রবী ঠাকুর আমার আদর্শ : মীনু হক
সালেহীন বাবু
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১১:২৫ পিএম, ২ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১০:৫৭ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৮ বুধবার
বাংলাদেশের নৃত্যজগতের দিকপাল মীনু হক। দীর্ঘদিন নৃত্যকে সঙ্গী করে পথ চলছেন নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মীনু হক (মীনু বিল্লাহ)। চলতি বছর তিনি ভূষিত হয়েছেন একুশে পদকে। তার এই প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা বর্ণিল আয়োজনে তাকে সংবর্ধনা জানিয়েছে।
`আজি এ সন্ধ্যার ধ্রুবতারা,/তোমার আলোয় আমরাও/হবো আলোকিত` প্রতিপাদ্যে রোববার অনুষ্ঠিত হয় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নৃত্যশিল্পী মীনু হকের হাতে ক্রেষ্ট তুলে দেন প্রবীণ নৃত্যশিল্পী গোলাম মোস্তফা। উত্তরীয় পরিয়ে দেন নৃত্য ও অভিনয়শিল্পী লায়লা হাসান।
সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন মিনু হক। তার বেড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক পরিবেশে। মাত্র ৫ বছর বয়স থেকেই সারা বাসাজুড়ে নেচে বেড়াতেন। কখনও তবলার তালে, কখনও নজরুল, রবীন্দ্রসঙ্গীতের গানে। সেই ছোটবেলায় মিনুর এ আচরণ দেখে হতবাক সবাই। বিশেষ করে মিনুর বাবা-মা মেয়ের এমন কীর্তি দেখে খুব খুশি হতেন। তাদের বুঝতে বাকী ছিলো না মেয়ে বড় হয়ে অনেক বড় নৃত্যাশিল্পী হবে।
পাঁচ ভাই ও তিন বোনের বিশাল পরিবারে বড় হয়েছেন মিনু। সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে এ গুণী শিল্পী বলেন, আমি যে সময় নাচতাম সে সময় এত টেলিভিশন চ্যানেল ছিল না। সে সময় জীবন ছিলো সাদা-কালো। প্রথমবারের মত টিভি দেখলাম ১৯৬৪ সালে। সে সময় পেশাগত কোনো নৃত্যশিল্পী ছিল না। আমি যখন কিশোরী ছিলাম তখন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রোগ্রামে নাচতাম।
মিনু হক বলেন, আমার শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম পাশের বাড়ির দুলাল তালুকদারকে। আমার পরিবারেরই অংশ ছিলেন তিনি।
১৯৬৭ সালে বুলবুল একাডেমী অফ পাইন আর্টস (বাফা) এ যোগ দেন মীনু হক। শুরু হয় নাচের জগতে পুরোপুরি পথচলা। ১৯৭৭ সালে ফিজিওলজি বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেন। ১৯৯৭ সালে গড়ে তোলেন ‘পল্লবী’ নামে নাচের প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
নাচের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মীনু হকের প্রথম অনুপ্রেরণা তার বাবা-মা। বিয়ের পর স্বামী শাহাদুল হকও তার নাচের ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন বেশ। এমনকি তার সন্তানরাও তাকে নাচের ব্যাপারে আগ্রহ যোগায়।
শিল্পী বলেন, আমি শুকরিয়া করি, আমার আশেপাশের সবাই আমার শুভাকাঙ্খি। তারা আমার নাচের ব্যাপারে সবসময় উৎসাহিত করেছেন।
একজন সফল নৃত্যশিল্পী হিসেব মীনু হক মনে করেন, জীবনে সফলতার জন্য সেরা সুযোগটির জন্য বসে না থেকে হাতের কাছে যে সুযোগ থাকে তাকে কাজে লাগালে জীবনে সফলতা আসবেই। সেক্ষেত্রে সততা অবশ্যই থাকতে হবে। জীবন পথে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত না থেকে অপরের কল্যাণে ব্যয় করাটাই শ্রেয়।
মীনু হকের আদর্শ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে দেশকে সবার আগে ভালোবাসতে হবে বলে মনে করেন এ প্রবীণ নৃত্যশিল্পী। তাই তো এখনও দেশের সংস্কৃতিকে লালন করে যাচ্ছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তা লালন করে যাবেন এ গুণী শিল্পী।
