ঢাকা, শনিবার ২৭, এপ্রিল ২০২৪ ৯:৪৫:৪০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

কঙ্গো: সাপের ছোবলে দেড় লাখ মানুষ মারা যায় বছরে

বিবিসি বাংলা | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৪৮ পিএম, ১৮ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার

যুদ্ধ, সংঘাত আর ইবোলা নিয়েই খবরের শিরোনাম হয় ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো। কিন্তু দেশটিতে দেড় লাখের কাছাকাছি মানুষ প্রতি বছর সাপের ছোবলে মারা যায়।

ভৌগোলিকভাবে আফ্রিকার এই দেশটির সীমানার চারপাশ এবং ভেতরের বিরাট অংশ বনভূমি। আর এই গহীন বনেই এক মৃত্যুফাঁদ দিনে দিনে বড় হয়ে উঠছে।

এসব জঙ্গলে বিপুল পরিমাণ বিষধর সাপের বাস। প্রতি বছর সাপের ছোবলে আহত এবং নিহত হয় অনেক মানুষ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং মেদসাঁ স্যঁ ফ্রঁতিয়ে যাকে আফ্রিকার 'অবহেলিত এক সংকট' বলে বর্ণনা করেছে।

সম্প্রতি পুলিৎজার সেন্টারের 'ক্রাইসিস রিপোর্টিং' এর অংশ হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপের খোঁজে কঙ্গোর জঙ্গলে গিয়েছিলেন ফটোগ্রাফার হিউ কিনসেলা কানিঙহ্যাম।

তিনি সেখানে দেখা পাওয়া নানা জাতের সাপের ছবি তুলেছেন। সেই সঙ্গে যারা সাপ ধরেন, যারা মাছ ধরতে গিয়ে সাপের ছোবলে প্রাণ হারিয়েছেন - তাদের জীবনযাপন প্রক্রিয়াও উঠে এসেছে তার ক্যামেরায়।

প্যাট্রিক নামে এক জেলে রুকি নদীর পাশে বাস করছেন কয়েক পুরুষ যাবত।

বিষধর সাপের ছোবলে ঐ গ্রামে বহু মানুষ মারা যায় প্রতি বছর, যে কারণে সাপ দেখলেই পিটিয়ে হোক বা যেকোন উপায়ে মেরে ফেলাই স্বাভাবিক সকলের কাছে।

কিন্তু গত মাসে প্যাট্রিকের জালে একটি বিষধর মামবা ধরা পড়ে, কিন্তু সে তাকে মেরে না ফেলে রেখে দিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ডিআর কঙ্গোতে প্রতি বছর ২৭ লাখ মানুষ সাপের ছোবলে আহত হয়, মারা যায় প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ।

সংস্থাটির এক রিপোর্টে দেখা গেছে, সাপের ছোবলে আহত বহু মানুষের পরবর্তীতে হাত বা পা কেটে ফেলতে হয়েছে।

অনেক মানুষকে বরণ করতে হয়েছে চিরস্থায়ী পঙ্গুত্ব।

এ নিয়ে সেখানকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির কাজ করছে দেশটির সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

কিন্তু জঙ্গলের আশেপাশে গ্রামের মানুষের বড় অংশটি মৎস্যজীবী, ফলে সেখানকার মানুষের নদী বা জঙ্গলের ভেতরে না ঢুকে জীবিকা লাভের বিকল্প উপায় তেমন নেই।

তাছাড়া বহু বছর ধরে চলা রাজনৈতিক সংঘাত এবং দুর্নীতির কারণে দেশটির অর্থনীতির অবস্থাও ভালো না।

গত বছর এক সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে 'অ্যান্টি-ভেনম' বা বিষ-নিরোধী ওষুধের ব্যাপক সংকট রয়েছে।

বিশেষ করে গ্রাম এলাকার হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সাপে কাটা রোগী নিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে বিষ-নিরোধী ওষুধ দেয়া যায় না, যে কারণে আক্রান্ত প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলতে হয় অনেক সময়।

তবে সাপের উৎপাতের কারণে প্রতিবছর মানুষের হাতে মারা পড়ে বহু সাপ।

ডিআর কঙ্গোর একজন পরিবেশবিদ ও বন কর্মকর্তা জোয়েল বোতসোয়ানা বলছেন, স্থানীয় কৃষক আর জেলেদের হাতে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক সাপ মারা পড়ে।

সম্পতি সেখানকার কৃষকেরা পিটিয়ে একটি মামবা সাপকে মেরে ফেলে।

মামবা সাপের বিষ মানুষের স্নায়ুকে বিকল করে দেয়। এ সাপ এতই বিষধর যে ছোবল দেওয়ার পর বড়জোর ঘন্টাখানেক বাঁচে মানুষ।

এর পরই রয়েছে গোখরা সাপের অবস্থান, ডিআর কঙ্গোতে মামবার পরই সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় গোখরার ছোবলে।

সাপের ছোবল খাওয়া সেখানকার জেলেদের জন্য নিয়মিত ঘটনা, এজন্য বিষক্রিয়া ঠেকাতে প্রচলিত রীতি মেনে চলেন জেলেরা।

স্থানীয় এক ধরণের ওষুধ ব্যবহার করেন অনেকে। স্থানীয় লতাপাতা আর মৃত সাপের মাথা চূর্ণ করে এক ধরণের পাউডার সদৃশ গুড়া বিক্রি করা হয় বাজারে।

প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, সাপে কাটা মানুষের হাতে বা পায়ে রেজর দিয়ে কেটে এই পাউডার মাখিয়ে দিতে হয়। অবশ্য এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও অনেক বেড়ে যায় বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

তবে সাপের বিষ বিক্রি করেও জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকে।অতি উচ্চমূল্যে বিভিন্ন সাপের বিষ কিনে নেয় দেশি-বিদেশী ওষুধ কোম্পানি।

সেই সঙ্গে সাপের মাংসেরও কদর আছে দেশটিতে। খেতে সুস্বাদু আর সহজপ্রাপ্য নয় বলে বেশ দামে বিক্রি হয় স্থানীয় বাজারে।

একটি ছোট সাপের শুটকি তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার কঙ্গোলিজ ফ্রাঁ মানে প্রায় আড়াই শো টাকায় বিক্রি হয়। তবে বেশির ভাগ সময় এসব সাপের কোন বিষ থাকে না।