করুণা বেগম: এক স্বীকৃতিবিহীন অদম্য মুক্তিযোদ্ধার গল্প
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৯:০১ পিএম, ৩ এপ্রিল ২০২১ শনিবার
করুণা বেগম: এক স্বীকৃতিবিহীন অদম্য মুক্তিযোদ্ধার গল্প
১৯৭১ সালে দেশকে শত্রু মুক্ত করতে অস্ত্র হাতে সম্মুখযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এক দামাল বধূ। মাত্র ১৮ বছরের গৃহবধু করুণা বেগম দেশকে শত্রুমুক্ত করতে, একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্নে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। রাজাকারদের হাতে মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর প্রাণ হারানোর বদলা নিতে চেয়েছিলেন। আর এ লক্ষ্যেই করুণা বেগম মুলাদীর কুতুব বাহিনীতে যোগ দেন। এই বাহিনীতে তিনি ছাড়াও আরো ৫০জন নারী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
কখনো সামান্য গৃহবধূ, কখনো ভিক্ষুক সেজে গেরিলা আক্রমণে অংশ নিতেন করুণা। ছদ্মবেশে শত্রু ছাউনিতে গ্রেনেড ও অন্যান্য বিস্ফোরক নিক্ষেপ করাই ছিল তার দায়িত্ব। অনেকবার সরাসরি শত্রুর মুখোমুখি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন একাধিক যুদ্ধে। বরিশাল জেলা সদর, কসবা, কাসিমাবাদ, বাটাজোর, নন্দীবাজার, টরকী প্রভৃতি স্থানে শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধে করুণা বেগম বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দেন।
করুণা বেগমের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হাসান ১৯৭১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। একই সঙ্গে চর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি যুবকদের প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে পাঠাতেন। নিজেও স্থানীয়ভাবে দল গঠন করে বিভিন্ন শত্রু ছাউনিতে আঘাত হানার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু যুদ্ধের শুরুতে রাজাকারদের সহায়তায় পাকসেনারা তাকে ধরে নিয়ে যায়। জয়ন্তী নদীর তীরে গুলি করে হত্যা করা হয় তাকেসহ আরও কয়েকজন মুক্তিকামী যুবককে। তারপর নদীতে ফেলে দেয়া হয় তাদের লাশ।
স্বামী হত্যার পর থেমে যাননি করুণা বেগম। বরং প্রতিশোধের স্পৃহায় জ্বলে ওঠেন তার মনে। স্বামী শহীদুল শহীদ হওয়ার মাত্র একমাস পর তিন বছরের শিশুকে মায়ের কাছে রেখে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন করুণা।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কুতুবউদ্দিনের নেতৃত্বে স্টেনগান, রাইফেল চালানোর প্রশিক্ষণ নেন করুণা। একই সময় বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য সম্পর্কে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। এরপর কুতুববাহিনীর ৫০জন নারীযোদ্ধার কমান্ডার নিযুক্ত হন।
অসম সাহসিকতার জন্য ১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে পাকসেনাদের একটি শক্ত ঘাঁটিতে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। গৌরনদী থানার মাহিলারা এলাকায় সেতুসংলগ্ন পাকসেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমণ করেন তিনি। করুণার নেতৃত্বে ৫ জন নারী এবং ১০ জন পুরুষের একটি দল ওই ঘাঁটি আক্রমণ করে। পরপর পাঁচটি গ্রেনেড ছুড়ে আক্রমণের সূচনা করেন দলনেতা করুণা। টানা চার ঘণ্টা চলে এই কঠিন যুদ্ধ। যুদ্ধে ১০ জন পাকিস্তানি সেনা হতাহত হয়। একজন মুক্তিযোদ্ধাও আহত হন। যুদ্ধচলাকালে পাকবাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলি এসে করুণা বেগমের ডান পায়ে বিদ্ধ হয়।
ওই সময় মুলাদী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পর স্বাধীন দেশে সিএমএইচে চিকিৎসা করা হয় তার। পরে ক্রাচে ভর দিয়ে চলাফেরা করতেন করুণা। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে সিএমএইচে দেখতে যান। পরে বঙ্গবন্ধু তাকে চিঠিও লিখেছিলেন।
একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্নে অসংখ্যবার সম্মুখযুদ্ধে অস্ত্র হাতে শত্রুর মোকাবিলা করা সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা করুণা বেগমকেও ভুলে গেছে ইতিহাস। অন্যান্য নারী মুক্তিযোদ্ধার মতোই বিজয়ের পঞ্চাশ বছরেও উপেক্ষিত তিনি। নেই বীরত্বের কোনো স্বীকৃতি। শুধু মুখে মুখে ফেরা মানুষের গল্পগাথায় উচ্চারিত হয় তার গ্রেনেড ছোড়ার কাহিনী। ছদ্মবেশে যুদ্ধ জয়ের দুঃসাহসিকতার গল্প।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দোয়ারিকা-শিকারপুর ফেরিঘাটের পার্শ্ববর্তী রাকুদিয়া গ্রামের করুণা বেগমের বীরত্বগাথা প্রথম গণমাধ্যমে তুলে আনেন কথাসাহিত্যিক ও গবেষক সেলিনা হোসেন। তার ভাষায়, বীরপ্রতীক খেতাব পাওয়ার মতো যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সমাজ এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাননি করুণা বেগম।
২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি ৫৬ বছর বয়সে মারা যান স্বীকৃতিবিহীন এই যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৫৩ সালের ১০ জানুয়ারি বরিশালের মুলাদী থানার কাজিরচর গ্রামে করুণা বেগমের জন্ম।
- সুলতান সুলেমানের প্রাসাদে ফারিণ
- বিনা অভিজ্ঞতায় ব্যাংকে চাকরি
- খিলগাঁওয়ে একইদিনে তিন শিশুর মৃত্যু
- তীব্র গরমে ট্রেনের ব্রেকে আগুন, ১০ যাত্রী আহত
- রান্না ভালো না হওয়ায় স্ত্রীকে জানালা দিয়ে ফেলে দিলেন স্বামী
- শেরে বাংলার কর্মপ্রচেষ্টা নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে
- রাজধানীর যেসব এলাকায় ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না আজ
- গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা আজ,থাকবে পানি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা
- কোথায় হবে অনন্ত এবং রাধিকার বিয়ে?
- গরমে চা খাওয়া কি ঠিক?
- বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
- তাপমাত্রা কমাতে হিট অফিসারের নতুন উদ্যোগ
- শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মাজারে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- ভারতে হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়!
- তানজানিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ১৫৫ জনের মৃত্যু
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- ২৯ ফেব্রুয়ারি বা লিপ ইয়ার নিয়ে ১০টি মজার তথ্য
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
- গুলবদন বেগম: এক মুঘল শাহজাদির সাহসী সমুদ্রযাত্রার গল্প
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- দিনাজপুরে ব্যাপক পরিসরে শিম চাষের লক্ষ্য
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- জিমন্যাস্টিকসে শিশু-কিশোরদের উৎসবমুখর দিন
- কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার নেতৃত্বে সাজ্জাদ-মোশাররফ-শরীফ