শীতের শেষে গাছের বাড়তি যত্নে যা করবেন
লাইফস্টাইল ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০৯ এএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শনিবার
ফাইল ছবি
সেই কবে বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু এটা আবিষ্কার করেছিলেন যে,প্রাণ আছে উদ্ভিদেরও। তাইতো মানুষের মতো উদ্ভিদেরও রয়েছে অনুভূতি। আর সে কারণেই বিশেষ বিশেষ সময়ে মানুষের মতো গাছেরও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়।
শীত যাই যাই করেও যাচ্ছে না। বসন্ত চলে এলেও রাজধানীর বাইরে একনও ব্যাপক শীত অনুভূত হয়। শীতের এ সময়টাতে আমরা মানুষেরা নিজেদের ত্বকের যত্নে কতো কিছুই না করে থাকি অথচ গাছেরও যে জীবন আছে আর তার জন্যে যে যত্নের প্রয়োজন, সেই কথাটা যেন আমরা বেমালুম ভুলেই যাই! শীতের সময় চারপাশের প্রকৃতি দ্রুত বদলে যায় তাই এ সময়ে গাছর জন্য দরকার হয় অনেক বেশি বাড়তি যত্নের।
মাটিতে লাগানো গাছের জন্যে একটু কম যত্নের প্রয়োজন হলেও বারান্দায়, বাসার ছাদে কিংবা বসার ঘরের টবে লাগানো গাছের দিকে একটু বাড়তি নজর দিতে হবে এই সময়টাতে।
শীতে গাছের যত্নে যা যা করণীয়:
অনেক পশুপাখির মতো ঘরে লাগানো গাছপালাও সাধারণত শীতের সময়টা কাটায় ঘুমিয়ে। তবে আমাদের দেশে কম শীত পড়ে বলেই এখানকার বাড়িতে লাগানো গাছগুলো পুরোপুরি শীতনিদ্রায় যায় না। তবুও শীতকালে এসব গাছের খাবারের দরকার গরমের তুলনায় অনেক কম হয়। গাছে গরমের সময় যতটা পানি দিতে হয়, শীতে দিতে হয় তার থেকে অনেক কম। অবশ্য গাছে কদিন পরপর পানি দিতে হবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করবে বাড়ির ভেতরকার আবহাওয়া কতটা আর্দ্র তার ওপর। যদি ঘরের আর্দ্রতা বেশি হয়ে থাকে তবে গাছগুলোতে একবার পানি দিলেই সেটা দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত চলবে। আর বাসার ভেতরটা যদি বেশি শুষ্ক হয়ে থাকে তবে গাছে আরেকটু ঘন ঘন পানি দিতে হবে । তবে সব গাছের জন্য আবার এই নিয়ম কার্যকর নয়, যেমন লেবু বা এজাতীয় রসালো ফলের গাছের জন্য একটু বেশিই পানির প্রয়োজন হয়। তাই এসব গাছের গোড়ার মাটি সবসময়েই ভেজা রাখাটা আবশ্যক।
বারান্দায় বা বসার ঘরে থাকা টবের গাছগুলোতে শীতের সময়টাতে যেন পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সকালের হালকা রোদ গাছের জন্য খুব ভালো।
খুব বেশি শীত পড়লে টব ঘরের ভেতরে নিয়ে রাখতে হবে। দিনে রোদ উঠলেই কেবল বাইরে দিতে হবে।
গাছের পাতা যদি একটু খসখসে ও ভারী ধরনের হয়ে থাকে তবে শীতের সময় তাতে ধুলা জমে যেতে পারে। ফলে গাছের আলো শোষণে বাঁধার সৃষ্টি হয়। তাই গাছের পাতাগুলো আলতো করে পানি দিয়ে ধুয়ে অথবা টিস্যু বা ন্যাপকিন দিয়ে মুছে দিতে হবে। এতে করে গাছের পোকামাকড়ও দূর হবে।
গাছে পানি দেওয়ার জন্য স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।
ঘরেই তৈরি করতে হবে গাছের প্রয়োজনীয় সার। চা পাতা, ফেলে দেওয়া শাক-সবজির ছিলকা,ডিমের খোসা সব একসাথে করে একটি টবে রেখে পঁচিয়ে কিছুটা দূর্গন্ধ বের হলে তারপর সেই সার গাছের গোড়ায় দিতে হবে।
গাছের গোড়ায় পড়ে থাকা ঝরে যাওয়া পাতা সরিয়ে ফেলতে হবে। পাতার রং হালকা হতে থাকলে পানি দেওয়া বন্ধ রেখে মাটি শুকনো না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে পর্যাপ্ত সূর্যালোক পায় এমন স্থানে রাখতে হবে।
গাছ যেমন ঘরের শোভাবর্ধন করে তেমন অক্সিজেনের অভাব পূরণ করে মানুষের জীবন বাঁচাতেও সহায়তা করে । আর সেজন্য গাছের এই উপকারের কথা ভেবেই না হয় এই সময়টাতে গাছের বাড়তি যত্নের ব্যাপারে মনোযোগি হয় আমরা।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট