ঢাকা, শনিবার ২৭, এপ্রিল ২০২৪ ৭:৩২:০০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

খাসিয়া নারীরাই পরিবারের প্রধান

ইসমাইল মাহমুদ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১১ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার

আমাদের দেশে যে সব আদিবাসী সম্প্রদায় রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম খাসিয়া সম্প্রদায়। সিলেট অঞ্চলেই মূলত খাসিয়াদের বাস। গভীর অরণ্যে পান চাষ করে খাসিয়ারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। বিশেষ করে ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন গভীর অরণ্যই খাসিয়াদের আবাসের জন্য পছন্দনীয় স্থান। খাসিয়ারা মূলত মাতৃতান্ত্রিক সম্প্রদায়। এদের পরিবারের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন নারীরা। নারীরা কনে যাত্রী নিয়ে বিয়ে করে বর নিয়ে আসেন নিজ নিজ পান পুঞ্জিতে। এ কারণে কোনো খাসিয়া পরিবারে তিন ভাই থাকলে বিয়ে করে তিন পুঞ্জিতে চলে যান। আর নারীরা নিজেদের বাড়িতেই পিতা মাতার সঙ্গে স্বামী-সন্তানসহ বসবাস করে থাকেন। এদের পরিবারে নারীদের ভূমিকাই মুখ্য।

বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল ও ভারতের আসামে খাসিয়া জনগোষ্ঠী বাস করে। সিলেট অঞ্চলের খাসিয়ারা সিনতেং গোত্রভুক্ত জাতি। সিলেট অঞ্চলের খাসিয়ারা কৃষিজীবী। তারা মাতৃপ্রধান পরিবারে বসবাস করে। খাসিয়াদের উত্পাদিত পান বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। খাসিয়ারা অনেক সংকটের মাঝেও অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় জনগোষ্ঠী হিসেবে সমাদৃত। তাদের নিজস্ব নিয়ম-কানুন রয়েছে। মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পরিচালিত খাসিয়াদের কোনো পুরুষ সম্পত্তির মালিক হন না। স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদের মালিক হন নারীরা। পুরুষদের বিয়ে হলে তারা গিয়ে ওঠেন শ্বশুরবাড়ি অর্থাত্ স্ত্রীর বাড়িতে। তারা বাড়ির কাজে ও পানের জুমে কাজ করে পরিবারকে সহায়তা করেন। স্ত্রীর বাড়িতে পুরুষরা কাটিয়ে দেন জীবনের বাকি দিনগুলো।

খাসিয়া সমাজ ব্যবস্থায় মেয়েদের অর্থাত্ নারীদের রয়েছে বিশেষ সম্মান ও আলাদা মর্যাদা। খাসিয়াদের মধ্যে প্রবাদ রয়েছে ‘লংজেইদ না কিন থেই’ অর্থাত্ নারীদের হাতে মানব জাতির উত্পত্তি। মেয়েরা ধন সম্পত্তির উত্তরাধিকারী। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ মেয়ের ধন সম্পদে বেশি প্রাধান্য থাকে। বংশ পরিচয় দেয়া হয় মায়ের বংশানুক্রমে। খাসিয়া সম্প্রদায়ে ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ থাকায় তাদের অধিকাংশ বিয়ে হয় প্রেম-ভালোবাসার মাধ্যমে। স্বগোত্রে বিয়ে খাসিয়া সমাজে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী মেয়ের বাড়িতে যৌথ পরিবারে কমপক্ষে পাঁচ বছর থাকতে হয়। পরে প্রয়োজনে তারা আলাদা বসবাস করতে পারেন। খাসিয়া নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় অধিক পরিশ্রমি হয়ে থাকেন। খাসিয়াদের বিয়ে ও পূজানুষ্ঠানে নাচ-গানের আয়োজন হয়ে থাকে। এতে সাধারণত খাসিয়া নারীরাই অংশ নেন। খাসিয়ারা সাধারণত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হলেও তারা প্রকৃতি পূজারি। তারা বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করেন। তাদের বিশ্বাস ‘উব্লাই নাথউ’-ই পৃথিবী সৃষ্টিকারী আদি দেবতা। খাসিয়াদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য খুবই সমৃদ্ধ। তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যজুড়েও রয়েছেন নারী সমাজ।