ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ২:০২:৫০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের বাসায় পর্যবেক্ষণে থাকবেন খালেদা জিয়া ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গাজায় নিহত বেড়ে ৩২ হাজার ৪৯০ অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতা বাড়ছে ব্র্যান্ড শপে বাঁচানো গেল না সোনিয়াকেও, শেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার

কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবস আজ

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:১৪ এএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের পঞ্চম প্রয়াণ দিবস আজ। ২০১৪ সালের এই দিনে কলকাতায় দেহ ত্যাগ করেন তিনি।দুনিয়াজুড়ে তার অসংখ্য ভক্ত। বাঙালির হৃদয়ে আজও অমলিন হয়ে আছেন এই মহানায়িকা। সুচিত্রা সেন একজন ভারতীয় অভিনেত্রী ছিলেন। তার জন্মগত নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। তিনি মূলত বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল, বাংলাদেশের পাবনায় সুচিত্রা সেন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন এক স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মা ইন্দিরা দেবী ছিলেন গৃহবধূ। তিনি ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। পাবনা শহরেই তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী।

১৯৪৭ সালে বিশিষ্ট শিল্পপতি আদিনাথ সেনের পুত্র দিবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র কন্যা মুনমুন সেনও একজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী। তার নাতনী রিয়া সেন ও রাইমা সেন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

১৯৫২ সালে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন। প্রথম ছবি করেন শেষ কোথায়। তবে ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে সাড়ে চুয়াত্তর ছবি করে সাড়া ফেলে দেন চলচ্চিত্র অঙ্গনে। সুচিত্রা সেন বাংলা ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি দেবদাস (১৯৫৫)।

১৯৭৮ সালে সুদীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন। এর পর তিনি লোকচক্ষু থেকে আত্মগোপন করেন এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় ব্রতী হন। ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হন, কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লি যাওয়ায় আপত্তি জানানোর কারণে তাকে পুরস্কার দেয়া হয়নি।


সম্মাননা:

সুচিত্রা সেনই বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম অভিনেত্রী, যিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৩ সালে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসব থেকে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান তিনি। ১৯৫৫ সালের দেবদাস ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেন, যা ছিল তার প্রথম হিন্দি ছবি। উত্তম কুমারের সাথে বাংলা ছবিতে রোমান্টিকতা সৃষ্টি করার জন্য তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বিখ্যাত অভিনেত্রী। ১৯৬০ ও ১৯৭০ দশকে তার অভিনীত ছবি মুক্তি পেয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার পরও তিনি অভিনয় চালিয়ে গেছেন, যেমন হিন্দি ছবি আন্ধি। এই চলচ্চিত্রে তিনি একজন নেত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। বলা হয় যে চরিত্রটির প্রেরণা এসেছে ইন্দিরা গান্ধী থেকে। এই ছবির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং তার স্বামী চরিত্রে অভিনয় করা সঞ্জীব কুমার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছিলেন। হিন্দি চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর দাদাসাহেব সম্মাননা প্রদান করে ভারত সরকার। চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ সম্মাননা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। ২০০৫ সালে দাদাসাহেব সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। সম্মাননা নিতে কলকাতা থেকে দিল্লি যেতে চাননি বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

সুচিত্রা সেনের যত ছবি:

সুচিত্রা সেনের প্রথম ছবি শেষ কোথায়। ১৯৫২ সালে ছবিটি নির্মিত হলেও তা আর মুক্তি পায়নি। ১৯৫৩ সালে অভিনয় করেন সাত নম্বর কয়েদি ছবিতে। ১৯৫২ থেকে ১৯৭৮ এই ২৬ বছরে তিনি ৬২টি ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে তিনি প্রথম ছবি করেন সাড়ে চুয়াত্তর। এ ছবিটি বক্স অফিস হিট করে। সুচিত্রা সেনের অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে: অগ্নি পরীক্ষা (১৯৫৪), গৃহ প্রবেশ (১৯৫৪), ঢুলি (১৯৫৪), মরণের পরে (১৯৫৪), দেবদাস (১৯৫৫-হিন্দি), শাপমোচন (১৯৫৫), সবার উপরে (১৯৫৫), মেঝ বউ (১৯৫৫), ভালবাসা (১৯৫৫), সাগরিকা (১৯৫৬), ত্রিযামা (১৯৫৬), শিল্পী (১৯৫৬), একটি রাত (১৯৫৬), হারানো সুর (১৯৫৭), পথে হল দেরী (১৯৫৭),জীবন তৃষ্ণা (১৯৫৭), চন্দ্রনাথ (১৯৫৭), মুশাফির (১৯৫৭-হিন্দি), রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত (১৯৫৮), ইন্দ্রানী (১৯৫৮), দ্বীপ জ্বেলে যাই (১৯৫৮), চাওয়া পাওয়া (১৯৫৯), হসপিটাল (১৯৬০), বোম্বাই কা বাবু (১৯৬০-হিন্দি), সপ্তপদী (১৯৬১), সাত পাকে বাঁধা (১৯৬৩), উত্তর ফাল্গুনী (১৯৬৩), মমতা (১৯৬৬), গৃহদাহ (১৯৬৭), কমললতা (১৯৬৯), মেঘ কালো (১৯৭০), ফরিয়াদ (১৯৭১), আলো আমার আলো (১৯৭২), হার মানা হার (১৯৭২), দেবী চৌধুরাণী (১৯৭৪), শ্রাবণ সন্ধ্যা (১৯৭৪), প্রিয় বান্ধবী (১৯৭৫), আঁধি (১৯৭৫-হিন্দি), দত্তা (১৯৭৬) এবং সর্বশেষ প্রণয়পাশা (১৯৭৮)।

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮২ বছর বয়সে সুচিত্রা সেনের মৃত্যু হয়। তিন সপ্তাহ আগে ফুসফুসে সংক্রমণের জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার শেষকৃত্যে গান স্যালুট দেবার কথা ঘোষণা করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধানমন্ত্রী-পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী সুচিত্রা সেনের মৃত্যুতে শোকবার্তা পাঠান।