ঢাকা, রবিবার ১৯, মে ২০২৪ ২১:৪৬:২৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বাংলা ভাষাকে রক্ষা করতে শহীদ হন কমলা ভিক্ষা করে দেশের মানুষ চলবে না: প্রধানমন্ত্রী জাতীয় এসএমই পুরস্কার পেলেন ৭ উদ্যোক্তা রাফা ছেড়েছে ৮ লাখ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ কেজিতে ২০০ টাকা ছাড়াল কাঁচা মরিচের দাম

দৃশ্যমান স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু রেলসেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৩৮ এএম, ৭ মে ২০২৪ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

যমুনার বুকে পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো উত্তরাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে এ সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার পুরোই দৃশ্যমান হয়েছে। চলছে এডজাস্টমেন্টের কাজ। তবে উভয়পাশের স্টেশন নির্মাণ, স্লিপারবিহীন রেলপথ স্থাপনসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে।
রেলসেতুতে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণও শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরেই সেতুটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সোমবার (৬ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেনচার। ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেনচার। এ ছাড়া সেতুর উভয়প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের প্রায় কর্মীরা নিয়োজিত আছেন।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে যমুনার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এ সেতুটি ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্ত সূচিত করবে। ঢাকার সাথে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে সেটা আর থাকবে না। নির্মাণের পর সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহন খরচও। সেই সঙ্গে মহাসড়কের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে। উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন পণ্য সহজেই ঢাকাসহ সারা দেশ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।
বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল লি. এর সাব স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আলম বলেন, সেতুর ৫০টি পিলারের মধ্যে সবকটি বসানো হয়েছে। প্রতি দুটি পিলারের মাঝখানে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। সেতুর উপরে রেললাইন স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ডব্লিউডি-১ প্যাকেজে ২ হাজার ৯৭৯ ও ডব্লিউডি-টু প্যাকেজে ২ হাজার ৮৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু এডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। এলাইনমেন্ট ও লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেইনে কাজ, কালভার্টগুলো শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। ছোট ছোট কিছু পেরিমিটার ফেল্ট বাকি আছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।
১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে সিডিউল বিপর্যয়। বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।