ঢাকা, শুক্রবার ০৩, মে ২০২৪ ১০:৫০:৪০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

আজ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শাবানার জন্মদিন

বিনোদন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:৪৮ পিএম, ১৫ জুন ২০২০ সোমবার

শাবানা।  ছবি: সংগৃহীত

শাবানা। ছবি: সংগৃহীত

তার নাম আফরোজা সুলতানা রত্না। জন্ম ১৯৫২ সালের ১৫ জুন। আজ তার জন্মদিন। হ্যাঁ বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানার কথাই বলছি। শুভ জন্মদিন প্রিয় অভিনয় শিল্পী।

বাংলাদেশের সিনেমা জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীদের অন্যতম প্রধান তিনি। শাবানার দেশের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান থানার ডাবুয়া গ্রামে। বাবা ফয়েজ চৌধুরী একজন টাইপিস্ট, পরে চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেন তিনি। মা ফজিলাতুন্নেসা পেশায় গৃহিণী। ডাকনাম রত্না, চলচ্চিত্রে আসার পর নাম হয় শাবানা। তবে শাবানা নাম হবার আগেও তার রত্না নামে কিছু ছবি মুক্তি পায়।

মাত্র ৯ বছর বয়সে প্রথম অভিনয় করেন ‘নতুন সুর’ ছবিতে। তার বাবা ফয়েজ চৌধুরী ছবিটিতে শাবানার বাবার ভূমিকাতেই ছিলেন। স্বামী ওয়াহিদ সাদিক চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিন ছেলে-মেয়ের জননী। তিনি বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী।

পাকিস্তানি নায়ক নাদিমের বিপরীতে শাবানাকে কাস্ট করা হয় ‘চকোরী’ ছবিতে ১৯৬৭ সালে। সেটাই তার অভিনীত প্রথম ছবি। তার অভিনীত শেষ ছবি ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’। শাবানা মোট ২৯৯টি চলচ্চিত্রে অীভনয় করেছেন। তিনি একাধিক ছবি প্রযোজনাও করেছেন।

শাবানার অতুলনীয়, প্রখর অভিনয়ক্ষমতা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তার অনেক ছবিতে। তিনি রোমান্টিক, রোমান্টিক ড্রামা, ফ্যামিলি ড্রামা, পলেটিক্যাল ড্রামা, সাহিত্যভিত্তিক ছবি, বিদেশী ছবি, পোশাকি ছবি, ফোক-ফ্যান্টাসি ছবি সব ধরনের চলচ্চিত্রে বিচরণ করে নিজের মাল্টিডাইমেনশনাল প্রতিভার পরিচয় দেন। একটা সময় ছিল যখন টেলিভিশনের সামনে বসে শাবানা-র অভিনয় দেখে মা-বোনেরা কেঁদে বুক ভাসাত।

কান্নার অভিনয়ে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী, এ প্রসঙ্গে পরিচালক আমজাদ হোসেন বলেছেন-‘শাবানার চোখের পানির দাম কোটি টাকা।’

উল্লেখযোগ্য ছবি : আনাড়ি, পায়েল, আন্ধি, চকোরী, সমাপ্তি, ছদ্মবেশী, মায়ার বাঁধন, রাজরাণী,  অমর প্রেম, অবুঝ মন, লুকোচুরি, সাহেব বিবি গোলাম, অনুভব, দোস্ত দুশমন, আসামী, বধূ বিদায়, মধুমিতা, ফকির মজনু শাহ, অনুরাগ, ছুটির ঘণ্টা, ঘরে-বাইরে, দুই পয়সার আলতা, অগ্নিকন্যা, বধূ বিদায়, ভাত দে, মরণের পরে, আক্রোশ, চাঁপা ডাঙার বউ প্রভৃতি।

রত্না নামে অভিনীত চলচ্চিত্র: তালাশ, ডাকবাবু, ভাইয়া, সাগর, প্যায়সে, আবার বনবাসে রূপবান।

প্রযোজিত ছবি: মুক্তি, মাটির ঘর, সবুজ সাথী, মান সম্মান, নাজমা। এগুলো তার নিজের প্রযোজিত ছবি। এর বাইরে ‘এস এস প্রোডাকশনের ব্যানারে (শাবানা অ্যান্ড সাদিক) কিছু ছবি নির্মিত হয়েছিল। যেমন: স্বামী কেন আসামী, মেয়েরাও মানুষ, ঘাত-প্রতিঘাত, অশান্তি, জালিম, ঝড় তুফান, রাজ নন্দিনী, অবুঝ সন্তান, অন্ধ বিশ্বাস, দুঃসাহস, স্বপ্নের পুরুষ।

শাবানা ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা। এর মধ্যে ১৯৭৭ সালে ‘জননী’ ছবির পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন মূল চরিত্রে না দেয়াতে।

তার একটি রেকর্ড আজ পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেনি। পরপর দুইবার হ্যাটট্রিক পুরস্কার জিতেছিলেন জাতীয় পুরস্কারে।

শাবানার জুটি সব অনন্য। বাণিজ্যিক ছবির সব তারকাদের সাথে তার জুটি গড়ে উঠেছিল। আলমগীরের সাথে শাবানার জুটি দেশের চলচ্চিত্রে অন্যতম শ্রেষ্ঠ। এ জুটির জাদুকরী রসায়নে একটা লম্বা সময় ধরে রাজত্ব চলেছে। এই জুটির শতাধিক ছবি আছে। রাজ্জাক, জসিম, সোহেল রানাদের সাথে তার জুটিও সফল ছিল। ক্যারিয়ারের শেষভাগের প্রায় সব ছবিই ছিল জসিমের বিপরীতে। দেশ পেরিয়ে বিদেশেও শাবানা তার অসাধারণ প্রতিভা ছড়িয়েছেন। পাকিস্তানি নায়ক নাদিমের বিপরীতে তার জুটিও ভীষণ জনপ্রিয় ছিল। তাদের ‘চকোরী, ঝড় তুফান, বশিরা, আনাড়ি’ ছবিগুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

শাবানার ছবির গান সবচেয়ে বহুল সংখ্যক জনপ্রিয়তা পেয়েছে ঢালিউডে। অনেক নায়কের বিপরীতে তার অসংখ্য জনপ্রিয় গান তো আছেই তাছাড়া নিজের একক লিপের গানও বহুল জনপ্রিয়।

শাবানা শেষ পর্যন্ত একজন কিংবদন্তি অভিনেত্রী যার সুবিশাল চলচ্চিত্রকর্ম দেখে একজন চলচ্চিত্র শিল্পী অনায়াসে অনুপ্রেরণা পেতে পারে, তার অভিনয় দেখে অভিনয় শিল্পের প্রতি ভালোবাসা জন্মাতে পারে। শাবানা নামটি আমাদের প্রতিনিয়ত গর্বিত করে।