নরওয়ে : অভিবাসীদের সচেতনতায় ধর্ষণ প্রতিরোধ ক্লাস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০১:২৪ এএম, ৮ জুন ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০২:২৪ এএম, ১৪ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার
ফাইন ছবি
পাশ্চাত্যের আধুনিক এক দেশের নাম নরওয়ে। দেশটিতে মোট জনসংখ্যা ৫০ লাখ। যার মধ্যে ৪ লাখ এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা অভিবাসী। এই চার লাখের বেশি অভিবাসীকে জায়গা দিয়েছে নরওয়ে। তবে এখানের অত্যাধুনিক জীবনযাত্রার সাথে এ অভিবাসীরা নিজেদের খাপ খাওয়াতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন তারা। যে কারণে নরওয়ের মতো একটি উদার পশ্চিমা সমাজে এসে নতুনভাবে জীবন শুরু করা তাদের অনেকের জন্য এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তাই তাদের এ উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে এসেছে সে দেশের বেশ কিছু মানুষ। তারা বিশেষ কালচারাল কোডিং ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে যেখানে এ অধিবাসীরা পূর্ণাঙ্গভাবে সব বিষয়ে সহায়তার পাবে।
এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মার্গারেট বার্গ। তিনি বলেন, `এই কোর্সে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তার জন্য একদল নারীকে একতাবদ্ধ থাকার বিষয়টিকে। আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা। কিন্তু ভিন্ন এক সংস্কৃতির মাঝে কীভাবে শিশুদের বড় করে তুলতে হয় সে বিষয়েও তাদের সচেতন করা হয়।
মার্গারেট বার্গ আরো বলেন, এটা বেশ ভালো কাজ করছে। এই কোর্সের শেষে তাদের কাছে প্রশ্ন থাকে যে, অভিভাবক হিসেবে তাদের সবচেয়ে বেশি হতাশ করবে কোন বিষয়টি? যদি আপনার মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয় সেটি ? নাকি-যদি আপনার ছেলেটি কাউকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়, সেটি? অনেক আলাপ আলোচনার পর আমরা যে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাই সেটি হলো, এমন ক্ষেত্রে মেয়েটি হয় ঘটনার শিকার অর্থাৎ ভুক্তভোগী। কিন্তু ছেলে সন্তানটি যদি হামলাকারী হয় সেটি বাবা-মার জন্য বেশি হতাশাজনক।
ইথিওপিয়া থেকে আসা অভিবাসী ওয়ারকিয়ে বলেন, আজ আমি জানতে পারলাম যে আমার সঙ্গে কোনো কিছু ঘটলে কোথায়, কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সেইসঙ্গে কেউ যৌন হয়রানি কিংবা ধর্ষণের শিকার হলে তাকে কীভাবে সাহায্য করতে হবে, জানলাম। এই ইস্যুতে এখন আমিও পারবো অন্য কাউকে শেখাতে।`
চার বছর আগে সিরিয়া থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছেন মায়সাম এবং মোহাম্মদ। ভালো চাকরি জুটেছে তাদের, সেইসঙ্গে বেশকিছু নরওয়েজিয়ান বন্ধু হয়েছে।
মায়সাম বলেন, `যখন আমরা নরওয়েতে চলে এলাম, তখন এখানকার সরকারের কাছ থেকে বেশ ভালো সহায়তা পেয়েছি। দেশটি সম্পর্কে এবং এখানকার ভাষা সম্পর্কে বেশকিছু কোর্স করার সুযোগ হয়েছে।`
এই সিরীয় নারী অভিবাসী মনে করেন, এখানে যে ধরনের কোর্স হচ্ছে, মেয়েদের এ ধরনের সুযোগ দরকার যাতে তারা সহিংসতা এবং যৌন সহিংসতার বিষয়ে আরো জানতে পারে।
মানবাধিকার বিশ্লেষকগণ মনে করেন এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৪ লাখ অধিবাসী আধুনিক দেশে থাকার জ্ঞান লাভ করবে। বিশেষ করে নারীরা অন্ধকার জগত সম্পর্কে ধারনা পাবেন। যা তাদের সব ধরনের অনাকাঙ্খিত বিষয় থেকে সতর্ক ও বিপদমুক্ত রাখবে।
