চীনের প্রথম রাজা ফুসিসি: অনু সরকার
অনু সরকার
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:৩৪ পিএম, ৮ জুন ২০১৯ শনিবার
ফুসিসি প্রাচীন পুথিপত্রে লিপিবদ্ধ করা চীনের প্রথম রাজা। তার জন্ম প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে চীনদেশে। তার জন্ম নিয়ে নানা রকম কাহিনী শোনা যায়। বলা হয়ে থাকে তার অতিমানবীয় গুণ ছিলো।
উপকথায় বলা হয়েছে, রাজা ফুসিসির জন্ম রহস্যময়। ‘হুয়াসুউসি’ নামে এক মেয়ে তার মা। একটি সুন্দর দিনে মেয়েটি একটি জলাভূমিতে বেড়াতে যান। জলাভূমির একটি বড় পায়ের দাগ তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তিনি নিজের পা’দুটি ওই দাগের উপর রেখে দাড়ান। বাড়ি ফিরে গিয়ে তিনি গর্ভবর্তী হন এবং নয় মাস পর ফুসিসির জন্ম হয় ।
ফুসিসির একটি বোন ছিলো। তার নাম নুইউয়ো। প্রাচীন পুথিপত্রে বলা হয়েছে ফুসিসি ও তার বোন নুইউয়ো দেখতে অদ্ভুদ। তাদের মাথা মানুষের; কিন্তু শরীর ড্রাগনের মতো। এতে প্রমাণিত হয়, ফুসিসি খুব সম্ভতঃ ড্রাগণকে প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা এক উপজাতির সর্দার ।
ফুসিসির আমলে উৎপাদন শক্তির দ্রুত প্রসার হয়। অনেক বড় বড় আবিষ্কার ফুসিসির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রাচীন পুথিপত্রে বলা হয়েছে , তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন জিনিস এবং পশু-পাখির দাগ অনুসারে ‘পা কুয়া’ নামে এক রহস্যময় জ্যোতির্বিদ্যা তত্ত্ব আবিষ্কার করেন। এই তত্ত্ব অনুসারে পৃথিবীর বিভিন্ন জিনিসের ও বাস্তব জীবনের নানা বিষয় ব্যাখ্যা করা যায়।
এভাবে দড়ির গিটঁ বাধাঁর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের রেকর্ড করার ইতিহাসের অবসান হয়। ফুসিসি দড়ি দিয়ে মাছ ধরার জাল তৈরি করেন এবং অধিবাসীদের মাছ চাষের পদ্ধতি শেখান। ফসল ও বিয়ে প্রভৃতি আনন্দমুখর দিন উদযাপনের জন্য ফুসিসি ‘সে’ নামে এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেন এবং ‘চিয়া পিয়েন’ নামে একটি সুর সৃষ্টি করেন। তার এ অবদান তখনকার অধিবাসীদের বস্তুগত ও মানসিক জীবন সমৃদ্ধ করে তোলে। ফুসিসি স্থানীয় অধিবাসীদের কাঠ খনন করে আগুন সংগ্রহ করার পদ্ধতি শেখান এবং খাবার আগুনে সেঁকে খাওয়ার উপদেশ দেন। ফলে অধিবাসীরা কাঁচা মাংস খাবার অভ্যাস ছেড়ে দেন।
ফুসিসি প্রধানতঃ চীনের হুনান প্রদেশের হুয়াইইয়াং এবং সানতুং প্রদেশের চিনিং ও ছুফুতে থাকতেন। সানতুং প্রদেশের চিনিনে ফুসিসির সমাধি রয়েছে। প্রতি বছর চন্দ্রবর্ষের তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিন স্থানীয় অধিবাসীরা যথাযোগ্য মর্যাদার চীনা জাতির এ পূর্বপুরুষের স্মৃতি স্মরণ করেন।