ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৫, এপ্রিল ২০২৪ ২০:১০:৫৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

১৪ মাস পর মুক্তি পেলেন মেহবুবা মুফতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১৩ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২০ বুধবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

এক বছরেরও বেশি সময় গৃহবন্দি থাকার পর মঙ্গলবার মুক্তি পেলেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতি। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। মেহবুবার মুক্তির বিষয়টি টুইট করে জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর সরকারের মুখপাত্র রোহিত কানসাল।

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর ২০১৯-এর ৫ অগস্টে জম্মু-কাশ্মীরে র তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতি-সহ কাশ্মীরের বহু রাজনীতিককে আটক করে কেন্দ্র। এ বছরের গোড়াতে ওমর, ফারুখ-সহ কয়েক জনকে মুক্তি দেওয়া হলেও মেহবুবাকে গৃহবন্দি করেই রাখা হয়। বার বার নানা অছিলায় তাঁর গৃহবন্দির সময়কাল বাড়ানো হয় বলে অভিযোগ। গত জুলাইয়ে তিন মাসের জন্য মেহবুবার গৃহবন্দির সময়কাল বাড়িয়েছিল প্রশাসন।

৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর মেহবুবাকে প্রথমে দু’টি সরকারি বাসস্থানে আট মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়। তার পর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে ফের আটক করা হয় জন নিরাপত্তা আইনে। পর তাঁর বাসভবন ‘ফেয়ার ভিউ’য়ে স্থানান্তরিত করা হয় মেহবুবাকে। সেই বাসভবনকে অস্থায়ী জেলে পরিণত করা হয় এবং সেখানেই গৃহবন্দি করে রাখা হয় পিডিপি নেত্রীকে।

মেহবুবাকে কোন যুক্তিতে আটকে রাখা হয়েছে তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন তাঁর মেয়ে ইলতিজা মুফতি। সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন ইলতিজা। গত সেপ্টেম্বরে সেই মামলার শুনানি ছিল। তখন আদালত সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল কত দিন মেহবুবাকে তাদের হেফাজতে রাখবে। এ বিষয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে সরকারের জবাবদিহি চেয়েছিল আদালত। তার পরই এ দিন মুক্তি দেওয়া হয় মেহবুবাকে।

মেহবুবার মুক্তিতে টুইট করেছেন ওমর আবদুল্লা। তিনি লেখেন, ‘এক বছরেরও বেশি সময় আটক থাকার পর মেহবুবাকে যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তাতে আমি খুশি। অন্যায় ভাবে তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছিল। যা গণতন্ত্র বিরোধী।’

দিন কয়েক আগেই সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করেছিল, আর কতদিন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে বন্দি করে রাখা হবে? সর্বোচ্চ আদালতের এই প্রশ্নের পর মঙ্গলবার মুক্তি দেয়া হলো পিডিপি নেতা মেহবুবা মুফতিকে। জম্মু ও কাশ্মীরে গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন মেহবুবা। সেই মেহবুবাকেই ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর আটক করা হয়।

মুক্তি পাওয়ার পর মেহবুবাও একটি অডিও বার্তা টুইট করেন। তিনি বলেছেন, ”এক বছরেরও বেশি সময় পরে আমি মুক্তি পেলাম। ২০১৯ সালের ৪ অগাস্টের পর থেকে কাশ্মীরে কালো দিন চলছে, যা আমার আত্মাকে প্রতিনিয়ত লাঞ্ছনা করছে। আমার বিশ্বাস জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষও একই রকম ভাবছেন। ওই দিন আমাদের যে অপমান করা হয়েছে তা ভুলতে পারব না।” ২০১৯-এর ৫ অগাস্ট কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ হয়, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়।

মেহবুবা বলেছেন, ”আমাদের মনে রাখতে হবে, দিল্লি দরবার বেআইনি ও অগণতান্ত্রিকভাবে আমাদের কাছ থেকে অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। কাশ্মীর ইস্যুতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। কাশ্মীরের জেলে বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”

এর আগে দীর্ঘদিন আটক থাকার পর ফারুখ আবদুল্লাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। মুক্তি পেয়েছেন তাঁর ছেলে এবং জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তারপরেও মেহবুবাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। তঁর মেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই সর্বোচ্চ আদালত জানতে চায়, আর কতদিন মেহবুবাকে আটক করে রাখা হবে? সুপ্রিম কোর্টে সেই জবাবদিহি করতে হতো জম্মু ও কাশ্মীর এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে। তার আগেই তাঁকে মুক্তি দেয়া হলো।

কাশ্মীর এখনো অশান্ত। মাঝে মাঝেই সেখানে হামলা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও বিজেপি নেতারা আক্রান্ত হচ্ছেন। এখনো শ্রীনগর সহ কাশ্মীরের অন্যত্র প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা আছে। মোবাইল পরিষেবা চালু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু একটি জেলা বাদে বাকি সব জায়গায় ২জি পরিষেবা দেয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে মেহবুবাকে মুক্তি দিতে কার্যত বাধ্য হলো কেন্দ্র এবং জম্মু ও কাশ্মীর সরকার।

-জেডসি