ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ০:২৭:০২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

জেনে রাখুন ব্রকলির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:১০ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শনিবার

জেনে রাখুন ব্রকলির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

জেনে রাখুন ব্রকলির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

বাংলাদেশের সবজি বাজারে ব্রকিল এখন একটি পরিচিত নাম। ব্রকলি মূলত শীতকালীন সবজি। ব্রকলি বা ব্রোকোলি ক্রসিফেরী গোত্রের অন্তর্ভুক্ত শীতকালীন সবজি। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট, আঁশ আছে। এই সবজি হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ব্রকলি জারণরোধী (অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট) ভিটামিন এ এবং সি সরবরাহ করে কোষের ক্ষতি রোধ করে। সাধারণত তিন ধরণের ব্রোকোলি বেশি দেখা যায়।

    
পুষ্টি : ব্রকলিতে পাওয়া যায় উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি। দিনে মাত্র ১০০ গ্রাম ব্রকলি শরীরে প্রতিদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদার ১৫০ ভাগ পূরণ হতে পারে।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালীন সবজিগুলোর মধ্যে পুষ্টিগুণে ব্রকলিই সেরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যানসার প্রতিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণে ব্রকলি বেশ আলোচনায় এসেছে।

ব্রকলিতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন, জিয়াক্সথিন, বিটা ক্যারোটিন ও ক্যারোটিনয়েডস রুটেনের মতো খুবই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ব্রকলি রান্নায় ও সালাদে যোগ করে খাওয়া যায়।

ব্রকলির স্বাস্থ্যগত উপকারিতা : ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্রকলি অনন্য। ব্রকলিতে থাকা বিটা ক্যারোটিন, এস্ট্রোজেন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। বিশেষ করে স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্রকলি অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়া প্রোস্টেট, কোলন, ফুসফুস, যকৃত ক্যান্সারের প্রতিরোধেও ব্রকলির কার্যকারিতা বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালার্জির সমস্যা ও যেকোন প্রদাহ দূর করতে ব্রকলির জুড়ি নেই। ব্রকলিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩, অ্যানজাইম। যা প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া যারা আর্থাইটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্যও ব্রকলি খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ব্রকলি ভিটামিন সি ও সেলিনিয়ামের গুণেও ভরপুর। এই উপাদানগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দেহে ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে।

ফলে সর্দি-কাশির সমস্যা কমে যায়। হাড় মজবুত রাখতে ব্রকলি খুবই কার্যকর। এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে হাড়ের জন্য খুবই ভালো। এছাড়া ব্রকলিতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ফসফরাস।

সব বয়সীদের জন্যই ব্রকলি উপকারি। তবে বাড়ন্ত শিশু ও স্তন্যদানকারী মায়ের জন্য ব্রকলির উপকারিতার শেষ নেই। ত্বক সুস্থ রাখে ব্রকলি। ব্রকলিতে থাকা ভিটামিন সি ত্বক করে ঝলমলে। যারা ত্বক সুস্থ রাখতে চান তারা নিয়মিত ব্রকলি খেতে পারেন। প্রাকৃতিকভাবেই এটি ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন কে, ফলেট ও অ্যামিনো এসিড ত্বকের জন্য বেশ ভালো।

এ ছাড়া এতে প্রচুর আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। ব্রকলিতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বয়সের ছাপ কমাতে অত্যন্ত উপকারি। শুধু তাই নয়, ত্বকের মরাকোষ, ব্রণ, দাগ দূর করতে ভূমিকা রাখে। তাই নিয়মিত ব্রকলি খাওয়া ভালো।

ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে ব্রকলি : আমাদের দেহে নানা ধরনের ক্ষতিকর উপাদান জন্ম নেয় এবং নানা রোগব্যাধির কারণ হয়। দেহের ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে ব্রকলি খুবই কার্যকর। ফলে অনেক রোগ-বালাই থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এ ছাড়া ব্রকলি হজমে সহায়তা করে, পেট ভালো রাখে।

দুর্দান্ত কিছু পুষ্টি উপাদানের কারণে সেরা সবজিগুলোর মধ্যে ব্রকলি একটি। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় ব্রকলি রাখুন।

চাষ : প্রতি শতক জায়গায় ২৫-৩০ দিন বয়সের ২০০টি চারা রোপন করে মাত্র ৫০-৬০ দিন পরই ৪০ মণ ব্রকলি উৎপাদন করা সম্ভব। ব্রকলি সাধারণত দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটিতে ভাল হয়। মাটি ভালভাবে চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হয়। মধ্য ভাদ্র-মধ্য পৌষ এর মধ্যে বীজ বপন ও চারা রোপন করতে হয়। ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা ৫০ সেন্টিমিটার দূরত্বে রোপন করতে হয়। এরপর একর প্রতি গোবর ৬ টন, ইউরিয়া ১০০ কেজি, টি এস পি ৭০ কেজি ও পটাশ ৫৫ কেজি প্রয়োগ করলে চাষ ভাল হয়।