পাখি রক্ষায় প্রয়োজন সচেতনতা ও মানবিকতাবোধ
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:২৮ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সোমবার
ছবি নেট থেকে।
সেই ছোটবেলা থেকেই পাখিদের প্রতি আমার বিশেষ এক ধরনের প্রীতি আছে। আমি তাদের ভীষণ ভালোবাসি। কি এক অদ্ভুত আকর্ষণ বোধ করি তাদের জন্য। এক কথায় বলা যায় পাখি আমার প্রথম প্রেম। সব সময়ই তাদের নানাভাবে বুঝতে চেষ্টা করি, জানতে চেষ্টা করি। তাদের আচার-আচরণ-গতিবিধি আর জীবনযাপন প্রণালী লক্ষ্য করে কেটে যায় আমার দিনের পর দিন। এই নেশা থেকেই আমরা কয়েকজন পাখিপ্রেমী বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছি ‘বাংলাদেশ বার্ড ওয়াচার সোসাইটি’ নামে একটি সৌখিন সংগঠন। অফিসের কাজের ফাঁকে ছুটি পেলেই আমরা চলে যাই ঢাকার বাইরে শুধুমাত্র নতুন নতুন পাখি আবিষ্কারের নেশায়। স্কুল-কলেজের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে ছুটে যাই চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন আমরা চলে যাই ঢাকা শহরের আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে। পাখি দেখে দেখে আর তাদের ছবি তুলে কাটিয়ে দেই সারা দিন।
পাখির দেশ বাংলাদেশ। এখনও আমাদের দেশে নানা ধরণের প্রচুর পাখি দেখতে পাওয়া যায়। আজ অবদি বাংলাদেশের পাখির তালিকায় মোট ৭৪৪টি পাখি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ সমস্ত পাখির মধ্যে গত দুই শতকে বাংলাদেশে ছিল কিন্তু এখন নেই এবং বর্তমানে আছে এমন পাখিও অন্তর্ভুক্ত। এমন পাখির সংখ্যা মোট ৬৫০টি। এ ৬৫০টি পাখির মধ্যে ৩০টি বাংলাদেশে বর্তমানে বিলুপ্ত, অতীতে বাংলাদেশে ছিল। ৩০টি পাখির মধ্যে ২৯টি অন্য দেশে পাওয়া গেলেও একটি- গোলাপীশির হাঁস, সম্ভবত সারা পৃথিবীতেই বিলুপ্ত। অবশিষ্ট ৬২০টি প্রজাতির পাখি সাম্প্রতিককালে এদেশে দেখা গেছে এবং এরা বাংলাদেশে থাকে বা আসে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এই ৬২০টি প্রজাতির মধ্যে ১৪৩টি প্রজাতির পাখি বাংলাদেশে 'অনিয়মিত' আখ্যায়িত হয়েছে, কারণ কালেভদ্রে এদের দেখা যায়। বাকি ৪৭৭ প্রজাতির পাখি বাংলাদেশে নিয়মিত দেখা যায়। এই ৪৭৭ প্রজাতির মধ্যে ৩০১টি বাংলাদেশের 'আবাসিক' পাখি যেগুলো স্থায়ীভাবে এ দেশে বাস করে। বাকি ১৭৬টি বাংলাদেশের 'পরিযায়ী' পাখি যেগুলো খণ্ডকালের জন্য নিয়মিতভাবে এ দেশে থাকে। এই ১৭৬ প্রজাতির নিয়মিত আগন্তুকের মধ্যে ১৬০টি শীতে এবং ৬টি গ্রীষ্মে বাংলাদেশে থাকে; বাকি ১০টি বসন্তে এদেশে থাকে যাদেরকে 'পান্থ-পরিযায়ী' নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
৭৪৪টি পাখির মধ্যে বাকি রইল ১৯৪টি পাখি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লেখক বাংলাদেশে এ সব পাখির অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে অনুমান করেছেন। কিন্তু কোন অকাট্য প্রমাণ দেখাতে পারেননি বা পরবর্তীতে এদের এ অঞ্চলে কখনো দেখা যায় নি। এসব পাখিকেও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
লক্ষ্য করেছি সমাজের অধিকাংশ মানুষেরই আমাদের চারপাশের পাখি বা প্রাণীকুলের দিকে তাকিয়ে দেখার সময় বা মানসিকতা নেই। আমাদের প্রতিদিনের সঙ্গী কাক-চড়াই-চিল-শালিককেও আমরা ভালো করে চিনি না বা চিনতে চেষ্টা করি না। অথচ বন্দুক দিয়ে বা ফাঁদ পেতে তাদের হত্যা করি অবাধে। কিন্তু মানুষ হিসেবে আমরা এই প্রাণীদের সঙ্গে যা ইচ্ছে তা-ই ব্যবহার করতে পারি না, এই জ্ঞানটুকু আমাদের আজ খুব দ্রুত অর্জন করা দরকার। বর্তমানে দেশের সরকার সামান্য সচেতনতার পরিচয় দিয়ে যে ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা করছে তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের সার্বিক সহযোগিতা না থাকলে পশু-পাখি সংরক্ষণ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
পাখির দেশ বাংলাদেশ। এ দেশের সব জায়গাতেই এখনো প্রচুর পরিমাণে পাখি আছে। যেখানেই সামান্য গাছ-গাছালি বা ঝোপ-ঝাড় আছে, আছে বাগান সেখানেই এসব পাখিরা ভিড় জমায়। নীড় তৈরি করে বাঁচতে চায়। তাদের যত্ন নেয়ার দায়িত্ব আমাদেরই। সব প্রাণীর মধ্যে পাখিরাই মানুষের সবচেয়ে কাছে থাকে। তাই আমরাই পারি তাদের বেঁচে থাকার মতো পরিবেশ তৈরি করে দিতে।
বর্তমানে বিভিন্ন সুউচ্চ ইমারত, ইকো পার্ক, বাঁধ, প্রকল্প তৈরির নামে আমরা পাখিদের আবাসস্থল নষ্ট করে ফেলছি। তার ওপর সাধারণ মানুষের পশু পাখি সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা না থাকলে এসব প্রাণীদের আমরা চিরদিনের জন্য হারাবো। কাক থেকে শুরু করে সব পাখিই পরিবেশের জন্য উপকারী। তাই ওদের বুকে বন্দুক না চালিয়ে আমরা আমাদের ভালোবাসার হাত প্রসারিত করতে পারি। ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই প্রকৃতিতে ওদের থাকা বড় দরকার।
দুঃখজন হলেও সত্যি দেশে মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন পাখি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। বিপ্রদাস বড়ুয়া, ড. আলী রেজা খান, শরীফ খান, ইনাম আল হক, সাজাহান সরদার প্রমুখ পাখিবিদরা পাখি পর্যবেক্ষণ করছেন। পাখি নিয়ে ভাবছেন। পাখিদের বংশ বৃদ্ধি ও হারিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। পাখি পরিচিতি ছাড়াও এ বিষয়ে নানারকম প্রবন্ধ-নিবন্ধ পত্রিকায় লিখে সাধারণ মানুষকে তথা সমাজকে পাখি বিষয়ে যত্নবান হতে সচেতন করতে চেষ্টা করছেন।
এই হাতেগোনা কয়েকজন বর্ষীয়ান পাখি বিশেষজ্ঞ ছাড়া তরুণদের মধ্য থেকে এ ধরনের সচেতন পাখিবিদ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এই স্থানটিতে এক ধরনের শূন্যতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে সারা দেশে নিশ্চয় তরুণ বা নতুন প্রজন্মের পাখি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন যাদের কথা আমার বা আমাদের জানা নেই। তারা নিশ্চয় নিভৃতে থেকে পাখি চর্চা করছেন। এটাই আশার কথা।
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির অনেক পাখি থাকলেও সে হিসেবে বাংলা বইয়ের সংখ্যাও নিতান্তই কম। বাজারে খুঁজলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত বই পাওয়া কষ্টসাধ্য। বিদেশী লেখকদের ইংরেজি বই কিছু পাওয়া গেলেও তাতে আমাদের দেশের পাখি সম্পর্কে থাকে না। আবার থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। তাই আমদের দেশের সব পাখি সম্বন্ধে তথ্যভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত একটি বিশাল বাংলা বই প্রকাশিত হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। এতে প্রাণীবিদ্যার ছাত্রছাত্রীরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি উপকৃত হবে পাখি অনুসন্ধিৎসুরাও। আর বাংলা সাহিত্যও হবে সমৃদ্ধশালী। নিশ্চয় অদূর ভবিষ্যতে কোনো বিশেষজ্ঞ এই কাজটি করে আমাদের ঋণী করবেন।
- ভারতে হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়!
- তানজানিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ১৫৫ জনের মৃত্যু
- নতুন করে বেড়েছে সবজি-মাংসের দাম
- এক মিনিটের জন্য শেষ বিসিএসের স্বপ্ন, হাউমাউ করে কান্না
- ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বিদ্যা বালানের বিস্ফোরক মন্তব্য
- তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়াবে আগামী সপ্তাহে
- থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
- চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই
- ‘হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে দিনে লক্ষাধিক মুরগি’
- ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু
- গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
- অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা উধাও, গ্রেপ্তার ৩
- হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
- থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ
- ভৈরবে বোরো ধানের বাম্পার ফলন
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- ২৯ ফেব্রুয়ারি বা লিপ ইয়ার নিয়ে ১০টি মজার তথ্য
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- গুলবদন বেগম: এক মুঘল শাহজাদির সাহসী সমুদ্রযাত্রার গল্প
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- দিনাজপুরে ব্যাপক পরিসরে শিম চাষের লক্ষ্য
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- জিমন্যাস্টিকসে শিশু-কিশোরদের উৎসবমুখর দিন
- কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার নেতৃত্বে সাজ্জাদ-মোশাররফ-শরীফ