অসাধারণ নানজীবার সফলতার গল্প
ফিচার ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৭:৫৬ পিএম, ৪ জুলাই ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ১২:১১ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৮ সোমবার
নানজীবা খান, একাধারে একজন ট্রেইনি পাইলট, সাংবাদিক, পরিচালক, উপস্থাপক, লেখক, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর, বিএনসিসি ক্যাডেট অ্যাম্বাসেডর, ইউনিসেফের তরুণ প্রতিনিধি এবং বিতার্কিক। সম্প্রতি তিনি নেপালে বাংলাদেশ ইউনিসেফের প্রতিনিধি হিসেবে ইউনিসেফ দক্ষিণ এশিয়া আয়োজিত ‘তরুণ প্রজন্মের উন্নয়ন’ বিষয়ক তিন দিনের সেমিনারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর পক্ষ থেকে এসব দেশের সমস্যা ও সেগুলোর সমাধানের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তবে এটিই প্রথম নয়। ২০১৭ সালেও তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিএনসিসি ক্যাডেট অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ভারতে ১১টি দেশের সামনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে এবারের অভিজ্ঞতা আগেরবারের চাইতে অনেকটাই ভিন্ন। কারণ এবার তিনি বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে গোটা দেশকে তুলে ধরেছেন ইউনেস্কো, ইউএন, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য প্রতিনিধিদের সামনে।
নানজীবার ভাষায়, ‘এটি আমার জন্য সত্যিই খুব বড় সম্মান সে শুধু দেশ নয় বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার পক্ষ থেকে প্রেজেন্টেশন দেই আমি। আমি দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ বাকি দেশগুলোর সকল সমস্যা লিপিবদ্ধ করে দক্ষিণ এশিয়ার সমস্যা ও সেগুলোর সমাধানের পরিকল্পনা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, আমি যতবারই ‘বাংলাদেশ’ নামটা উচ্চারণ করছিলাম ততবারই আমার মনে হচ্ছিল এত গর্বিত আমি আগে কখনো হইনি।
নানজীবা খান বলেন, আমি যখন নারী উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছিলাম আমার মনে হচ্ছিল যে আমি মিথ্যা বলছি না তো! কারণ আমার সাথে পাকিস্তানের একজন মেয়ে ছিল। আমি যখন পাকিস্তানের অবস্থা তুলে ধরছিলাম, বিশেষ করে নারীদের ওপর নির্যাতন, শারীরিক নিপীড়ন ও অসম্মানের কথা তখন আমি অনেক কষ্টে চোখের পানি আটকে রেখেছিলাম’।
মেধাবী নানজীবার মেধার প্রকাশ পেয়েছিল ছোটবেলা থেকেই। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মায়ের হাত ধরে কিশলয় কচিকাঁচার মেলায় ছবি আঁকা ও আবৃত্তি শিখতে গিয়েছিলেন। ২০০৭ সালে জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতা জয়নুল কামরুল ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন পেন্টিং কম্পিটিশন। জীবনের প্রথম এই অর্জনই ছিল আন্তর্জাতিক। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘কাগজ কেটে ছবি আঁকি` অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মিডিয়ার জীবন শুরু করেন তিনি।
মাত্র ১৩ বছর বয়সেই জীবনের প্রথম স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচিত্র `কেয়ারলেস` পরিচালনা করেন। জীবনের প্রথম প্রামাণ্য চিত্র `সাদা-কালো` পরিচালনার জন্য `ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড` অর্জন করেন। একাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন দায়িত্ব পালন করেছেন ক্যামব্রিয়ান ডিবেটিং সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। স্কুল ও কলেজ জীবনে বিতার্কিক হিসেবে অর্জন করেছেন বেশ কিছু জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার। পেয়েছেন উপস্থিত ইংরেজি বক্তৃতায় বিএনসিসি ও ভারতেশ্বরী হোমসের প্রথম পুরস্কার।
নানজীবা খান বর্তমানে অ্যারিরাং ফ্লাইং স্কুলে `ট্রেইনি পাইলট` হিসেবে অধ্যয়ন করছেন। এছাড় তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম (হ্যালো)-এর সাংবাদিক, বিটিভির নিয়মিত উপস্থাপক, ব্রিটিশ আমেরিকান রিসোর্স সেন্টারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন।
প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে পেয়েছেন ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড। গত বছর বই মেলায় অন্বেষা প্রকাশন থেকে তার লেখা প্রথম বই `অটিস্টিক শিশুরা কেমন হয়` প্রকাশিত হয়। সব দিক দিয়ে গুণান্বিতা নানজীবার স্বপ্ন এখন আকাশ ছোঁয়ার।
