ঢাকা, শুক্রবার ২৬, এপ্রিল ২০২৪ ৮:৫১:৪৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিল সিনেটে পাস

কোটি টাকা মূল্যের তক্ষকসহ এক পাচারকারী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৪৭ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৯ শুক্রবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

কোটি টাকা মূল্যের তক্ষকসহ  আঙ্গুর মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরের কলেজ মোড় থেকে তাকে আটক করা হয়। ৪৫ বছর বয়সী আঙ্গুর মিয়া নাসিরনগর উপজেলার ধনকুড়া এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, আঙ্গুর মিয়া হবিগঞ্জের মাধবপুরের তেলিয়াপাড়া থেকে ৭৫ হাজার টাকায় তক্ষকটি কিনে কোটি টাকায় বিক্রির উদ্দেশে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছে। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে আটক করে।

নাসিরনগর থানার এএসআই রিপন চক্রবর্তী জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা দিয়ে আটককৃত আঙ্গুর মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তক্ষক কি? আর কেনই বা একটি তক্ষক কোটি টাকায় বিক্রি হয়?

বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী তক্ষক। নানা কারণেই এই বিরল বন্যপ্রাণীটির দাম আকাশছোয়া। আর তাই বিরল এই বন্যপ্রাণীটি রয়েছে পাচারকারীদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে।

বিএসএফের গোয়েন্দাবাহিনী ও বনদপ্তর জানায়, পশ্চিমবঙ্গের মালদহকে করিডর বানিয়ে বাংলাদেশ থেকে চীন, সিঙ্গাপুর চলে যাচ্ছে তক্ষক। ডুয়ার্স তথা উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে কড়াকড়ির জেরে মালদহকে গ্রিন করিডর বানিয়ে কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা করছে তক্ষক পাচারকারীরা।

এসব পাচারকারীদের আটকে অভিযান চালানো হচ্ছে। আটকও হচ্ছে দু’একজন। সেই সাথে পাচারকারীরা প্রতিনিয়ত তাদের পাচারের কৌশল পাল্টাচ্ছে। নতুন নতুন কৌশল বেছে নিচ্ছে বলেও বিএসএফের গোয়েন্দাবাহিনী ও বনদপ্তরের কর্মকর্তার।

চীনের পরম্পরাগত ওষুধ নির্মাতাদের বিশ্বাস, তক্ষকের শরীরে চিরযৌবন এবং প্রজনন শক্তিবর্ধক ক্ষমতা থাকে। সে কারণেই গ্রামবাংলার জঙ্গলে টিকিটিকির মতো প্রাণীটি কোটি কোটি টাকায় চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। প্রায় একই কারণে ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে কচ্ছপের হাড় বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে। বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর দেহাংশ পাচারে মালদহ করিডর হয়ে ওঠায় বিএসএফ এবং বনদপ্তরের কর্তারা যথেষ্টই উদ্বিগ্ন।

বিএসএফের আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) বলেন, প্রাণীপাচার ঠেকাতে বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে। বনদপ্তর ও একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

টিকিটিকির মতো ছোট প্রাণীটি রংবেরঙের হয়ে থাকে। অসমিয়া ভাষায় একে তক্ষক বলা হয়। বাংলাতেও সেই নামে পরিচিত। একে ঘিরে চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর সহ বেশকিছু দেশে অদ্ভুত রহস্যময় কিছু বিশ্বাস জড়িয়ে আছে। চীন দেশে মনে করা হয় তক্ষক ড্রাগন থেকে উৎপন্ন হয়েছে। তাই এতে চিরযৌবন ও প্রজনন ক্ষমতাবর্ধক শক্তি থাকে। চীনের পরাম্পরা চিকিৎসা ব্যবস্থায় তাই তক্ষককে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

জিনসেং নামে একটি ঔষধি গাছের সঙ্গে তক্ষককে জুস করে খাওয়া হয়। এই বিশ্বাসের জেরে চীন, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে একেকটি পূর্ণবয়স্ক তক্ষক কোটি টাকায় বিক্রি হয়। ডুয়ার্স, আসামের জঙ্গল থেকে এই প্রাণী পাচারে কড়াকড়ি তৈরি হওয়ায় এবার পাচারকারীদের নজর বাংলাদেশের জঙ্গলের দিকে পড়েছে। বাংলার জঙ্গলেও এই তক্ষক প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। সেখান থেকেই এই তক্ষক সংগ্রহ করে মালদহকে করিডর করে চীনে পাঠিয়ে দিচ্ছে পাচারকারীরা।

সম্প্রতি মালদহে দু’টি ঘটনায় পাঁচটি পূর্ণবয়স্ক তক্ষক বিএসএফ এবং বনদপ্তরের যৌথ অভিযানে ধরা পড়ে। তারপরেই তদন্তে উঠে আসে নতুন করিডরের তথ্য। বাংলাদেশ থেকে কালিয়াচক, হবিবপুর, পুরাতন মালদহের সীমানা দিয়ে তক্ষক মালদহে চলে আসছে। তারপর ট্রেন বা সড়ক পথে কলকাতা হয়ে চীনে সেগুলি পাড়ি দিচ্ছে।

-জেডসি