ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৩৪:৪৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

পদ্মার চরে অনাবাদি জমিতে কুল চাষে বিপ্লব

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৪ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরের মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়ন। রোদ আর তপ্ত বালুর কারণে বছরের পর বছর পদ্মার চরে পাঁচ হাজার ২৮৬ হেক্টর জমি অনাবাদি ছিল।


তবে বর্তমানে এই জমিতে কম খরচে বেশি লাভের আশায় চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরে আপেল, বাউ ও থাই জাতের কুল চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছেন চাষিরা। এই জমি থেকে চলতি মৌসুমে এক কোটি টাকার কুল বিক্রির আশা করছেন তারা।

একই জমিতে পেঁয়াজ, রসুন, মসুর, গম, সরিষা, আখ, ধান, হলুদ, আদা ও শাকসবজিও চাষ হচ্ছে।

জানা যায়, পদ্মার চরে কুল চাষে আত্মনিয়োগ করেছেন এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা। পতিত জমিতে কুল চাষ করে একদিকে চাষিরা আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছেন, অন্যদিকে পুষ্টির ঘাটতি পূরণসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। কম খরচে বেশি লাভের আশায় চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরে আপেল, বাউ ও থাই জাতের কুল চাষ করে নতুন বিপ্লব ঘটিয়েছে।

পদ্মার চরের কুলচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বালুযুক্ত পদ্মার চরে একসময় অন্য ফসল করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। বর্তমানে এই পদ্মার চরে কুল চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে শফিকুল ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, জামাল উদ্দীন, সোনা মিঞা, ইউসুফ আলী, আশরাফুদৌলার মতো অনেকে। পদ্মার চরে এখন সোনার ফসল ফলানো যায়; তা প্রমাণ করছেন এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা।

কুলচাষি শফিকুল ইসলাম ছানা বলেন, আমি পদ্মার চরে ১০৪ বিঘা জমিতে বরই চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। তবে বিঘাপ্রতি গড় উৎপাদন আশা করছি ১৩০-১৫০ মণ। চলতি মৌসুমে প্রায় এক কোটি টাকার কুলবরই বিক্রির আশা করছি।

তিনি বলেন, মৌসুমে প্রথম দিকে আপেল কুলের বাজার ছিল প্রতি মণ এক হাজার ৫০০ টাকা। মাঝামাঝি সময়ে তা কমে এক হাজার ২০০ টাকায়। তবে বাউ ও থাই কুলবরই বাজার ভালো আছে।

গড়গড়ি গ্রামের জামাল উদ্দীন ৪০ বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছেন বলেন জানান তিনি।

বাউসা গ্রামের মুনজু সরকার সমতল জমিতে ২০ বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছেন। তিনি এমএ পাস করে কৃষিকে পেশা হিসেবে নিয়ে লাভবান হচ্ছেন বলে জানান।

আরেক কুলচাষি সোনা মিঞা বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সফল হয়েছি। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানকার কুল বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

উপজেলার বাউসা সরকারপাড়া গ্রামের মিঠুন আলী বলেন, আমি ধান, পেঁপে, কলা ও গরুর খামারের পাশাপাশি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে গত মৌসুমে মাত্র ১৬ শতাংশ জমিতে আপেল কুল চাষ করেছি। এই মৌসুমে প্রায় অর্ধ লাখ টাকার কুল বিক্রির আশা করছি। তবে আমার কুল বাগান দেখে এলাকার অনেকে কুলচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মার চরে চাষ হয়েছে ৭০ ভাগ। তবে বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি আর্থিকভাবে কুল চাষেও আগ্রহী হচ্ছে চাষিরা। কুল চাষের গবেষণা চালিয়ে উন্নত জাত সৃষ্টি করে আবাদ করলে আমের মতো বিদেশে রপ্তানি করে অর্থনৈতিকভাবে চাষিদের স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করব।