পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগাল
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৯:৫৫ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগাল। আটলান্টিকের পূর্ব কিনারা ঘেঁষে এই দেশের রাজধানী ডাকার। সেনেগালের নামকরণ হয়েছে সেনেগাল নদী থেকে। সেনেগাল নদী দেশটির পূর্ব ও উত্তর সীমান্তে বহমান। সেনেগালের পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর; উত্তরে মৌরিতানিয়া, পূর্বে মালি এবং দক্ষিণে গিনি ও গিনি-বিসাও। এছাড়া গাম্বিয়ার উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ সীমানা সেনেগালের সঙ্গে সংযুক্ত।
ফরাসি ভাষা সেনেগালের সরকারি ভাষা। প্রায় ৩৫ শতাংশ লোকের মাতৃভাষা হল ওলোফ ভাষা। আরও প্রায় ৪৫ শতাংশ লোক দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ওলোফ ভাষাতে কথা বলতে পারেন। সেনেগালে আরও প্রায় ৩০টি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে দিওলা ভাষা, ফুলাকুন্দা ভাষা, মালিংকে ভাষা, সেরের ভাষা এবং সোনিংকে ভাষা উল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক কাজকর্মে ফরাসি ভাষা ব্যবহার করা হয়।
সেনেগালে শতকরা ৯৪ ভাগ মুসলমান। এই মুসলিমরা শুধু নামেই মুসলিম নয়; তারা যথেষ্ট ধার্মিক। ধর্মচর্চায় সেনেগালবাসীর বেশ সুনাম রয়েছে। মুসলমান ছাড়াও ৫ ভাগ খ্রিষ্টান এবং অবশিষ্ট এক ভাগ অন্যান্য ধর্মের।
দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি। এক লক্ষ ছিয়ানব্বই হাজার সাতশত বাইশ বর্গ কিলোমিটারের দেশটির অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করে।
৪ এপ্রিল সেনেগালের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে তারা স্বাধীনতা লাভ করে। সেনেগালের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠান আফ্রিকার অন্যান্য দেশের মতো হলেও আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেটা হলো, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণে আয়োজিত সমাবেশে দাঁড়িয়ে পবিত্র কোরআন খতম দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত কোরআন তেলাওয়াতে আগ্রহীদের আগে থেকেই এক পৃষ্ঠা করে ভাগ করে দেওয়া হয়। সেনেগালের প্রচলিত কোরআন শরিফগুলো ৩০০ পাতার (৬০০ পৃষ্ঠা)। সে হিসেবে কোরআন খতম দিতে প্রয়োজন হয় ৬শ’ মানুষের মাত্র ২ থেকে ৩ মিনিট। মানুষ বেশি হলে একাধিক খতম দেওয়া হয়।
ডাকার গ্র্যান্ড মসজিদ সেনেগালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনা। দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি ডিজাইন করেছেন ফরাসি এবং মরক্কোর স্থাপত্যবিদরা।
বাংলাদেশ থেকে সেনেগালের সময়ের ব্যবধান ৫ ঘন্টার। বাংলাদেশ–সেনেগাল সম্পর্ক হল বাংলাদেশ এবং সেনেগাল রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম আফ্রিকার রাষ্ট্র হল সেনেগাল। রাজধানী ডাকারে বাংলাদেশের দূতাবাস থাকলেও বাংলাদেশে সেনেগালের কোনো নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নেই। দুই রাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক উষ্ণ এবং উভয়েই এ সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করে তুলবার ব্যাপারে একমত।
২০০৩ সালে সেনেগাল অর্গানাইজেশন অব ইসলামি কোঅপারেশনে বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেলকে সমর্থন দেয়।
দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও সেনেগাল দুই দেশই পারস্পরিক আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছে। সেনেগাল বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।
সেনেগালের বাজারে বাংলাদেশে তৈরি সিরামিক, ওষুধ, তৈরি পোশাক, পাট ও চামড়াজাত দ্রব্য ভালো কদর পেয়েছে। অধিকন্তু বাংলাদেশ সেনেগালকে দক্ষ জনসম্পদ আহরণে আহ্বান করেছে যারা সেনেগালের সামাজিক-অর্থনৈতিক খাতের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে।