আজ সকালে এক টুকরো প্রতিবাদ : লাবণ্য লিপি
লাবণ্য লিপি
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৫:২৪ পিএম, ৮ অক্টোবর ২০২০ বৃহস্পতিবার
লাবণ্য লিপি
আজ একটা বেয়াদপকে পিটিয়েছি। অনেক দিনের জমানো রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ- কষ্ট সব এক সঙ্গে ঝেরেছি। কল্যাণপুর থেকে ফার্মগেট আসছিলাম বাসে। ড্রাইভারটা এত বাজে গাড়ি চালাচ্ছিল। দুপুর বলে যাত্রী কম। তাই ওরা রাস্তায় বার বার দাঁড়াচ্ছে। যাত্রীরা থামার কারণ জানতে চাইলে ড্রাইভার বলল, ভাড়া তুলুক আগে।
ভাড়া তোলার জন্য গাড়ি থামাতে হবে? সবাই যখন প্রতিবাদ করছে ড্রাইভার তখন রেগে গিয়ে এত রাফ ড্রাইভ করছিল!
ফার্মগেট আসতেই হেলপার নামতে বলল। আমরা কয়েকজন নামার জন্য দাঁড়িয়েছি ড্রাইভার তখন এমনভাবে গাড়ি টান দিয়েছে যে টাল সামলে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন।
সবাই ড্রাইভারকে গালি দিচ্ছে। আমিও বললাম, নেশাটেশা করছ নাকি!
এ কথা বলে নামছি, এমন সময় পেছন থেকে হেলপার বলে উঠল, খারাপ মহিলা!
কথাটা শুনে মুহূর্তেই মাথায় খুন চেপে গেল। ঘুরে উঠে ওর গালে সপাটে এক চড় বসিয়ে দিলাম। গতকাল থেকে একটু অসুস্থ ছিলাম। কিন্তু এত শক্তি আমার হাতে কেমন করে এলো কে জানে! হেলাপর আর কী বলবে।
দু’জন ছাত্র এরই মধ্যে আমাকে আগলে দাঁড়িয়ে গেল। ওরাও হেলপারকে মারতে যাচ্ছিল। আমিই ওদের বললাম, ছেড়ে দাও!
ভালো লাগল আমাদের ভাইরা দাঁড়িয়ে আছে আমাদের পেছনেই। কয়েকজন নারীও ছিলেন। তারা বরাবরের মতোই গা বাঁচিয়ে চলে গেল। তাতে আমি অবাকও হইনি, রাগও হইনি। শুধু মনে মনে বললাম, তোমাদের জন্যই রাস্তা তৈরি করছি আমরা। যাতে তোমরা নির্বিঘ্নে হেঁটে যেতে পারো।
দাঁড়িয়ে থাকা সব রিকশাওয়ালা মামারা আমার মারামারি দেখছিল। আমি রিকশার কাছে আসতেই একজন ভয়ে ভয়ে বলল, ওঠেন! যা ভাড়া দিয়ে দিয়েন! আহা! ভয় পেয়ে গেছে বেচারা।
বললাম, যা ভাড়া তার চেয়ে বেশিই দেব, চলুন।
নামিয়ে দেওয়ার সময় অফিসের গেটে নাম দেখে বলল, আপনে সাংবাদিক? আপনার অনেক সাহস!
আমি বললাম, আমি মানুষ বলেই আমার এত সাহস!
০৮. ১০. ২০২০
লাবণ্য লিপি: সিনিয়র সাংবাদিক