ঢাকা, মঙ্গলবার ০৭, মে ২০২৪ ২:১১:৫৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

রমজান: আজ রহমতের প্রথম দিন

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৫৫ এএম, ২৪ মার্চ ২০২৩ শুক্রবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মাহে রমজানের আজ শুক্রবার প্রথম দিন। আজ থেকে শুরু হলো রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস পবিত্র রমজান। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও মহান আল্লাহর নির্দেশমত পবিত্র রোজা পালন শুরু করেছেন। গতকাল সন্ধ্যায় পশ্চিমাকাশে আল-হেলাল তথা রুপালি চাঁদ হেসে ওঠার মধ্য দিয়ে পুণ্যময় মাহে রমজানের আগমনী বার্তা ঘোষিত হয় দেশের ঘরে ঘরে।

হিজরি সনের নবম মাস রমজানের আজ প্রথম দিন। নানা বৈশিষ্ট্য, ফজিলত, তাত্পর্য ও শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর মোবারক এ মাসটির আগমনে মুমিন-মুসলমানের জীবনে নেমে আসে সংযম ও পুণ্যের উত্সব। রমজানের দিন-রাতকে আল্লাহ তায়ালা খায়ের ও বরকতে পূর্ণ করে রেখেছেন। রমজান শুধু একটি মাসই নয়, গোটা বছরের তাপকেন্দ্র। হাদিস শরীফের ভাষ্য অনুযায়ী, এ মাস থেকে মুমিন-মুসলমানরা গোটা বছরের তাকওয়া-তাহারাতের সঞ্চয় গ্রহণ করে থাকেন।

হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে রমজান মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা বা রোজা রাখার বিধান জারি হয়। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খানাপিনা ও বৈধ জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে বিরত থাকার নামই সিয়াম সাধনা বা রোজা। ইসলামের পঞ্চভিত্তির অন্যতম।

রমজান সিয়াম সাধনার মাস। এ মাসেই আল্লাহ তায়ালা মানবতার মুক্তির সনদ, সর্বশেষ মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ করেন। এ মাসের মধ্যে লাইলাতুল কদর নিহিত রয়েছে। যে রাতের ইবাদত হাজার রাত ইবাদতের চেয়েও উত্তম। 

রমজান মাস মুসলিম জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এ মাস সব মাসের সেরা। আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভের সর্বোত্তম মাস হলো রমজান। তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জনের সেরা সুযোগ এ মাসেই ঘটে। আল্লাহ তায়ালা তাকওয়া অর্জনের নিমিত্তেই এ মাসের রোজাকে ফরজ করে দিয়েছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন : ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর সিয়াম সাধনা ফরজ করা হয়েছে যেমনিভাবে ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সূরা আল বাকারাহ : ১৮৩)।

আল্লাহ তায়ালা রোজার প্রতিদান নিজেই দান করবেন। রমজান মাসকে সওয়াবের মৌসুমও বলা চলে। ভালো কাজ করলেই অন্য মাসের চেয়ে বেশিগুণ সওয়াব পাওয়া যায়। অন্য মাসের ফরজের সওয়াব মিলে নফলে। দান সদকায় সওয়াব সত্তর গুণ। রাসুল (সা.) এই মাসে ব্যাপকহারে দান করতেন। কাউকে ইফতার করালে ওই রোজাদারের মতো সওয়াব দেয়া হয়। সওয়াব তথা প্রতিদান কামানোর এ এক মহা সুযোগ।

রোজার মাধ্যমে বান্দা আত্মশুদ্ধি অর্জন করে। এক মাস রোজা রেখে বাকি এগারো মাস নিজেকে পাপমুক্ত রাখার সংকল্প গ্রহণ করেন মুসলমানরা। রোজা মানুষকে গরিব-দুঃখীর কষ্ট অনুধাবনে সহায়তা করে। একজন রোজাদার যখন সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকেন, তখন তিনি বাস্তবিকই অনুভব করেন অনাহারে থাকা গরিব মানুষের জীবন যন্ত্রণা। তাই একজন রোজাদার রোজার মাধ্যমে সহমর্মিতা ও সহনশীলতার শিক্ষা লাভ করেন। রোজা মানুষকে চরম ধৈর্য শিক্ষা দেয়।

রোজা মানুষকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতা সাধনের শিক্ষা দেয়। পরিমিত আহার-নিদ্রা করে সুস্থ জীবনযাপনের শিক্ষা দেয়। শিক্ষা দেয় কঠোর পরিশ্রমের। সারাদিন রোজা আবার রাতে তারাবি ও তাহাজ্জুদ। সিয়াম-কিয়ামের এই কঠিন প্রশিক্ষণে মানুষ হতে পারে ভদ্র ও সুশীল।

রোজা মানুষকে সুশৃঙ্খল হতে সাহায্য করে। মানবের মধ্যে যত খারাপ চরিত্র আছে তা ধুয়ে-মুছে ফেলে এই রোজা। যে ব্যক্তি রোজা রাখেন তিনি কখনও অন্যকে কষ্ট দিতে পারেন না। তিনি মিথ্যা কথা বলতে পারেন না। পারেন না কোনো হারাম কাজ করতে। 

মাহে রমজানের প্রথম দিনের প্রথম প্রহর থেকে মাসের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যথাযথ চেতনা ও নীতি অনুসরণ করে গোনাহ মাফ ও পুণ্য লাভের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য ।