ঢাকা, শুক্রবার ০৩, মে ২০২৪ ০:২৫:০২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

শুভ জন্মদিন সাবিনা ইয়াসমিন

সালেহীন বাবু

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ০৮:৪৫ পিএম, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:৩২ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার

তিনি  উপমহাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তি  সঙ্গীত শিল্পী। বাংলাদেশের গানের পাখি। তার কণ্ঠে অসংখ্য গান শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে, কালজয়ী হয়েছে। অডিও এবং চলচ্চিত্র- দুই ভুবনের গানেই তার গ্রহণযোগ্যতা আকাশ ছোঁয়া। চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকে সাবিনা ইয়াসমিন বিস্ময়কর এক সফল নাম।

 

আজ প্রিয় এই শিল্পীর জন্মদিন। ১৯৫৪ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। দিনটিকে উপলক্ষ করে সাবিনা ইয়াসমিনের পরিবার, বন্ধু-স্বজনেরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন  সঙ্গীতাঙ্গনের মানুষেরা। সেইসঙ্গে ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবিনার ভক্ত-অনুরাগীরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে স্ট্যাটাস-ছবি পোস্ট করেছেন।

 

এবারের জন্মদিনে সাবিনা ইয়াসমিন আছেন সিঙ্গাপুরে। সেখানে তিনি তার প্রিয় বান্ধবীদের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করবেন এবং বেশ কটা দিন নিজের মতো করেই সময় কাটাবেন। সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, জন্মদিন এলেই আব্বা আম্মা এবং আমার বোনদের খুব মিস করি। কিন্তু তারপর সবার ভালোবাসা পেয়ে আমি সে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি। দেশ বিদেশ থেকে অনেকেই শুভেচ্ছা জানান। তবে এবার জন্মদিনে আমার বান্ধবী মিলিয়া, বাবলী, রীতাসহ আরও অন্যদের সঙ্গে কাটবে বলে ভীষণ ভালো লাগছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

 

জন্মদিন প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, জন্মদিনটা সব সময়ই আমার কাছে খুব ভালো লাগার। কিন্তু বয়স বাড়ছে এ বিষয়টি যখন মনে পড়ে তখন মন খারাপ হয়ে যায়। তারপরও এখনো বেশ ভালো আছি, সুস্থ আছি এটাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন। 

 

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে সাবিনা ইয়াসমিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা ও দোয়ায় তিনি আবার সুস্থ হয়ে সবার মাঝে ফিরে আসেন।

 

সাবিনা ইয়াসমিন সাতক্ষীরার সন্তান। বাবার নাম লুতফর রহমান ও মা বেগম মৌলুদা খাতুন। তার ৫ বোনের মাঝে ৪ বোনই গান করেছেন। তারা হলেন ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিন এবং সাবিনা ইয়াসমিন। দাম্পত্য জীবনে সাবিনা ইয়াসমিন এক কন্যা ফাইরুজ ইয়াসমিন ও এক পুত্র শ্রাবণের জননী।

 

বড় বোন প্রয়াত ফরিদা ইয়াসমিন যখন গান দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে তখন ছোট্ট সাবিনাও উপস্থিত থাকতেন। পরবর্তীতে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে একটানা ১৩ বছর তালিম নিয়েছেন। মাত্র ৭ বছর বয়সে স্টেজ প্রোগ্রামে অংশ নেন। ছোটদের সংগঠন খেলাঘরের সদস্য হিসেবে রেডিও ও টেলিভিশনে গান গান নিয়মিত।

 

প্রয়াত বরেণ্য সুরকার- সঙ্গীত পরিচালক রবিন ঘোষের সঙ্গীত পরিচালনায় এহতেশাম পরিচালিত নতুন সুর সিনেমাতে ১৯৬২ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম গান করেন।  ১৯৬৭ সালে আমজাদ হোসেন ও নূরুল হক বাচ্চু পরিচালিত আগুন নিয়ে খেলা সিনেমাতে আলতাফ মাহমুদের  সঙ্গীত পরিচালনায় মধু জোছনা দীপালি গানটি গাওয়ার মধ্য দিয়ে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বরেণ্য এই  সঙ্গীত শিল্পী ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পদকসহ সর্বোচ্চ ১৩ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে প্রমোদকার (খান আতাউর রহমানের ছদ্মনাম) পরিচালিত সুজন সখী সিনেমাতে গান গাওয়ার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

 

এরপর আমজাদ হোসেনের গোলাপী এখন ট্রেনে, সুন্দরী, কসাই, চাষী নজরুল ইসলামের চন্দ্রনাথ, মইনুল হোসেনের প্রেমিক, বুলবুল আহমেদের রাজলক্ষী শ্রীকান্ত , আমজাদ হোসেনের দুই জীবন, কাজী হায়াৎেএর দাঙ্গা, মতিন রহমানের রাধা কৃষ্ণ, মোহাম্মদ হোসেন’র আজ গায়ে হলুদ ও চাষী নজরুল ইসলামের দেবদাস চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

 

দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে ১৬ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন বাংলা গানের এই নক্ষত্র। আজ তার  জন্মদিনে রইল প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।