ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১৬:৩৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

দেশে সিজারের মাধ্যমে শিশু জন্মের হার বেড়েছে

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৫০ পিএম, ২১ জুন ২০১৯ শুক্রবার

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা 'সেভ দ্য চিলড্রেন' বলছে বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, এতে বাবা-মায়েদের সন্তান জন্মদানে ব্যাপক পরিমাণে খরচের ভার বহন করতে হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  ২০১৮ সালে বাংলাদেশি বাবা-মায়েরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানে খরচ করেছেন প্রায় চার কোটি টাকার বেশি।

জনপ্রতি গড়ে তা ছিল ৫১ হাজার টাকার বেশি। সিজারিয়ানে সন্তান জন্মদানের হার বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে মারাত্মক হারে বেশি। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যত শিশু জন্ম নেয় তার ৮০ শতাংশই হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে।

সংস্থাটি আরও বলছে, ২০১৮ সালে যত সিজারিয়ান হয়েছে তার ৭৭ শতাংশই চিকিৎসাগতভাবে অপ্রয়োজনীয় ছিল। কিন্তু তারপরও এমন সিজারিয়ান হচ্ছে।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ৪ থেকে ৩১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেভ দ্য চিলড্রেন এমন অপ্রয়োজনীয়ে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ঠেকাতে ডাক্তারদের উপর নজরদারির পরামর্শ দিচ্ছে। এমন প্রবণতার জন্য সংস্থাটি আংশিকভাবে বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা খাতের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে।

সংস্থাটি বলছে কিছু অসাধু চিকিৎসক এর জন্য দায়ী, যাদের কাছে সিজারিয়ান একটি লাভজনক ব্যবসা।

বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং নবজাতক ও মাতৃ-স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ ইশতিয়াক মান্নান বলছেন, চিকিৎসক এবং চিকিৎসা সুবিধা আসলে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে না গিয়ে অস্ত্রোপচার করতে অনুপ্রাণিত করে।

ডঃ মান্নান আরও বলছেন, অস্ত্রোপচারের এই জনপ্রিয়তা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে দিনকে দিন মায়েরা আরও বেশি এই অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের দিকে ঝুঁকছেন।

শিশু জন্মে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের ফলে ইনফেকশন, মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অঙ্গহানি, জমাট রক্ত ইত্যাদির কারণে মায়েদের সুস্থতা ফিরে পেতে প্রাকৃতিক প্রসবের তুলনায় অনেক দীর্ঘ সময় লাগে। মা ও শিশু উভয়কেই এমন অস্ত্রোপচার ঝুঁকিতে ফেলে।

এছাড়া সিজারিয়ানের কারণে প্রাকৃতিক জন্মের লাভজনক দিকগুলোও নষ্ট হতে পারে। যেমন, শিশু মায়ের প্রসবের পথ দিয়ে যদি স্বাভাবিকভাবে বের হয় তাহলে তার শরীর কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া গ্রহণ করতে পারে। 

এসব ব্যাকটেরিয়া শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।অস্ত্রোপচারের ফলে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সে যেতে পারে না।

এছাড়া মায়ের বুকের দুধ পান করার জন্য মায়ের সাথে শিশুর যে শারীরিক নৈকট্যে আসা দরকার সিজারিয়ান হলে সেটি প্রয়োজনের তুলনায় দেরিতে ঘটে। কারণ মায়ের সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য শিশুকে তখন কিছু সময় দূরে রাখা হয়।

বাংলাদেশে এক সময় বাড়িতে ধাত্রীর কাছেই সন্তান জন্মদান স্বাভাবিক ছিল। বিভিন্ন জটিলতা ও মাতৃমৃত্যু কমাতে হাসপাতাল বা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসবকালে মায়েদের নিয়ে যাওয়ার জন্য এক পর্যায়ে প্রচারণা শুরু হয়।

কিন্তু তবুও প্রশিক্ষিত ধাত্রীর প্রয়োজন নিয়েও অনেকে মত প্রকাশ করেন। বিশ্বব্যাপী অনেক দেশেই হাসপাতালেই ধাত্রী নিয়োগের প্রথা রয়েছে।

যেখানে অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ ও পর্যবেক্ষণে ধাত্রীর দ্বারা শিশুর জন্ম হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রশিক্ষিত ধাত্রীর অভাব একটি বড় সমস্যা।

সেভ দ্য চিলড্রেনের হিসেবে, বাংলাদেশে বর্তমানে মাত্র ২৫০০ জন স্বীকৃত ধাত্রী রয়েছেন। তবে তাদের গবেষণা অনুযায়ী, দেশে ২২ হাজার মিডওয়াইফ প্রয়োজন।

সূত্র : বিবিসি বাংলা