ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০২, মে ২০২৪ ১৭:১৫:৪৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

অশিমার অপূর্ণ ভালবাসার অভিশাপ, রহস্যময় পাথুরে জঙ্গল

অনু সরকার

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:২৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ শুক্রবার

অশিমার অপূর্ণ ভালবাসার অভিশাপ, রহস্যময় পাথুরে জঙ্গল

অশিমার অপূর্ণ ভালবাসার অভিশাপ, রহস্যময় পাথুরে জঙ্গল

এই বিশ্বে কত না বিস্ময় আছে, আছে অজানা কত রহস্য! কতগুলো রহস্যের সমাধান পাওয়া যায়, আবার কতগুলো জীবনভর আমাদের কাছে অমিমাংসিতই থেকে যায়।

অনেক দূর থেকে তাকালে মনে হবে বিস্তৃত ঘন জঙ্গল। শুধু পার্থক্য একটাই। রহস্যময় এ জঙ্গলের রং কালো। কালো কারণ এ জঙ্গলের গাছগুলো সব পাথর! ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছোট বড় অগণিত প্রস্তর-বৃক্ষ।

চিনের ইউনান প্রদেশের পাঁচশো বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই প্রস্তর অরণ্য।

আগে এই অঞ্চলের নাম ছিল শাইলিন। শাইলিন শব্দের অর্থই হল পাথরের জঙ্গল। ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিং থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই শাইলিন এলাকা।

গুহার মধ্যে যেমন স্ট্যালাগমাইট গড়ে ওঠে, এই প্রস্তর অরণ্য অনেকটা তেমনই দেখতে। গাছের মতোই মাটি ভেদ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি পাথর।

পুরো অরণ্যটাই চুনাপাথরের। তাই এই জঙ্গলে প্রবেশ করলে তাজা অক্সিজেনের পরিবর্তে চুনাপাথরের গন্ধ নাকে আসবে।

এই অরণ্য ৭টি অঞ্চলে বিভক্ত। জলপ্রপাত, দুটো বিশাল হ্রদ, প্রাকৃতিক গুহা এবং এই পাথরের জঙ্গল সব মিলিয়ে পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।

২০০৭ সালে এই এলাকার দুটো অংশ নাইগু প্রস্তর অরণ্য এবং সুওগেয়ি গ্রাম ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষিত হয়।

বিস্ময়কর এই ভূমিরূপ ২৭ কোটি বছরেরও বেশি প্রাচীন। চিনের কুনমিং থেকে বাসে এই স্থানে আসা যায়। প্রতি বছর দেশ বিদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক এসে ভিড় জমান এখানে। ফলে অনেক হোটেলও গড়ে উঠেছে।

কী ভাবে তৈরি হল এই প্রস্তর অরণ্য সে প্রশ্ন সকলের। এই প্রস্তর অরণ্যের সৃষ্টি নিয়ে একাধিক মতবাদ রয়েছে।

এই অঞ্চলের আদি বাসিন্দাদের কাছে এক সুন্দরীর অপূর্ণ ভালবাসার সাক্ষী এই অরণ্য।

অশিমা নামে ওই তরুণীর ভালবাসা নাকি পরিণতি পায়নি। তাকে অভিশাপ দিয়ে পাথর করে দেওয়া হয়েছিল। সেই দুঃখেই নাকি বাকি সব গাছ পাথর হয়ে যায়। তার সেই করুণ কাহিনির সাক্ষী এই প্রস্তর-অরণ্য।

তবে ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এক সময় গভীর জলাশয় ছিল এখানে। জলাশয়ের নিচে নিমজ্জিত ছিল এই পাথরগুলো। ক্রমে জলের স্তর নামতে শুরু করলে জঙ্গলের মতো পাথরগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে বায়ুর সঙ্গে ঘর্ষণে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে এ রকম আকার ধারণ করেছে সেগুলো।

প্রতি বছর ষষ্ঠ চন্দ্রমাসের ২৪ তারিখে এই এলাকার বাসিন্দারা এক বিশেষ উৎসব পালন করেন। তাদের লোকনৃত্য এবং কুস্তি পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়।

চিন ছাড়াও তুরস্কে পাথরের এমন বিস্ময়কর জঙ্গল দেখতে পাওয়া যায়। তুরস্কের কাপাডোশিয়ায় ওই পাথরের ভিতরে গুহা তৈরি করে এক সময় মানুষ বসবাস করতেন।