কাল সাকরাইন, পুরান ঢাকায় চলছে পূর্বপ্রস্তুতি
অণিমা মিত্র | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০২:৪৯ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার
কাল সাকরাইন, পুরান ঢাকায় চলছে পূর্বপ্রস্তুতি
আগামীকাল বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী ‘সাকরাইন’ উৎসব। ‘পৌষসংক্রান্তি’র দিনটি ‘সংক্রান্তি’ নামেও পরিচিত। মূলত সংক্রান্তি শব্দই লোকমুখে সাকরাইন হয়ে গেছে। এ দিনটিতে গান-বাজনা, বোম ফুটানো ও ঘুড়ি উড়ানোর মধ্য দিয়ে শুরু হবে প্রথম প্রহর। সন্ধ্যা হতেই আতশবাজির আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে পুরান ঢাকার নীল আকাশ।
পুরান ঢাকায় দিনটির অন্যতম অনুষঙ্গ ঘুড়ি ওড়ানো বা ঘুড়ি উৎসব। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দক্ষিণ সিটির আকাশ রাঙাতে প্রথমবারের মতো সাকরাইন তথা ঘুড়ি উৎসব আয়োজন করতে যাচ্ছে।
ইতিহাস বলছে, পুরান ঢাকায় এই উৎসব হচ্ছে প্রায় ৪০০ বছর ধরে। পুরনো ঢাকায় ঘুড়ি ওড়ানো বিনোদন শুরু হয়েছিল মুঘল আমলে। ১৭৪০ সালে নবাব নাজিম মহম্মদ খাঁ এই ঘুড়ি উৎসবের সূচনা করেন, সেই থেকে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। আদি ঢাকাইয়াদের ঐতিহ্যের সাকরাইন উৎসব।
প্রতি বছর ১৪ জানুয়ারি সাকারাইন উৎসব পালিত হয়। সকাল থেকে গান বাজনার তালে তালে শুরু হয় ঘুড়ি ওড়ানোর উন্মাদনা। ফুটতে থাকে নানা রকম বোম। নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবার অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠে প্রতিটি বাড়ির ছাদ, চলছে ঘুড়ির সাম্যবাদ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে উৎসবের মুখরতা। বাড়ে আকাশে ঘুড়ির সংখ্যাও।
এই দিন পুরান ঢাকার রূপলাল দাস লেন, শ্যাম বাজার, গেণ্ডারিয়া, মুরগীটোলা, ধূপখোলা, দয়াগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, সূত্রাপুর, কাগজিটোলা, বাংলাবাজার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, কলতাবাজার, ধোলাই খাল, শাঁখারি বাজার, রায়সাহেব বাজার, তাঁতী বাজার, সদরঘাট এবং লালবাগসহ প্রায় সব এলাকার মানুষ এ উৎসবে দিনব্যাপী ঘুড়ি উড়ান। আয়োজন করেন নানা খাবারের। এছাড়া সন্ধ্যায় আগুন নিয়ে খেলা, আতশবাজী ফোটানো এ উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ।
দিনটিতে পুরান ঢাকার আকাশে শোভা পায় নানা রং আর বাহারি আকৃতির ঘুড়ি। এছাড়াও আগুন নিয়ে খেলা, আতশবাজি ফোটানো এ উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ। তবে সকালের তুলনায় বিকালে এ উৎসব বেশি মুখরিত হয়।
সাকরাইন উৎসব বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন বিখ্যাত এবং গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক উৎসব। এটি বাংলাদেশের পুরানো ঢাকার বৃহত্তম উৎসব। সাক্রাইন উৎসবকে বাংলাদেশে পৌষ সংক্রান্তি উৎসব বলা হয়। এ উৎসবে অংশ নেন সব ধর্ম, পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
সাকরাইন, নাকি পৌষ সংক্রান্তি, নাকি মকর সংক্রান্তি! এই সংক্রান্তি আর সাকরাইন নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। মূল উৎসবটি মকর সংক্রান্তি হলেও স্থানভেদে এর নামে রকমফের হয়। তবে আধুনিক সময়ের ঢাকা শহরে পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তির চেয়ে সাকরাইন নামটিই অধিক প্রচলিত।
যদিও এই সাকরাইন শব্দটি নানা পথ পরিক্রমায় সংস্কৃত শব্দ সংক্রন থেকে এসেছে। আর এই সংক্রনের আভিধানিক অর্থ হলো ‘বিশেষ মুহূর্ত’, অর্থাৎ বিশেষ মুহূর্তকে সামনে রেখে যে উৎসব পালিত হয় তাকেই বলা হচ্ছে সাকরাইন উৎসব। পুরো উৎসবের সবকিছুতেই থাকে তাই বিশেষ মুহূর্তের ছোয়া।
ভারতে পৌষ সংক্রান্তি নামে, নেপালে মাঘী নামে, থাইল্যান্ডে সংক্রান, লাওসে পি মা লাও, মিয়ানমারে থিং ইয়ান এবং কম্বোডিয়ায় মহাসংক্রান নামে পরিচিত।
মকরসংক্রান্তি হলো সেই ক্ষণ যাকে ঘিরে এ উৎসব পালিত হয়। প্রাচীনকাল থেকেই এ উৎসব চলে আসছে। তবে সুস্পষ্টভাবে এর কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। ধারণা করা হয় এটা হাজার বছরের উৎসব বা তারও আগের। পুরাণের মধ্যেও এর উল্লেখ রযেছে। তবে এটা ঠিক যে বাঙ্গালির সঙ্গে এই উৎসবের সম্পর্ক অতি প্রাচীন।
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, মকর সংক্রান্তির এ মহাতিথিতেই মহাভারতের পিতামহ ভীষ্ম শরশয্যায় ইচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করেছিলেন। আবার অন্য মত অনুযায়ী, এ দিনই দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের যুদ্ধ শেষ হয়েছিল। বিষ্ণুদেব অসুরদের বধ করে তাদের কাটা মাথা মন্দিরা পর্বতে পুঁতে দিয়েছিলেন। তাই মকর সংক্রান্তির দিনই সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাষ হয়ে শুভশক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
আবার এও বলা হয়ে থাকে, সূর্য এ দিন নিজের ছেলে মকর রাশির দেবতা শনির বাড়ি এক মাসের জন্য ঘুরতে গিয়েছিলেন। তাই এই দিনটিকে বাবা ছেলের সম্পর্কের একটি বিশেষ দিন হিসাবেও ধরা হয়। এই সাকরাইন উৎসব নিয়ে বাংলাদেশের পুরাণ ঢাকাতে আয়োজনের কমতি নেই।
বর্তমান ঢাকার পুরান অংশ বছরের এই একটি দিনে বর্ণিল সাজে সেজে ওঠে। ধর্ম-বর্ণ ভুলে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বেশ আড়ম্বরের মাধ্যমেই পালিত হয় উৎসবটি।
নিয়মতান্ত্রিক পূজা-পার্বনতো আছেই, সঙ্গে আছে বিভিন্ন উপাদানে তৈরি নানা পদের খাবার। সেই ভোর সকাল থেকে শুরু হয়ে অনেক রাত অবধি সকল আত্মীয় স্বজনের অংশগ্রহণে পালিত হওয়া সাকরাইন আজ ধর্মীয় গণ্ডি পেড়িয়ে সকলের। তাই এই দিনটিতে পুরান ঢাকায় গেলে বোঝার কোনো উপায় থাকে না যে, এটা মকর সংক্রান্তি নাকি সকলের অংশগ্রহণমূলক কোনো অনুষ্ঠান।
পৌষের শেষ দিনে পুরান ঢাকার আকাশ থাকে ঘুড়িদের দখলে। আকাশ জুড়ে থাকে নানা রং আর বাহারের ঘুড়িদের দৌরাত্ম। এক সপ্তাহ ধরে পুরান ঢাকার অধিকাংশ অলিগলি আর খোলা ছাদে চলতে থাকে ঘুড়ির সুতা মাঞ্জা দেওয়ার ধুম। রোদে সুতা শুকানোর কাজও চলে পুরোদমে। যদিও এখন আর মানুষ কষ্টসাধ্য মাঞ্জা দিতে চায় না কারণ সেই মাঞ্জা দেয়া সুতার জায়গা দখল করে নিচ্ছে রক সূতা নামের এক ধরনের সূতা।
শীতের উদাস দুপুর আর নরম বিকেলের আকাশে উড়ানো হয় নানা রঙের ঘুড়ি। ঘুড়িতে ঘুড়িতে হৃদ্যতামূলক কাটা-কাটির খেলাও চলে, আর সেই খেলায় কাটা যাওয়া ঘুড়ি ধরতে অলিতে গলিতে শিশুদের ‘বাকাট্টা’ শব্দের মহরা চলে অবিরত। অহরহ কাটা-কাটির খেলায় হেরে যাওয়া অভিমানী ঘুড়ি সুতার বাধন ছিঁড়ে কোন দূরে হারিয়ে যায় তা কে বলতে পারে।
পুরান ঢাকার মানুষ দিনব্যাপী ঘুড়ি উড়ায়। সেই সঙ্গে থাকে নানা খাবারের আয়োজন। সন্ধ্যায় থাকে আগুন নিয়ে খেলা ও বাহারি আতশবাজি। আর ঐতিহ্যবাহী দিনকে উদযাপন করতে পর্যটকদের ঢল নামে পুরান ঢাকায়।
জানুয়ারির ১৪ তারিখ বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও বেশ জাকজমকের সঙ্গে পালন করা হয়ে থাকে এই উৎসব। বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা হয় এই উৎসব। বিশেষ করে গুজরাটে এই উৎসবটি বেশ আয়োজনের সঙ্গে পালন করা হয়।
- ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ২০০ জন হাসপাতালে ভর্তি
- সাগরপাড়ে ‘ভ্রমণকন্যা’ মিম, ছড়ালেন মুগ্ধতা
- পার্লামেন্ট ভেঙে দিল থাইল্যান্ড
- সাজিদের জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল, দাফন সম্পন্ন
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি: মেডিকেল বোর্ড
- আপেল নিয়ে কী ইঙ্গিত দিলেন জয়া আহসান
- মিস সুইজারল্যান্ডকে হত্যার পর মরদেহ টুকরা করেন স্বামী
- ৯ দিনের ব্যবধানে বাড়ল সোনার দাম
- নারী সাংবাদিককে চোখ মেরে বিতর্কে পাক আইএসপিআর প্রধান
- ‘প্রতারক পুরুষ’ নিয়ে যা বললেন অভিনেত্রী ভাবনা
- ফিফা র্যাংকিং: চার হারে আট ধাপ পেছাল বাংলাদেশ
- মেট্রোরেলের ভ্যাট প্রত্যাহার
- গর্ত থেকে উদ্ধার হওয়া শিশু সাজিদ মারা গেছে
- ওপেনএআই`র অ্যাপ সাজেশন নিয়ে বিতর্ক
- ত্বকে বয়সের ছাপ? দূর করবে এই ৪ পানীয়
- আজ সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণা
- ফেসবুক অ্যাপে বড় পরিবর্তন
- গভীর নলকূপে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে উদ্ধার
- নাটক ছাড়তে হবে এমন কোনো কথা নেই : তানিয়া বৃষ্টি
- ত্বকে বয়সের ছাপ? দূর করবে এই ৪ পানীয়
- মেট্রোরেলের ভ্যাট প্রত্যাহার
- ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু
- ‘নির্বাচনে পুলিশ সদস্যদের শতভাগ নিরপেক্ষ থাকতে হবে’
- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট ১২ ফেব্রুয়ারি
- খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি: মেডিকেল বোর্ড
- নারীবাদীদের ‘দুশ্চরিত্রা’ বলে গালি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী
- পার্লামেন্ট ভেঙে দিল থাইল্যান্ড
- নেতিবাচক চিন্তা দূর করে ইতিবাচক থাকুন কিছু উপায়ে
- জাতিসংঘের স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ হলেন ফাহমিদা খাতুন
- ভারতীয় বিমানে কবুতর, যাত্রীদের আনন্দ-উল্লাস

