শহীদ কবি মেহেরুন্নেসার জন্মদিন আজ
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৪:১৬ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২৩ রবিবার
শহীদ কবি মেহেরুন্নেসা
আনো দেখি আনো সাতকোটি/এই দাবীর মৃত্যু তুমি,/চির বিজয়ের অটল শপথ/‘জয় এ বাঙলা ভূমি’--বাঙালির মুক্তির দৃপ্ত উচ্চারণে লেখা এই কবিতা কবি মেহেরুননেসা দাঁড় করিয়ে দেন বাঙালিবিরোধী অপশক্তির মুখোমুখি।
বাংলাদেশের প্রথম শহীদ নারী কবি মেহেরুন্নেসার। রানু যার ডাকনাম; আজ তার জন্মদিন। ১৯৪২ সালের ২০ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার খিদিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
মা নূরননেসা ও বাবা আবদুর রাজ্জাক। চার সন্তানের এই পরিবারের কনিষ্ঠা কন্যা মেহেরুন। বড় বোন মোমেনা খাতুন, ছোট দুই ভাই রফিকুল ইসলাম বাবলু ও শহিদুল ইসলাম টুটুল। শৈশব কেটেছে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে দাঙ্গায় উদ্বাস্তু হয়ে মেহেরুনদের পরিবার ১৯৫০ সালে ঢাকা চলে আসে। মেহেরুননেসার বোন মোমেনা খাতুন। স্বভাব-ছড়াকার কবি মেহেরুননেসা বোনের সাহচর্যে বই পড়তেন, মুখস্থ রাখতেন অসংখ্য ছড়া ও কবিতা।
বর্ণপরিচয়, আদর্শলিপি, মাইকেলের সহজপাঠ, রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা, সুকান্ত, নজরুলের সঞ্চিতা, জসীমউদ্দীনের কবিতা-এসব ছিল মেহেরুননেসার প্রিয় পাঠ্যতালিকায়।খেলাধুলাতে ছিলেন নিমগ্ন ভীষণ। সুর তুলতেন গানে, বিশেষ পারদর্শী ছিলেন হাতের কাজে।
পুরান ঢাকার নানান এলাকায় বাস করে ১৯৬৫ সালে তাদের পরিবার থিতু হয় মিরপুরে। ‘চাষী’ শিরোনামে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় হাবীবুর রহমান সম্পাদিত খেলাঘর-এর পাতায় (১৯৫৩-৫৪)।
প্রায় বিস্মৃতির আড়ালে হারিয়ে যাওয়া দুঃসাহসী এক কবির নাম মেহেরুন্নেসা। স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীর ওপর নিষ্ঠুরতম ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে মা ও দুই ভাইসহ শহীদ হন তিনি।
ষাটের দশকের সম্ভাবনাময়, প্রাণবন্ত, হাস্যোজ্জ্বল এক তরুণী কবি মেহেরুন্নেসা। বাবা ক্যান্সারে মারা গেলে পরিবারের খরচ যোগাতে পত্রিকায় কপি লেখা এবং প্রুফ দেখার কাজ শুরু করেন তিনি। সে সময়ের প্রায় সব পত্রিকাতেই তার কবিতা ছাপা হত। কিন্তু সংসারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে এক সময় সাহিত্য-সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন তিনি।কিন্তু ছোট দুটি ভাইকে তো মানুষ করতে হবে। তাই নিজের সম্ভাবনা ভুলে পরিশ্রম করে গেলেন দিনরাত।
এরই মাঝে ‘সাত কোটি জয় বাংলার বীর! ভয় করি নাকো কোন/ বেয়নেট আর বুলেটের ঝড় ঠেলে- চির বিজয়ের পতাকাকে দেবো, সপ্ত আকাশে মেলে/ আনো দেখি আনো সাত কোটি এই দাবীর মৃত্যু তুমি/ চির বিজয়ের অটল শপথ/ জয় এ বাংলায় তুমি....’ এই কবিতাটি জানান দেয় বিপ্লবের কথা। পাকি শাসক গোষ্ঠীর প্রতি ছুঁড়ে দেয়া এই চ্যালেঞ্জে ক্ষমতার ভীত কেঁপে ওঠে।
পাক-হানাদার, রাজাকার ও বিহারীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসে দুই ভাইকে সাথে নিয়ে নিজ বাড়ির ছাদে উড়িয়েছিলেন লাল-সবুজের পতাকা। অবাঙালি ও বিহারীদের হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত মিরপুরের বাঙ্গালিদের রক্ষার জন্য প্রিয় বান্ধবী কবি কাজী রোজীকে সঙ্গে নিয়ে গঠন করেছিলেন- ‘অ্যাকশন কমিটি’। এই ‘অ্যাকশন কমিটি’র প্রেসিডেন্ট হন মেহেরুন্নেসা। তার বন্ধু কাজী রোজি হন সদস্য। ২৫ মার্চ কমিটির মিটিং শেষে দুই বন্ধু দেশের অবস্থা নিয়ে নানা আলোচনা করেন। কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে অনুমান করেন তারা।
এর ঠিক দুদিনের মাথায় ঘটে যায় সেই নির্মম হত্যাকাণ্ড। ২৭ মার্চ, বেলা ১১টার দিকে রাজাকার কাদের মোল্লার নেতৃত্বে মাথায় লাল ও সাদা পট্টি পরে মেহেরুননেসার মিরপুরের বাসায় আসে রাজাকার কাদের মোল্লা, হাসিব হাশমি, আব্বাস চেয়ারম্যান, আখতার গুণ্ডা, নেহাল ও আরো অনেকে। তারা মেহেরের দুই ভাই রফিক ও টুটুলকে প্রথমেই মেরে ফেলার উদ্যোগ নেয়। মা বাধা দিতে গেলে ধাক্কা মেরে দূরে ফেলে দেয়।
মেহের বুকে কোরআন শরিফ চেপে বলেন, ‘আমরা তো মুসলমান আমাদের মারবে কেন?...আর যদি মারতেই হয় আমাকে মারো। ওদের কোনো দোষ নেই। ওদের ছেড়ে দাও।’ কিন্তু পিশাচেরা সেই আকুতি শোনেনি। একে একে সবাইকে জবাই করে হত্যা করে তারা, তারপর মেতে ওঠে নারকীয় উল্লাসে।
নির্মমভাবে জবাই করে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করা হয় কবি মেহেরুন্নেসা এবং তার মা ও দুই ভাইকে। মেহেরুন্নেসার দুই ভাইয়ের মাথা নিয়ে ফুটবল খেলেছিল সেদিন ঘাতকেরা। জবাই করে হত্যা করেছিলো তাদের বৃদ্ধ মাকে। সবশেষে মেহেরুন্নেসার কাটা মাথা তারই লম্বা চুল দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে বেধে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আর নিচে পড়ে থাকে জবাই করা রক্তাক্ত দেহটা। এ সময় পৈশাচিক নৃত্যে উল্লাস করতে থাকে পিচাসের দল। মিরপুরের কসাই কাদের মোল্লার নেতৃত্বে, তার দোসরদের সাথে পরিচালিত এই হত্যাকাণ্ড ছিল মানবতার ইতিহাসে অন্যতম এক কালো অধ্যায়।
মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার পর একজন অবাঙালি বিহারীর মুখে শোনা যায় সেই নারকীয় উল্লাসের নির্মম ইতিহাস। পাষণ্ডদের সেই তাণ্ডব নৃত্য দেখে প্রত্যক্ষদর্শী একজন অবাঙালি প্রতিবেশী পরে জানিয়েছেন, জীবনে এ রকম নারকীয় হত্যাযজ্ঞ তিনি কখনো দেখেননি।’ (শহীদ কবি মেহেরুন্নেসা, কাজী রোজী, বাংলা একাডেমি, ঢাকা, ২০১১)
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিষ্ঠুরতম ও নারকীয় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন কবি মেহেরুন্নেসা। আজও স্বাধীন বাংলাদেশের বাতাসে ঘুরে ফেরে সেই বেদনার স্মৃতি।
- ফের অভিষেকের সঙ্গে বিচ্ছেদ গুঞ্জন
- অতিশী মারলেন হচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী
- বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ইউরো সহায়তা দেবে জার্মানি
- সহজে তালের বড়া তৈরির রেসিপি
- ইরানে বাড়ছে চিকিৎসকদের আত্মহত্যা, কিন্তু কেন?
- বর্ষার রাণী কেয়া ফুল: কত যে বাহার
- ঢাবিতে গণবিয়ের আয়োজনে অনুমতি নেই কর্তৃপক্ষের
- আশুলিয়ায় সংঘর্ষ: ১ নারী শ্রমিক নিহত, আহত ৩
- ভারী বর্ষণে মহাসড়কে উপড়ে পড়ল শতবর্ষী বটগাছ
- আর্জেন্টিনার পর বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিলের বিদায়
- চরফ্যাশনে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
- চিকিৎসকদের ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নিয়েছেন মমতা
- ২৬ তারিখ কী ঘটবে, কেন এত আলোচনা!
- বৃষ্টি নিয়ে ফের দুঃসংবাদ
- বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না ডিম-মুরগি
- কোটা আন্দোলন:পরিবহন খাতে ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকা!
- এই কাজ আমার জন্য চ্যালেঞ্জ নয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
- সিরাজগঞ্জে এমপির বাসায় আগুন, দুই মরদেহ উদ্ধার
- মাদার তেরেসার ১১৪তম জন্মদিন আজ
- অভিনয়শিল্পী-নির্মাতাদের সংহতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
- আজ বাইশে শ্রাবণ, রবী কবির প্রয়াণ দিবস
- পর্যটক না আসায় হতাশ টাঙ্গুয়ার হাওরের শ্রমিকরা
- ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের দুই শিল্পীকে শোকজ
- নতুন মুখ নিয়ে দল গোছান, আওয়ামী লীগকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- রাজধানীসহ সারা দেশে দেড় হাজার ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙচুর
- শখের বশে সফল উদ্যোক্তা সুমনা
- বন্যায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, সড়কে-গাছতলায় চলছে চিকিৎসা
- আইভিএফ পদ্ধতি কী ও কেন জেনে নিন
- আদালত প্রাঙ্গণে ফারজানা রূপাকে থাপ্পড়
- শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপা ডিবিতে