ঢাকা, শনিবার ০৯, নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৪:৫৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ তীব্র শীত কবে থেকে, জানাল আবহাওয়া অফিস ইলিশের দাম নাগালের বাইরে সেন্টমার্টিন প্রবেশে লাগছে লিখিত অনুমতি ও এনআইডি গাজায় নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু: জাতিসংঘ

‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ এবং ভীতিমুক্ত নির্বাচনী পরিবেশের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৪৯ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৩ সোমবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

সন্ত্রাস ও সহিংসতামুক্ত জেন্ডার সংবেদনশীল নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 
আজ সোমবার ১৩ নভেম্বর  বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উক্ত সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।


সম্মেলনে সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন বিএনপিএস-এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর এবং সঞ্চালনা করেন বিএনপিএস-এর পরিচালক শাহনাজ সুমী।


 সাংবাদিক সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের প্রতি মোট ৩১ দফা লিখিত দাবি উত্থাপন করেন বিএনপিএস-এর পরিচালক শাহনাজ সুমী। 

সভাপ্রধানের বক্তব্যে নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো উদ্বিগ্ন কেবল নিজেদের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত হওয়া না হওয়া নিয়ে, সকল পর্যায়ের নাগরিকদের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হচ্ছে কি না তা নিয়ে তারা সম্পূর্ণ নীরব। অন্যদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউরোপ-আমেরিকা থেকে যেসব প্রতিনিধি দল আসছে, তারাও দুই দলের অংশগ্রহণে যাতে নির্বাচন হয় সেটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। সমাজকে প্রকৃতপক্ষে যারা রিপ্রেজেন্ট করে, সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার সেই ৫০ শতাংশ নারীসমাজের ইস্যুগুলো নির্বাচনে গুরুত্ব পাবে কি না, যেমন উত্তরাধিকারে সমান অধিকার, নির্যাতনমুক্ত জীবনযাপনের অধিকার, এ ব্যাপারে তাদের মধ্যে কোনো উচ্চবাচ্য নেই। এমনকি নাগরিক সমাজের যে অংশ নির্বাচন নিয়ে হামেশাই কথা বলেন, তারাও এ ব্যাপারে কথা বলছেন না। 

তিনি বলেন, একটি অর্থবহ নির্বাচনের জন্য জনগোষ্ঠীর অর্ধেক অংশ নারীসমাজ, দরিদ্র, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যাল্প জনগোষ্ঠীসহ সকল নাগরিকের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হওয়া দরকার। পাশাপাশি দরকার আতঙ্ক ও ভয়ভীতিহীন সন্ত্রাস ও সহিংসতামুক্ত জেন্ডার সংবেদনশীল নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত হওয়া।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুঃখজনকভাবে ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বাড়ছে এবং এই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী প্রতিনিয়ত স্বাধীনতার মূল চেতনা ও সংবিধানপরিপন্থী এবং নারীর সমানাধিকার বিরোধী ঘৃণ্য প্রচারণা চালিয়ে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজসহ দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে, যা সম্পূর্ণরূপে অগণতান্ত্রিক, মৌলিক মানবাধিকার-পরিপন্থী ও রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক। নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে এ ধরনের ঘৃণ্য কার্যক্রম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বিএনপিএস-এর পরিচালক শাহনাজ সুমী বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সাথে সংলাপে বসলেও এখন পর্যন্ত দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজকে আলোচনার জন্য আহ্বান জানায় নি, যদিও নারীসমাজের পক্ষে আমরা ইতোমধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবরে স্মারকলিপি প্রেরণ করেছি। তা ছাড়া, অচিরেই রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে। আমরা আশা করি ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারগুলোতে নারীকে রাষ্ট্রের সমান নাগরিক হিসেবে গণ্য করে তাদের অগ্রযাত্রার রূপরেখা থাকবে। সাংবাদিক সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের প্রতি নিম্নে উক্ত দাবিসমূহ তুলে ধরা হয় :

নির্বাচন কমিশনের প্রতি 
১.    জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; 
২.    নারী, দরিদ্র এবং জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যাল্প জনগোষ্ঠীর নাগরিকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি ও সহায়ক নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন করতে হবে; 
৩.    নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনকালে ও নির্বাচনের অব্যবহিত পরে ভোটারদের, বিশেষ করে সংখ্যাল্প, নারী ও দরিদ্র ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; 
৪.    ধর্মীয় উগ্রবাদী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর চোরাগোপ্তা হামলা ও নাশকতার ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে এমন এলাকায় বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; 
৫.    নির্বাচনে নারী, দরিদ্র ও সংখ্যাল্প জনগোষ্ঠীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সকল নাগরিকের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি এবং তাদের একদিনের ভোটার নয়, বরং রাষ্ট্রের সমান নাগরিক হিসেবে মর্যাদা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; 
৬.    নির্বাচনী প্রচারণায় যে কোনো আঙ্গিকে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে;
৭.    যদি কোনো প্রার্থী/দল/গোষ্ঠী নির্বাচনী প্রচারণায় বা সভা/সমাবেশে নারীর প্রতি সম্মানহানিকর, নারীবিদ্বেষী, নারীর সমানাধিকার বিরোধী বা অশালীন বক্তব্য উপস্থাপন করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে; 
৮.    নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সকল তথ্য লিঙ্গ-বিভাজিত উপায়ে নারী-পুরুষ অনুযায়ী আলাদাভাবে সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; 
৯.    প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ নির্বাচন পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে নারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাড়াতে হবে।

রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতি:
রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী ইশতেহারে নিম্নোক্ত অঙ্গীকারসমূহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে-
১.    উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষ সমান অধিকার নিশ্চিত করা;
২.    সিডও সনদের ২ ও ১৬ (গ) ধারার সংরক্ষণ প্রত্যাহার করে এর পূর্ণ অনুমোদন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া;
৩.    নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আইন পরিবর্তন করা (যেমন ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইন);
৪.    নারী উন্নয়ন নীতি এবং নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ (প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ, মনিটরিং জোরদারকরণ); 
৫.    নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রণালয়ে পরিণত করা; 
৬.    দলের সকল পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩% নারীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীকে জাতীয় সংসদসহ সকল নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া; 
৭.    নারীর অবৈতনিক গার্হস্থ্য  শ্রম (টহঢ়ধরফ ঈধৎব ডড়ৎশ) কে জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা;
৮.    উপার্জনমূলক কাজে নারীর যুক্ত হবার পথের বাধা অপসারণ করা (পরিবার পর্যায়ে গার্হস্থ্য কর্মভার শেয়ার করবার সংস্কৃতির উন্নয়ন, প্রতি রান্নাঘরে গ্যাস ও পানির সংযোগ নিশ্চিত করা, বাসাবাড়িতে ব্যবহার্য আধুনিক ডিভাইসগুলো সহজলভ্য করা ও দাম কমানো);
৯.    নারীর প্রতি আয়বৈষম্য কমানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ (সমান কাজে সমান মজুরি নিশ্চিত করা, নারীর জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা);
১০.    সকল পর্যায়ে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে পদক্ষেপ গ্রহণ (সকল গণমাধ্যমে নিয়মিত নারী-পুরুষ সাংবিধানিক সমঅধিকার বিষয়ক প্রচারণা চালানো);
১১.    ঘরে ও বাইরে নারীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা (বিদ্যমান আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধ্যতামূলক জেন্ডার প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা, সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বার্ষিক পারফর্মেন্স ইভালুয়েশনের ইনডিকেটর হিসেবে জেন্ডার বিষয়টি যুক্ত করা);
১২.    নারীর প্রতি সম্মানহানিকর, নারীবিদ্বেষী, নারীর সমানাধিকার বিরোধী প্রচারণা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ (চিহ্নিতদের শাস্তির আওতায় আনা, অনলাইন কনটেন্ট ও অ্যাকাউন্ট রিমুভ করা)। 
গণমাধ্যমের প্রতি
১.    নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকাল ও নির্বাচনপরবর্তী সময়ে কোথাও কোনো দল বা প্রার্থী বা তার বাহিনী কর্তৃক নারী, সংখ্যাল্প ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর কোনো নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা চাপ প্রয়োগের ঘটনা ঘটলে যথাসম্ভব দ্রুত গণমাধ্যমে তার সরেজমিন প্রতিবেদন উপস্থাপন করা;
২.    নাগরিকদের ধর্মীয় অনুভূতিকে উসকে দিয়ে কোনো প্রার্থীর বিপক্ষে প্রচারণা চালানো হলে বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভোটপ্রার্থনা করা হলে কিংবা কোনো প্রার্থী কোনো জনসভায় নারী ও সংখ্যাল্প জনগোষ্ঠীর অধিকার বা সংবিধানবিরোধী কোনো বক্তব্য রাখলে তথ্যপ্রমাণসহ তা প্রচার করা; 
৩.    বাংলাদেশের সংবিধান, মানবাধিকার সনদ, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, সিডও সনদ, আইএলও কনভেনশন, সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও নির্বাচনী আচরণবিধির প্রতি সশ্রদ্ধ থেকে সংবাদ উপস্থাপন এবং কোনো দল বা প্রার্থীর প্রতি পক্ষপাত না করা;
৪.    নির্বাচনসংক্রান্ত অনুষ্ঠানাদির সংবাদ সংগ্রহে সমভাবে নারী সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব অর্পণ করা এবং নির্বাচনবিষয়ক সকল প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট নারী ও পুরুষের লিঙ্গভিত্তিক সংখ্যাচিত্র তুলে ধরা। 
নাগরিক সমাজের প্রতি  
১.    রাষ্ট্রের সক্রিয় নাগরিক হিসেবে জনগণ তথা ভোটারদের ‘ভোটার এডুকেশন’-এর ব্যবস্থা করা; ভোটারগণ যাতে কোনোরকম আর্থিক লেনদেন বা ভয়ভীতি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে সচেতনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন;    
২.    কেবল দুই প্রধান দল বা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নয়, বরং সকল নাগরিকের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে কাদের ভূমিকা সংবিধান ও জনস্বার্থ সংরক্ষণে ইতিবাচক, কাদের ভূমিকা নেতিবাচক তা টকশোসহ বিভিন্ন আলোচনায় তুলে ধরা; 
৩.    সংবিধান এবং নারী ও সংখ্যাল্প জনগোষ্ঠীর সমানাধিকার ও সমমর্যাদাবিরোধী, নারী নির্যাতনকারী, ঋণখেলাপি, করখেলাপি, সন্ত্রাসীবাহিনীর গডফাদার ও যুদ্ধাপরাধীকে নিজেদের মূলবান ভোট প্রদান না করা এবং প্রার্থী হিসেবে এদের বর্জন করার ব্যাপারে অন্যদের উৎসাহিত করা; 
৪.    নারী, সংখ্যাল্প ও দরিদ্রদের ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহিত করা এবং তারা যাতে নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারে, সে ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করা;
৫.    নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকাল ও নির্বাচনপরবর্তী সময়ে নারী, সংখ্যাল্প ও দরিদ্রদের ওপরে কোথাও কোনো দমন-পীড়নের ঘটনা ঘটলে বা ঘটবার উপক্রম হলে তার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যমকে অবহিত করা;
৬.    ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রবীণ নারী-পুরুষ ও প্রতিবন্ধী নাগরিকদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সহায়তা করা।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সকলে নিজ নিজ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে যতœবান হলে আগামী নির্বাচনে সকল নাগরিকের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং ভয়ভীতিমুক্ত উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত হবে ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিক স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে পারবে। 

গণমাধ্যমের প্রতি
১.    নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকাল ও নির্বাচনপরবর্তী সময়ে কোথাও কোনো দল বা প্রার্থী বা তার বাহিনী কর্তৃক নারী, সংখ্যাল্প ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর কোনো নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা চাপ প্রয়োগের ঘটনা ঘটলে যথাসম্ভব দ্রুত গণমাধ্যমে তার সরেজমিন প্রতিবেদন উপস্থাপন করা;
২.    নাগরিকদের ধর্মীয় অনুভূতিকে উসকে দিয়ে কোনো প্রার্থীর বিপক্ষে প্রচারণা চালানো হলে বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভোটপ্রার্থনা করা হলে কিংবা কোনো প্রার্থী কোনো জনসভায় নারী ও সংখ্যাল্প জনগোষ্ঠীর অধিকার বা সংবিধানবিরোধী কোনো বক্তব্য রাখলে তথ্যপ্রমাণসহ তা প্রচার করা; 
৩.    বাংলাদেশের সংবিধান, মানবাধিকার সনদ, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, সিডও সনদ, আইএলও কনভেনশন, সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও নির্বাচনী আচরণবিধির প্রতি সশ্রদ্ধ থেকে সংবাদ উপস্থাপন এবং কোনো দল বা প্রার্থীর প্রতি পক্ষপাত না করা;
৪.    নির্বাচনসংক্রান্ত অনুষ্ঠানাদির সংবাদ সংগ্রহে সমভাবে নারী সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব অর্পণ করা এবং নির্বাচনবিষয়ক সকল প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট নারী ও পুরুষের লিঙ্গভিত্তিক সংখ্যাচিত্র তুলে ধরা। 
নাগরিক সমাজের প্রতি  
১.    রাষ্ট্রের সক্রিয় নাগরিক হিসেবে জনগণ তথা ভোটারদের ‘ভোটার এডুকেশন’-এর ব্যবস্থা করা; ভোটারগণ যাতে কোনোরকম আর্থিক লেনদেন বা ভয়ভীতি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে সচেতনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন;    
২.    কেবল দুই প্রধান দল বা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নয়, বরং সকল নাগরিকের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে কাদের ভূমিকা সংবিধান ও জনস্বার্থ সংরক্ষণে ইতিবাচক, কাদের ভূমিকা নেতিবাচক তা টকশোসহ বিভিন্ন আলোচনায় তুলে ধরা; 
৩.    সংবিধান এবং নারী ও সংখ্যাল্প জনগোষ্ঠীর সমানাধিকার ও সমমর্যাদাবিরোধী, নারী নির্যাতনকারী, ঋণখেলাপি, করখেলাপি, সন্ত্রাসীবাহিনীর গডফাদার ও যুদ্ধাপরাধীকে নিজেদের মূলবান ভোট প্রদান না করা এবং প্রার্থী হিসেবে এদের বর্জন করার ব্যাপারে অন্যদের উৎসাহিত করা; 
৪.    নারী, সংখ্যাল্প ও দরিদ্রদের ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহিত করা এবং তারা যাতে নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারে, সে ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করা;
৫.    নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকাল ও নির্বাচনপরবর্তী সময়ে নারী, সংখ্যাল্প ও দরিদ্রদের ওপরে কোথাও কোনো দমন-পীড়নের ঘটনা ঘটলে বা ঘটবার উপক্রম হলে তার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যমকে অবহিত করা;
৬.    ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য প্রবীণ নারী-পুরুষ ও প্রতিবন্ধী নাগরিকদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সহায়তা করা।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সকলে নিজ নিজ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে যতœবান হলে আগামী নির্বাচনে সকল নাগরিকের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং ভয়ভীতিমুক্ত উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত হবে ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিক স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে পারবে।