্যই সংবাদ পাওয়ার বড় মাধ্যম এই ফেইসবুক, তবে এখানের তথ্য নির্ভর্যোগ্য কোন মাধ্যম হতে যাচাই করে তবেই তা শেয়ার অথবা পরিবেশন করা উচিত।

আমরাই বলছি গুজবে কান দিয়েন না, আবার আমরা নিজেরাই গুজব ছড়াচ্ছি। সময় আছে, আসুন বিকল্প পথে হাঁটি।, আমাদের একটা ভুল সংবাদ বা মন্তব্য মানুষের জীবনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে।

# রাজীব ঘোষ : সাংবাদিক
(লেখাটি ফেসবুক থেকে নেয়া)