গুমাই বিলে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সোনালি ধান
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০৩ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৩ সোমবার
সংগৃহীত ছবি
কাক ডাকা কুয়াশা মোড়ানো ভোরে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সারি সারি কৃষকের দল। কেউ ধান কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন। আবার কেউ সেই আঁটি বাঁধা পাকা ধান ঘরে তুলতে কাঁধে বয়ে ছুঁটছেন বিলের পর বিল। চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত গুমাই বিলের এখন নিত্যদিনের চিত্র এটি। এই বিলে ছয়টি ইউনিয়নের পঞ্চাশটিরও বেশি গ্রামের কৃষকের আবাদ করা আমন কাটার উৎসব শুরু হয়েছে।
বাতাসে দোল খাওয়া পাকা ধানের গন্ধে বিমোহিত কৃষক। সোনালী আমনে ভরেছে মাঠ, হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে আজ। চোখে, মুখে নেই ক্লান্তির ছাপ। ধানে ধান লেগে শিন শিন শব্দ মনকে করছে প্রাণবন্ত। পাকা ধানের শব্দের সাথে তাল মিলিয়ে ধান কেটে চলেছে কৃষক।- এমন দৃশ্য দেখা গেছে রাঙ্গুনিয়া গুমাইবিলে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গুমাইবিলে ৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। বন্যায় ৬০০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রায় ১০ হেক্টর পাকা-আধাপাকা জমির ধান হেলে গেছে। হেক্টর প্রতি ৫.২ থেকে ৫.৪ টন ফলন পাওয়া গেছে। যেসব ধান পেকেছে, সেগুলো কাটা শুরু হয়েছে। ধান কাটতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য কৃষকদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। এই মেশিনে এক কানি জমির ধান কাটতে ব্যয় হয় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। আর শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা।
মোকাররম মিয়া নামের এক কৃষক বলেন, ৮ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। ব্রি-ধান ৮৭ জাতের এক একর জমির ধান কাটা হয়েছে। হেক্টর প্রতি ৫.৫ টন ধান পাওয়া গেছে।
জামান নামের এক কৃষক বলেন, ধান কাটার জন্য শ্রমিকরা বেশি মজুরি চায়। প্রতি কানি (২০ গন্ডা) জমির ধান কাটতে দিতে হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ধান কাটার এ মৌসুমে নেত্রকোনা, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, রংপুর, সাতকানিয়া, বাঁশখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের শ্রমিকেরা এখানে আসেন।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, গুমাইবিলে বন্যার কারণে কিছু আমন ধান পাকতে একটু দেরি হলেও বেশিরভাগ আমন পাকছে। বন্যার কারণে গুমাই বিলে কিছু অংশ বিপর্যয় হয়েছে। দ্বিতীয়বার আমন রোপণ করায় সেই আমন পাকতে সময় নিচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভাতে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ বছর রাঙ্গুনিয়ায় ১৫ হাজার ৪শ ৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।