ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৫:২৩:২৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

ক্রেতা শূন্য পিরোজপুরের ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০৮ পিএম, ১১ জুলাই ২০২৩ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বর্ষার সময় হলেই পিরোজপুরে জমে ওঠে ঐতিহ্যবাহী নৌকার ভাসমান হাট। বিক্রেতারা ভাসতে ভাসতে বের হয় নৌকা নিয়ে আবার ক্রেতা নৌকা কিনে নিয়ে যায় বেয়ে বেয়ে। কেউ আবার নিয়ে যায় ভ্যান বা পিকআপে করে। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই নৌকার হাটটি বসে নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা এলাকায়। বর্তমানে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকটা ক্রেতা শূন্যতায় ভুগছে ঐতিহ্যবাহী এই হাটটি।

নৌকার হাটটিতে শুক্রবার ভোর থেকেই বিকেল পর্যন্ত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দরাদরিতে চলে নৌকা বিক্রি। তবে হাটটি জমজমাট হয় সকাল ১০ থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। নৌকার পাশাপাশি বইঠাও বিক্রি হয় এই হাটে। সন্ধ্যা নদীর পশ্চিমপাড়ের গ্রাম ডুবি, কাটাখালী, একতা ও চামীসহ মোট ৬টি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার নৌকা তৈরির কজের সাথে জড়িত। নৌকা তৈরির শুরুর দিকে সুন্দরী কাঠ সহজলভ্য হওয়ায় সেই কাঠ দিয়ে তৈরি হতো নৌকা। এখন সুন্দরী কাঠ দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় কড়াই, রেইনট্রি, চাম্বল ও মেহগনি কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করা হয়। চাম্বলের ৮ হাত নৌকা ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বর্ষা মৌসুমে গ্রামগুলোতে গিয়ে চোখে পড়ে বাড়ির আঙিনায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগরেরা। বর্ষা মৌসুমে আটঘর খালের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাসমান হাট জমজমাট হয়ে ওঠে। এ খালে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বসে ডিঙি নৌকার হাট।


নৌকার হাটে গিয়ে দেখা যায়, পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে আটঘর বাজার। বছরের জ্যৈষ্ঠ থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের এ ঐতিহ্যবাহী নৌকার সবচেয়ে বড় হাটটি বসে এখানে। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে দরদাম করে পছন্দের নৌকা কিনে বাড়ি ফিরছেন। কেউ নৌকা বেয়ে আবার কেউ ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে তুলে নৌকা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। স্থানীয় কৃষক, জেলে ছাড়াও বরিশালের বানারিপাড়া, উজিরপুর, ঝালকাঠি সদর উপজেলা, রাজাপুর উপজেলা ও পিরোজপুরের কাউখালী, নাজিরপুর উপজেলা থেকে নৌকা কিনতে মানুষ এ হাটে আসে।

নৌকা ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, নৌকা কিনতে আসছি। কয়েকটা দেখলাম। একটা কিনব বলে ঠিক করেছি। তবে দাম একটু বেশি। আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে বা বাড়ি ফিরতে নৌকা লাগে। আবার মাছ ধরা ও বিভিন্ন সময় বীজ, সবজি ও ফসল বিক্রির জন্য ব্যবহার হয়।

আরেক ক্রেতা মজনু মিঞা বলেন, এ বছর আগের তুলনায় নৌকার দাম অনেক বেশি। আমাদের ক্রেতাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দামের কারণে বৈঠাও কিনতে পারছি না।

নৌকা বিক্রেতা বিপুল মিস্ত্রি বলেন, এখানে নৌকা বিক্রি ভালোই হয়। তবে এ বছর ক্রেতা শূন্য দেখা যাচ্ছে। যে পরিমাণ নৌকা হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়েছে সে তুলনায় ক্রেতা নেই বললেই চলে।

নৌকা ক্রেতা জব্বার আহমেদ বলেন, বারইয়া থেকে এসে নৌকা কিনছি। ২৫০০ টাকা নৌকা। চোতায় রাখছে ২৫০ টাকা। ভ্যানে ২০০ টাকা।

নৌকা বিক্রেতা সেলিম খান জানান, নৌকা দেখে ক্রেতারা নেওয়ার মতো দাম বলে না। যা দাম চাই তার অর্ধেক দাম বলেন ক্রেতারা। এমন হলে নৌকা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত উপ-ব্যবস্থাপক মিলটন চন্দ্র বৈরাগী বলেন, নৌকা আমাদের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের একটি। সবাই মোটামুটি এই হাটটি সম্পর্কে অবগত। নৌকা তৈরির কাজে সহযোগিতার জন্য বিসিক থেকে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ব্যবসায়ীরা ঋণ সুবিধা পেতে পারে। এছাড়া কাজের উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করা যেতে পারে।