ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০২, মে ২০২৪ ৮:২৫:২১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

পুষ্টির অভাবে উচ্চতা কম হচ্ছে শিশুদের

ফিচার ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৪ এএম, ১৩ জুন ২০২১ রবিবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

পুষ্টির অভাবে বাংলাদেশের শিশুদের উচ্চতা কম হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে বয়সের অনুপাতে ছেলে-মেয়েদের শারিরীক গঠন ঠিকমত হচ্ছে না। এ জন্য অনেক ছেলে-মেয়েই অনেক সময় থাকছে হচ্ছে খর্বাকৃতির বা খাটো। আর এমনটা হলে প্রায়ই ওই ছেলে-মেয়েদের সামাজিক বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। যা তার মানসিক বিকাশেও প্রভাব ফেলছে। 

ছেলে-মেয়ের শরীর ঠিকমত না বাড়ার পিছনে অন্যতম কারণ পুষ্টির অভাব। পুষ্টির অভাবে শারিরীকভাবে সঠিকভাবে বেড়ে না ওঠায় ছেলে-মেয়েদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। যেমন চৌদ্দ বছর বয়সী রাইমার (ছদ্মনাম) প্রায়ই সময়ই মন খারাপ থাকে। 

দুই বোন এবং এক ভাইয়ের মধ্যে সে মেঝ। বাবা-মা দু’জনেরই শারীরিক গঠন এবং উচ্চতা ভালো। অন্য এক বোন আর ভাইয়েরও শারীরিক গঠনও ভালো। কিন্তু রাইমার বয়স অনুযায়ী উচ্চতা কম। খাটোই বলা যায়। আর তাই স্কুলের অনেকেই তাকে নানা কথা শুনতে হয়। 

আবার পাড়ায়ও তার তেমন কোন বন্ধু নেই। খেলতে গেলেই বন্ধুরা বলে তুমি তো ছোট। পারবে না। এখন আর সে তেমন বাইরেও যায় না। স্কুল শেষে প্রায়ই সময় ঘরেই বসে থাকে। আর জানালা দিয়ে অন্য বাচ্চাদের খেলা দেখে।

রাইমার মত সতের বছর বয়সী শাহীনের শারীরিক গঠনও একই। সেও তার বয়সের তুলনায় যথেষ্ট খাঁটো। এইচএসসি প্রথম বর্ষেও ছাত্র হলেও তাকে দেখে মনে হয় এখনো সে ক্লাস সিক্রের ছাত্র। স্কুল-কলেজের বন্ধুরাও তাকে নিয়ে অনেক ঠাট্টা-তামাশা করে। শুরুর দিকে মন খারাপ হলেও এখন অনেকটা মেনে নিয়েছে সে। উল্টো মাঝে মাঝে শাহীনই এখন সবার সাথে ভাব করে চলে। এ কারণে কলেজে তার অনেক বন্ধু।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট এর মতে, উচ্চতায় যে দেশের মানুষেরা এগিয়ে তাদের তুলনায় বাংলাদেশসহ মোট চারটি দেশের ছেলে-মেয়েরা নিম্নমানের পুষ্টির কারণে সাত ইঞ্চির বেশি উচ্চতা হারাচ্ছে। 

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবচেয়ে ছোট মেয়েদের (১৯ বছর বয়সী) দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম দেখা গেছে। বাকি তিনটি দেশ নেপাল, গুয়াতেমালা এবং তিমুর।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার সহযোগিতায় দ্য ইমপিরিয়াল কলেজ লন্ডনসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা ২০০ দেশের ৬৫ মিলিয়ন (৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী) অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে গবেষণাটি করেছেন। 

২০১৯ সালে সংগ্রহ করা এই তথ্যে সবচেয়ে বেশি লম্বা দেখা গেছে নেদারল্যান্ডস, মন্টেনেগ্রো, ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ডের ১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের। বিভিন্ন দেশের তুলনামূলক এই পর্যবেক্ষণে লম্বা দেশের চেয়ে খাটো দেশের কিশোর-কিশোরীদের ওজনও কম দেখা গেছে।

ফলাফলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের গড় উচ্চতা যতটুকু নেদারল্যান্ডসের ১১ বছর বয়সীদের উচ্চতা ততটুকু! 

গবেষণা প্রতিবেদনের সিনিয়র লেখক মজিদ এজাতি বলেছেন, ‘এতে বোঝা যাচ্ছে স্কুলে যাওয়ার আগে এবং স্কুলে যাওয়ার দিনগুলোতে বাচ্চাদের ওপর বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগে বড় পার্থক্য আছে। করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময়ে অনেক দরিদ্র পরিবার পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে না।

সবচেয়ে খাটোর তালিকায় বাংলাদেশের কিশোররা না থাকলেও উচ্চতা অনুযায়ী ওজনের সবচেয়ে নিম্নমানের তালিকায় তাদের দেখা গেছে। কার ওজন কত হওয়া উচিত, তার সূচককে বিএমআই বা বডি ম্যাস ইনডেক্স বলে। 

ভারত, বাংলাদেশ, তিমুর, ইথিওপিয়ার ছেলে-মেয়েদের বিএমআই সবচেয়ে কম। শুধু মেয়েদের মধ্যে জাপান এবং রোমানিয়ার কিশোরীদের সবচেয়ে কম।