ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:০৮:৪১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

ঢামেকে অধস্তন নারী চিকিৎসককে অশোভন মন্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৩১ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০২৫ সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের অশালীন ও অপমানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদে দেড় ঘণ্টা রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখেন অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা। এরপর হাসপাতাল পরিচালকের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে চিকিৎসকরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখে অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা। এরপর ১০টার দিকে হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কাজে ফিরেন তারা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনেসথেসিওলজি বিভাগের ফেজ-এ রেসিডেন্ট ডা. নুসরাত নওশিন নওরিন গত ১ নভেম্বর নিউরোসার্জারি বিভাগের ‘হোয়াইট ইউনিট’-এ যোগদানের পর ইউনিট প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম খানের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এনেসথেসিওলজি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়ে একের পর এক অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক মন্তব্য করেন।

ঘটনার পরদিন সোমবার সকালে এনেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসকরা একযোগে প্রতিবাদে অংশ নেন। ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম নামের এক সহকর্মী জানান, আজ সকাল ৮টা থেকে আমরা সবাই প্রতিবাদ জানাই এবং প্রিন্সিপাল স্যার ও ডিরেক্টর স্যারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিই। সেখানে এনেস্থেসিয়া সোসাইটির নেতারা, নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধানসহ ঢাকা মেডিকেলের সিনিয়র শিক্ষক ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সভায় সবাই একমত হয়ে ডা. শামসুল ইসলাম খানকে ঢামেকের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিচালক ও প্রিন্সিপাল মহোদয় বিষয়টি উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন, যাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। একই সঙ্গে বিএমডিসিতে তার নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এছাড়া এনেস্থেসিয়া সোসাইটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়, তাকে সরকারি-বেসরকারি কোনো অপারেশন থিয়েটারে সহযোগিতা করা হবে না।

এদিকে, প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রুটিন অপারেশন পুনরায় শুরু হয়। তবে ইমারজেন্সি অপারেশন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিল বলে জানা গেছে।

এসব প্রসঙ্গে জানতে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

ডা. নওশিনের অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ১ নভেম্বর তিনি একাডেমিক কারিকুলাম অনুযায়ী নিউরোসার্জারি বিভাগের হোয়াইট ইউনিটে যোগ দেন। যোগদানের পর সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি ব্যক্তিগত ও বিভাগীয়ভাবে অপমানজনক ভাষায় মন্তব্য করতে থাকেন।

অভিযোগে বলা হয়, তিনি এনেসথেসিওলজিস্টদের ‘কুকুরের জাত’ বলে বারবার সম্বোধন করেন এবং নির্দিষ্ট চিকিৎসকদের নাম উল্লেখ করে গালিগালাজ করেন। এমনকি সহকর্মী চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও অশোভন মন্তব্য করেন।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, ডা. শামসুল ইসলাম খান এনেসথেসিওলজি পেশাকে ‘নিম্নমানের ও নির্ভরশীল সাবজেক্ট’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন এবং এক পর্যায়ে ব্যক্তিগতভাবে অপদস্থ করার মতো ভাষা ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় সহকর্মীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত আজকের প্রতীকী কর্মবিরতিতে রূপ নেয়।