ঢাকা, শুক্রবার ০৩, মে ২০২৪ ২১:৩২:৫১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করুক: প্রধানমন্ত্রী সবজির বাজারে স্বস্তি নেই যুদ্ধকে ‘না’ বলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছি ভারী বর্ষণে মহাসড়কে ধস, চীনে ২৪ প্রাণহানি রাজবাড়ীতে ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ

পাগলা মসজিদে মিলল ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১৩ এএম, ২১ এপ্রিল ২০২৪ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে দানবাক্স থেকে পাওয়া ২৭ বস্তা টাকার গণনা শেষ হয়েছে ১৮ ঘণ্টায়। গণনা শেষে পাওয়া গেছে রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা। এছাড়া অনেক স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রাও মিলেছে দানবাক্স থেকে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে সেগুলো মসজিদের দোতলায় গণনার জন্য নেওয়া হয়। ২২০ জন মিলে দিনভর টাকা গুণে শেষ করেন রাত ২টার দিকে। কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এবার ৪ মাস ১০ দিন পর মসজিদের নয়টি দানবাক্স ও একটি ট্যাঙ্ক খোলা হয়। এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২৩টি বস্তায় রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লক্ষ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল।

এর আগে গত বছরের ১৯ আগস্ট খোলা হয়েছিল এ মসজিদের ৮টি দানবাক্স। তখন রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সেবার সাড়ে ১৩ ঘণ্টায় ২০০ জনেরও বেশি লোক গণনা শেষে রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পান। এছাড়া একটি ডায়মন্ডের নাকফুলসহ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া যায়।

জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। টাকা গণনার কাজে কিশোরগঞ্জের জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর শেখ জাবের আহমেদ, সহকারী কমিশনার রওশন কবীর, মাহমুদুল হাসান, সামিউল ইসলাম, আজিজা বেগম, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা মো. আনোয়ার পারভেজসহ মাদ্রাসার ১১২ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নেন।

লোকজনের বিশ্বাস, এ মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ মসজিদে দান করে থাকেন।


জনশ্রুতি আছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। পাগল সাধকের মৃত্যুর পর স্থানটি পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ মানত নিয়ে আসেন এ মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এমনকি বৈদেশিক মুদ্রাও দান করেন।

বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে। আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন মসজিদে। আর এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।

বর্তমানে কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর মসজিদটি গড়ে উঠলেও বর্তমানে মসজিদ কমপ্লেক্সটি ৩ একর ৮৮ শতাংশ জায়গা নিয়ে স্থাপিত হয়েছে। মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি এবং ঐতিহাসিক মূল্যও।

মসজিদটির দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। যার নামকরণ হয়েছে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। ৩০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন নতুন কমপ্লেক্সে।