ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৫:১৫:০৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

জানেন তো নিয়মিত জিরা খেলে কী কী উপকার হবে?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:০৭ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ শুক্রবার

জিরা

জিরা

জিরা! সাধারণত এটি আমরা বাঙালিরা মসলা হিসেবে ব্যবহারকরি। আপনি জানেন কী শুধু মসলা নয়, শরীরের সচলতা বাড়াতেও জিরার কোনও বিকল্প হয় না। এ কারণে আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিনের ডায়েটে কোনও না কোনও ভাবে জিরাকে অনর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এখন প্রশ্ন হল, হঠাৎ করে জিরাকে এতটা গুরুত্ব দেওয়ার কারণ কী?

একাধিক গবেষণার পর জানা গেছে হজম ক্ষমতার উন্নতির পাশাপাশি নানাবিধ পেটের রোগ সারাতে এই প্রকৃতিক উপাদানটি যেমন বিশেষ ভূমিকা নেয়, তেমনি অ্যাস্থমার প্রকোপ কমাতে এবং ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও কাজে আসে। এখানেই শেষ নয়। জিরার আরও অনেক উপকারিতা আছে, যে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

১. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায় : পরিমাণ মতো মধুর সঙ্গে জিরা মিশিয়ে একটা ফেস প্যাক বানিয়ে নিন। তারপর সেটি নিয়মিত মুখে লাগাতে থাকুন। এমনটা করলে দেখবেন অল্প দিনেই ত্বকের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসবে। সেই সঙ্গে ত্বক আরও বেশি করে সুন্দর হয়ে উঠবে। এখন প্রশ্ন হল, ফেস প্যাকটি বানাবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে হাফ চামচ হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে হাফ চামচ জিরা পাউডার এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর ভাল করে সবকটি উপাদান মেখে নিয়ে মুখে লাগান। ফেস প্যাকটি ১০ মিনিট রেখে দেওয়ার পর গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ২-৩ বার এইভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলেই দেখবেন ফল মিলতে শুরু করেছে।

২. ভাবী মায়েদের জন্য উপকারি : গর্ভাবতী মহিলাদের শরীর ঠিক রাখতে জিরার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এই সময় ভাবি মায়েদের কনস্টিপেশন এবং হজমের সমস্যা হয়ে থাকে। আর যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে, জিরা এই দু ধরনের সমস্যা কমাতে দারুন উপকারে লাগে। সেই সঙ্গে মাথা ঘোরা এবং গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত আরও সব লক্ষণ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো ভাবি মায়েদের প্রতিদিন ১ গ্রাস গরম দুধে হাফ চামচ জিরা এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

৩. কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমায়: আপনি কি কনস্টিপেশন সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে আজ থেকেই জিরার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান, দেখবেন আরাম মিলবে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা বেশ কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়ে কোষ্টকাঠিন্যের মতো রোগ সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, পাইলসের কষ্ট কমাতেও জিরা দারুনভাবে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ১ চামচ জিরা ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে নিন। তারপর সেই পাউডার ১ গ্লাস জলে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। প্রসঙ্গত, জিরা পাইডার এবং জলের সঙ্গে অল্প করে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। এমনটা করলে বেশি উপকার পাবেন।

৪. চুলকে সুন্দর করে তোলে: রুক্ষ হয়ে যাওয়া চলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতেও জিরা নানাভাবে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে? এক্ষেত্রে ১ গ্লাস জলে ১ চামচ জিরা পাউডার এবং ১টা ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রনটি চুলে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। যখন দেখবেন মিশ্রনটি শুকিয়ে গেছে, তখন ভাল করে চুলটা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ১ বার এইভাবে চুলের পরিচর্যা করলেই দেখবেন হারিয়ে সৌন্দর্য ফিরে আসবে।

৫. অনিদ্রার সমস্যাকে দূর করে: যাদের রাতের বেলা ভাল করে ঘুম আসে না, তারা প্রতিদিন ঘুমনোর আগে ১ চামচ চটকানো কলার সঙ্গে হাফ চামচ জিরা পাউডার মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। এই ঘরোয়া ওষুধটি খেলে ঘুমের আর কোনও সমস্যা হবে না দেখবেন। কারণ জিরা এবং কলা একসঙ্গে খেলে মস্তিষ্কে মেলাটোনিন নামে এক ধরনের কেমিকেলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই কেমিকালটি ঘুম আসার ক্ষেত্রে দারুনভাবে সাহায্য করে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায়: জিরাতে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ ঠান্ডা লাগা এবং জ্বরের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরের প্রবেশ করা মাত্র দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে ভাইরাল ফিবার এবং ওই সংক্রান্ত নানাবিধ কষ্ট কমে যায়। জরের তাণ্ডব কমাতে ১ চামচ জিরা এবং অল্প পরিমাণ আদা, ১ গ্লাস জলে মিশিয়ে নিন প্রথমে। তারপর জলটা ফুটিয়ে নিয়ে ছেঁকে নিন। এই ছেঁকে নেওয়া জলটা দিনে ২-৩বার পান করুন। তাহলেই দেখবেন কষ্ট কমে যাবে।

৭. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: হজম ক্ষমতার উন্নতিতে জিরার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এতে উপস্থিত থাইমল নামে একটি যৌগ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো যারা হজমের রোগে ভুগছেন, তারা দিনে কম করে ৩ বার জিরা দিয়ে বানানো চা পান করুন। কয়েকদিন এমনটা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করবে। কীভাবে বানাতে হবে জিরা চা? খুব সহজ। প্রথমে ১ কাপ জলে ১ চামচ জিরা মিশিয়ে জলটা ফুটিয়ে নিন। যখন দেখবেন জলটা ফুটে গেছে তখন আঁচটা বন্ধ করে জলটা ছেঁকে নিয়ে পান করুন।