ঢাকা, শনিবার ২৭, এপ্রিল ২০২৪ ৬:২৮:৩৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

তিন বছরেও তনু হত্যার কোনো কিনারা করতে পারেনি সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:২৯ এএম, ২০ মার্চ ২০১৯ বুধবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আজ ২০ মার্চ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের তিন বছর। দীর্ঘ তিন বছরেও তনুর ঘাতকদের শনাক্ত করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ তনুর পরিবার, সহপাঠী ও প্রতিবাদী মহল।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, এখনো তনুর পুরাতন জামা-কাপড়ে যেন তার গন্ধ খুঁজে পাই। গভীর রাতে বাসার বাইরে আওয়াজ হলেই যেন মনে হয় আমার তনু ফিরে এসেছে।

তিনি জানান, সিআইডির কর্মকর্তারা প্রথম থেকেই বলে আসছেন সহসাই ঘাতকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন। তাদের এমন আশ্বাসের কথা শুনে শুনে তিনটি বছর পার হয়ে গেল, কিন্তু আশার আলো এখনও দেখছি না, দেখব কিনা তাও জানি না। গত এক বছর ধরে সিআইডি কর্মকর্তাদের কোনো খবর নেই। তবে এখন আমার একটাই ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আমার আবেগ ও কষ্টটা ওনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে বলতে চাই। কারণ তিনিও একজন মা। একজন মা বোঝেন সন্তান হারানোর বেদনা।

২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে টিউশনি করাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেনি তনু। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাতে তনুদের বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গলে তার মরদেহ পায় স্বজনরা। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ঘাতকদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। এদিকে দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ তনুর ‘মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ’ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। ২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রানু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না।

সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা ব্যক্তি বলেও সিআইডি জানিয়েছিল। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।

একই সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাতো বোন লাইজু ও চাচাতো ভাই মিনহাজকে দিনভর পুরানো বিষয়গুলো জিজ্ঞেস করেন ঢাকা সিআইডির কর্মকর্তারা। এরপর থেকে তনুর পরিবারের সদস্যরা মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং তদন্তকারী সংস্থাও তাদের কিছু জানাচ্ছে না বলে সাংবাদিকদের জানান তনুর বাবা-মা।

এদিকে দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও বিচার দাবি করছেন ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থার গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রতন কুমার সাহা। তিনি বলেন, এটা দেশের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি ঘটনা। একটা মানুষ মারা গেল, তার বিচার পাব না? এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। দ্রুত ঘাতকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য তদন্তকারী সংস্থার নিকট দাবি জানাচ্ছি।

অপরদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি নেই তা বলা যাবে না। আমাদের কাজে কোনো স্থবিরতা নেই, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ডিএনএ পরীক্ষা এবং ম্যাচিং করার বিষয়টি সময় সাপেক্ষ। ডিএনএ ম্যাচিংয়ের কাজ চলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।

-জেডসি