ঢাকা, শনিবার ০৪, মে ২০২৪ ০:০৯:১৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

কোরবানির হাটে যে ৫ জাতের গরু বেশি জনপ্রিয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ৮ জুলাই ২০২২ শুক্রবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। গরু-ছাগল বেচাকেনা বাড়ছে। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন হাট মাতাচ্ছে শাকিব খান, জায়েদ খান, রোমিও, রাজা ও বাদশাসহ বাহারি নামের বেশকিছু গরু। সুঠামদেহী ও স্বাস্থ্যবান এবং আকর্ষণীয় নাম থাকায় গরুগুলো সবার দৃষ্টি কাড়ছে।
দেশের কোরবানির হাটে নানা ধরনের গরু থাকলেও বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে কয়েকটি জাত মানুষের কাছে বেশি জনপ্রিয়। বিশেষ করে বাড়িতে লালন-পালন করা দেশি গরুর কদর ক্রেতাদের মাঝে সব সময় থাকে। কারণ এই গরু অনেকের বাজেটের মধ্যে যেমন থাকে, তেমন মাংস সুস্বাদু।

 
প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এবং খামারিরা এবারের কোরবানির হাটে পাঁচটি জনপ্রিয় জাতের গরুর কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো-

শাহীওয়াল গরু

পাকিস্তানের সিন্ধুতে এই গরুর জন্ম। এরা ধীর ও শান্ত প্রকৃতির। শাহীওয়াল জাতের গরু আকারে বেশ লম্বা এবং মোটাসোটা ভারী দেহ। সাধারণত এ জাতের গরুর দেহের রং ফ্যাকাসে লাল। তবে কখনো গাঢ় লাল বা লালের মাঝে সাদা ও কালো ছাপযুক্ত হয়। এসব গরুর সর্বনিম্ন দাম এক লাখের বেশি।

শাহীওয়াল জাতের গাভীর ওজন ৪৫০-৫৫০ কেজি এবং ষাঁড়ের ওজন ৬০০-১০০০ কেজি। জন্মকালে বাছুরের ওজন ২২-২৮ কেজি। মাথা প্রশস্ত, পা ছোট, শিং ছোট কিন্তু মোটা। গলকম্বল বৃহদাকার যা ঝুলে থাকে। শাহীওয়াল জাতের গরুর ত্বক পাতলা ও শিথিল।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপপরিচালক ডা. মো. শাহিনুর আলম বলেন এই জাতের গরু বহুদিন ধরে বাংলাদেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে। দেখতে অনেকটা লাল রঙের, আর বেশ বড়।

হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান গরু

হোলস্টাইন অর্থ সাদাকালো ডোরাকাটা আর স্থানের নাম ফ্রিসল্যান্ডের সঙ্গে মিলিয়ে এই গরুর নাম হয় হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান। বাভারিয়া (বর্তমান জার্মানি) এবং ফ্রিসল্যান্ড (বর্তমান নর্থ হল্যান্ড) এই গরুর আদি উৎস স্থান। এ গরুকে তাদের সাদা-কালো রঙের কারণে সহজেই চেনা যায়।

ফ্রিজিয়ান জাতের গরু মাংসের জন্য পালা হয় না। কিন্তু তারপরও বাজারে মাংসের সরবরাহের বিরাট অংশই ফ্রিজিয়ান গরুর। কারণ এটি আকারে বেশ বড়। বিশ্বে যত গরু পালন করা হয়, তার ৫০ শতাংশের বেশি ফ্রিজিয়ান জাতের। একটা হোলস্টাইন জাতের পূর্ণ বয়স্ক ষাঁড়ের ওজন ১১০০ কেজি এবং উচ্চতা ৫৫- ৭০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।

ব্রাহমা গরু

বাংলাদেশে যেসব ব্রাহমা জাতের গরু রয়েছে তার প্রায় সবই কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রজনন করা। এগুলো অনেকটাই দেশি গরুর মতো, কিন্তু আকৃতিতে বেশ বড় হয়। এই গরুর মাংসের স্বাদ দেশি গরুর মতো। এর গায়ে চর্বি কম হয়, যে কারণে পুষ্টিগুণ বেশি। দুধের জন্য এই গরুর তেমন খ্যাতি নেই। প্রাণী পুষ্টি ও জেনেটিক্স বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাহমা গরুর আদি নিবাস ছিল ভারতে।

সাধারণত একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহমা জাতের ষাঁড়ের ওজন ৮০০ কেজি থেকে ১০০০ কেজির বেশি হতে পারে, আর একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহমা জাতের গরুর ওজন হবে ৫০০কেজি থেকে ১০০০ কেজি। কোরবানির সময় বাজারে অস্বাভাবিক দাম হাঁকানো গরুগুলো মূলত এই ব্রাহমা জাতেরই গরু।

মীরকাদিম

মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম জাতের গরু দেখতে ধবধবে সাদা। কিছুটা লালচে আর আকর্ষণীয় বাঁকা শিং। বাজারে এই গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে। তবে চাহিদার তুলনায় এই জাতের গরুর সরবরাহ কমে গেছে।

এস এ সি এগ্রোর নির্বাহী পরিচালক মিরাজ আহমেদ বলেন এই গরুর দাম এক লক্ষ ২০ হাজার থেকে শুরু হয়ে আড়াই লক্ষ পর্যন্ত হয়। মীরকাদিমের গরুর মাংসে আঁশ কম থাকে, এর হাড় চিকন হয়। এই গরুর মাংস হয় নরম ও তেলতেলে।

রেড চিটাগং ক্যাটেল

রেড চিটাগাং ক্যাটেলের প্রধান চারণস্থল চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম। এছাড়াও এটি কুমিল্লা ও নোয়াখালিতে পাওয়া যায়। দেখতে লাল বর্ণের। দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩০ সে.মি. এবং উচ্চতা প্রায় ২৪ সে.মি. হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক ষাঁড়ের ওজন প্রায় ২০০ থেকে ৪০০ কেজি হয়ে থাকে।

গরুর ওজনের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ খাদ্য উপযোগী মাংস। গরুর এই বিশেষ প্রজাতি জনপ্রিয় হওয়ার এক বিশেষ কারণ হল, এর মাংস খুবই সুস্বাদু।

খামারি মিরাজ আহমেদ বলেন,আরসিসি গরু দেখতে সুন্দর, কোরবানির হাটে সহজেই চোখে পরার মতো এই গরুর প্রজাতি।