ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ৫:০৯:৩৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ঘুরে আসুন রাজধানীর কাছেই পানাম নগর

অনু সরকার

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:২০ পিএম, ৬ মার্চ ২০২১ শনিবার

পানাম নগর

পানাম নগর

ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবছেন? জায়গাটা ধারে-কাছে হলে ভালো হয়? আপনি খুব সহজেই চলে যেতে পারেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরে। পরিবারের সকলে মিলে কাটিয়ে আসতে পারেন একটা আনন্দময় দিন।

বাংলাদেশের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শহর ‘পানাম নগর’। ঢাকা থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এই নগর অবস্থিত। পুরনো এই নগরে আছে কয়েক শতাব্দীর পুরনো অনন্য স্থাপত্যশৈলী আর কারুকার্যময় অনেক ভবন।

সোনারগাঁও পৌরসভার ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই নগর গড়ে তুলেন বাংলার বার ভূঁইয়ারা। ঈসা খাঁর আমলে পুরনো সোনারগাঁও ছিল বাংলার রাজধানী। এই সোনারগাঁওয়েরই একটি এলাকার নাম পানাম। স্থানটি পুরনো রাজ-রাজড়াদের আমলে প্রসিদ্ধ এলাকা ছিল। পরে ইংরেজ শাসনামলে এখানে অভিজাত হিন্দুদের আবাস গড়ে ওঠে। ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতিতে তৈরি এখনও পর্যন্ত টিকে থাকা ইমারতগুলো মূলত সেসময়েই তৈরি। অসাধারণ কারুকার্যময় এবং সুবিন্যস্ত একটি প্রাচীন নগরী হিসেবে পানাম এখনও সবার মন কাড়ে। এটি পৃথিবীর ১০০টি ধ্বংসপ্রায় ঐতিহাসিক শহরের মধ্যে অন্যতম। ২০০৬ সালে পানাম নগরকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বৃটিশ শাসনামল এ অঞ্চলের শিল্প-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র পানাম স্থাপত্যশৈলীতে রয়েছে তৎকালীন আধুনিকতার ছোঁয়া। দু’পাশে সারি সারি একতলা দু’তলা ভবন, মাঝ দিয়ে পথ।

পানাম নগরের পরিকল্পনায় ছিল আধুনিকতার ছোঁয়া। নগরে পানি সরবরাহের জন্য দু’পাশে ছিল (এখনও আছে) ২টি খাল ও ৫টি পুকুর। সুপেয় পানির জন্য পানাম নগরের প্রতিটি বাড়িতেই ছিল কূপ বা ইঁদারা।

এখন পানাম নগর ঘুরে তুমি দেখতে পাবে নিখুঁত নকশা কাটা পুরনো সব আধুনিক দালান কোঠা। তবে সময় প্রবাহে আর প্রয়োজনীয় যতেœর অভাবে ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পানাম নগরের সৌন্দর্য। এই অভিজাত নগরের মূল বাসিন্দারা দেশভাগের পর পানাম ত্যাগ করেন। এখন অনেকেই অস্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করছেন।

পানাম নগর তথা সোনারগাঁওয়ের পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদী। এই নদী পথেই বিলেত থেকে আসতো থানকাপড়। আর এদেশ থেকে বিদেশে যেত মসলিন।

সেই সময় এই নগরী ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের রাজধানী। তবে ইংরেজরা ধীরে ধীরে একসময় ঐতিহাসিক এ ব্যবসাকেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয়। তারা মসলিনের কারিগরদের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে পঙ্গু করে দেয় যাতে তারা মসলিন কাপড় আর না বুনতে পারে। এর ফলে ইউরোপে তৈরি কাপড়ের একচেটিয়া বাজার সৃষ্টি হয় এখানে। একই সঙ্গে এদেশীয় চাষাবাদ বন্ধ করে নীলচাষের জন্য এখানে তারা স্থাপন করে নীল কুঠি।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আপনিও ঘুরে আসতে পারো পানাম নগর আর সোনারগাঁও। জানতে পারবেন আমাদের অতীত গৌরব আর কষ্টে গাঁথা ইতিহাসের কথা। রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে বাসে বা সিএনজি স্কুটারে করে খুব সহজেই পানাম নগর যাওয়া যায়।