দেশে ৯৭ শতাংশ যৌন অপরাধীই যে কারণে শাস্তি পায় না
অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০২:১৪ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার
দেশে ৯৭ শতাংশ যৌন অপরাধীই যে কারণে শাস্তি পায় না
সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনায় দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের এবং তাদের ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ ৯৭ শতাংশ অপরাধীই এখন বিভিন্ন উপায়ে এসব ঘটনা থেকে মুক্তি পেয়ে যায়।
তারা বলছেন, ২০ বছর বয়সী যুবক থেকে শুরু করে ৮০ বছর বয়সের বিকৃত পুরুষরা দায়মুক্তি, নৈতিক অবক্ষয় এবং রাজনৈতিক সমর্থনের সংস্কৃতির কারণে এই জাতীয় অপরাধে লিপ্ত হওয়ায় দেশটিতে যৌন হয়রানি সবচেয়ে বিপজ্জনক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। এছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দীর্ঘসূত্রীতা, দীর্ঘায়িত বিচার প্রক্রিয়া এবং পুলিশের ত্রুটিযুক্ত তদন্ত তো রয়েছেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিভাগের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শিপা হাফিজা এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেছেন, সিলেটে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নোয়াখালীতে যৌন হয়রানির সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর দ্রুত সমাধানে সরকারের এখনই পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী- চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৭৫ নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০৮ জনকে গণধর্ষণ করা হয়। এর মধ্যে ধর্ষণের পরে ৪৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং অন্য ১২ জন আত্মহত্যা করেছে।
এছাড়াও, মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনটি বলছে, ১৬১ জন নারীকে যৌন হয়রানি করা হয়ে এবং তাদের মধ্যে ১২ জন আত্মহত্যা করেছেন।
আসক আরও বলছে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় তিনজন নারী ও নয়জন পুরুষকে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া ৬২৭টি শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং ২০ জন ছেলেকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে এবং ২১ জন নারী অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হয়েছে।
‘রাষ্ট্রের উদাসীনতা’
শিপা হাফিজ বলেন, দায়মুক্তির সংস্কৃতি এবং রাষ্ট্রের উদাসীনতার জন্য ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ধীরে ধীরে বাড়ছে।
তিনি বলেন, এই জাতীয় ঘটনা বাড়ার পেছনে কারণ হলো অপরাধীরা মনে করে তারা শাস্তি পাবে না।
‘আমি মনে করি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানিকে রাষ্ট্র গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছে না। রাজনীতিবিদরা এখনও বলছেন না যে তারা এ জাতীয় বর্বরতার জন্য লজ্জিত এবং ক্ষতিগ্রস্থদের বিচারের আশ্বাস দিচ্ছে না। ১৫০ বছরের পুরনো আইন দিয়ে ধর্ষণকারীদের যথাযথভাবে শাস্তি দেয়া যাবে না,’ বলেন তিনি।
এ জাতীয় সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি বলেন, আইনটি সংশোধন করে এটিকে সময়োপযোগী করতে হবে এবং এটি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
শিপা বলেন, ধর্ষণের শিকার ও যৌন হয়রানির শিকারদের প্রতি পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা উচিত এবং থানায় নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা দরকার।
‘যখনই ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে কেউ পুলিশের কাছে যান, বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি এবং অযাচিতভাবে বিভিন্ন প্রশ্ন করে তাকে আবার হয়রানি করা হচ্ছে। এ কারণে অনেক ভুক্তভোগী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশের কাছে যেতে উত্সাহিত হন না,’ তিনি উল্লেখ করেন।
মানবাধিকার কর্মী বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো সর্বদা ধর্ষণকারীদের তাদের দল থেকে বহিষ্কার করে দায় এড়াতে চেষ্টা করে। এবং তাদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে। ‘আমরা এখন বেশিরভাগ ঘটনা দেখছি ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা জড়িত তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এর বিরুদ্ধে যথেষ্ট সোচ্চার নন এবং তাদের অনুসারীদের এ ধরনের অমানবিক কাজ থেকে দূরে রাখতে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে।’
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উপর জোর দেয়া
ফারাহ কবির বলেছেন, পুরুষ-অধ্যুষিত সমাজ, পরিবার, বিচার বিভাগ এবং রাজনীতিবিদরা নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের মতো
অমানবিক কাজ বন্ধ করতে আন্তরিক নন।
‘ধর্ষণকারীদের শাস্তি দেয়ার কোনো গ্যারান্টি আছে কি? রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার এবং রাজনীতিবিদরা ধর্ষকদের রক্ষা করবে না তার কোনো গ্যারান্টি আছে কি? যদি ধর্ষকদের শাস্তি না দিয়ে রাজনীতিবিদ, পুলিশ ও তাদের পরিবার তাদের আশ্রয় দেয় তাহলে কীভাবে আমরা ধর্ষণ নিয়ন্ত্রণ করবো,’ বলেন তিনি।
‘ধর্ষণের ঘটনা পৃথিবীর সর্বত্রই ঘটে,’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তার সাম্প্রতিক মন্তব্যের জন্য ফারাহ সমালোচনা করেন এবং বলেন, তার দায়িত্ব এড়াতে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
‘এই মারাত্মক সমস্যা সমাধানে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি। আমাদের প্রশাসন কোথায়, আইনের শাসন, নৈতিকতা,
সামাজিক, পরিবার ও ধর্মীয় শিক্ষা? হামলাকারীরা তাই মরিয়া হয়ে গেছে এবং তারা নিজেরাই তাদের জঘন্য ভিডিও পোস্ট করছে। তারা
কীভাবে এই কাজ করার সাহস করে? নারীদের সুরক্ষা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই এটি সম্পর্কে ভাবতে হবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’
দুর্বল ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা
জিয়াউর রহমান বলেন, যৌন হয়রানি রুখতে ব্যর্থতা, মাদকের অপব্যবহার বৃদ্ধি এবং পর্নোগ্রাফি, নারীদের প্রতি পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব এবং খুব দুর্বল ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা দেশে নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
‘আমাদের বিদ্যমান আইনী ব্যবস্থাটি এত দুর্বল যে মাত্র তিন শতাংশ অপরাধী ধর্ষণ এবং অন্যান্য যৌন সহিংসতায় লিপ্ত হওয়ায় শাস্তি পাচ্ছেন এবং বাকি ৯৭ শতাংশ বিভিন্ন উপায়ে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছেন,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারীদের ত্রুটিযুক্তভাবে মামলা পরিচালনা এবং ঘুষ নিয়ে অপরাধিকে ছেড়ে দেয়ার ইতিহাস রয়েছে।
আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো দেশজুড়ে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে খুবই কম,’ বলেন জিয়াউর রহমান।
সূত্র: ইউএনবি
- ভারতে হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়!
- তানজানিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ১৫৫ জনের মৃত্যু
- নতুন করে বেড়েছে সবজি-মাংসের দাম
- এক মিনিটের জন্য শেষ বিসিএসের স্বপ্ন, হাউমাউ করে কান্না
- ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বিদ্যা বালানের বিস্ফোরক মন্তব্য
- তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে
- থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
- চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই
- ‘হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে দিনে লক্ষাধিক মুরগি’
- ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু
- গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
- অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা উধাও, গ্রেপ্তার ৩
- হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
- থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ
- ভৈরবে বোরো ধানের বাম্পার ফলন
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- ২৯ ফেব্রুয়ারি বা লিপ ইয়ার নিয়ে ১০টি মজার তথ্য
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- গুলবদন বেগম: এক মুঘল শাহজাদির সাহসী সমুদ্রযাত্রার গল্প
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- দিনাজপুরে ব্যাপক পরিসরে শিম চাষের লক্ষ্য
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- জিমন্যাস্টিকসে শিশু-কিশোরদের উৎসবমুখর দিন
- কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার নেতৃত্বে সাজ্জাদ-মোশাররফ-শরীফ