ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮, এপ্রিল ২০২৪ ১৬:০৪:০৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই দেশ আরও উন্নত হতো টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা নান্দাইলে নারী শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ, বাড়ছে জ্বর-ডায়রিয়া কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দী অবস্থায় সুচি কৃষকরাই অর্থনীতির মূল শক্তি: স্পিকার মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বিএনপির লক্ষ্যই ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৫২ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২১ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় যে নারকীয় গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে তা তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয় জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির লক্ষ্যই ছিল আমাকে হত্যা করে, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা, নিশ্চিহ্ন করা।

শনিবার (২১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের জুলাই মাসে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। এরপর থেকেই মেধাবী অফিসারদেরও এসডি এবং বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। কারচুপির নির্বাচনে ক্ষমতায় এসে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর থেকেই সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু হয়। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পূর্ব থেকেই তারা প্রস্তুতি নিতে থাকে। 

সেদিনের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর হামলার ঘটনাসহ সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে আমরা শান্তি সমাবেশ করি। প্রথমে মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করতে চেয়েছি, আমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করব। সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মাইক টানানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে রাত ১২টায় আমাদেরকে চিঠি দিয়ে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় মুক্তাঙ্গনে। তখনই আমার সন্দেহ হয়েছে, অনুমতি দেওয়ার কারণ কি। কিন্তু আমরা বলেছি, আমরা আর সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করব না, কারণ সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতেও তারা আমাদের উপর গ্রেনেড ছুঁড়ে মারে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার বক্তব্য শেষ। সেই মুহূর্তে ফটোসাংবাদিক গোর্কিসহ আরো কয়েকজন বললেন, আমরা ছবি নিতে পারেনি। তারা ছবি তুলতেছিল সেই মুহূর্তে মুহুর্মুহু শব্দের পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। হানিফ ভাইসহ (ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি) আরো কয়েকজন আমাকে ঘিরে ধরে, ড্রেনের স্প্লেন্ডার হানিফ ভাইয়ের মাথায় লাগে, তার মাথা থেকে রক্ত ঝরে পড়ছে। এভাবে আমাকে সেদিন তারা সেকেন্ড হামলা থেকে রক্ষা করেছে। আমি প্রাণে বেঁচে যাই। চতুর্দিকে মানুষের আহাজারি। ছটফট করছিল। কিন্তু পুলিশ আহতদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। যারা আহতদের উদ্ধার করতে এসেছিল, পুলিশ তাদেরকে বাধা দিয়েছিল। টিয়ার গ্যাস করেছিল, লাঠিপেটা করেছিল। এমনকি আহতরা যেন চিকিৎসাসেবা না পায়, সেজন্য সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকরাও সেদিন চলে গিয়েছিল। এরকম বীভৎস আচরণ তারা করেছিল।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, সংসদ অধিবেশন শুরু হলে আমরা এই হামলা নিয়ে সংসদে কথা বলতে চেয়েছিলাম, আমাদেরকে কথা বলতে দেওয়া হলো না। মাইক দেওয়া হলো না। একটা শোকপ্রস্তাব পর্যন্ত উপস্থাপন করতে দেওয়া হলো না। উল্টো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দাঁড়িয়ে বললেন ‘উনাকে আবার কে মারবে! উনি নিজেই ভ্যানিটি ব্যাগে গ্রেনেড নিয়ে গিয়ে সমাবেশে ঘটনা ঘটিয়েছে’। বলা হল এটা নাকি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন দল! আমি তখন বললাম আপনার কি সেখানে আত্মহত্যা করতে গিয়েছি! তার কিছুদিন আগে খালেদা জিয়া বলেছিল, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা আর কোনদিন বিরোধীদলীয় নেতা হতে পারবে না।

ঘটনার আলামত সংরক্ষণ না করে মুছে ফেলার অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই ঘরটা আলামত সংরক্ষণ করতে দেয়নি। পুলিশের যেসব কর্মকর্তা অবিস্ফোরিত গেনেডসহ আলামত সংরক্ষণ করতে চেয়েছিল, প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা চিকিৎসকদের সহযোগিতা করতে চেয়েছিল তাদের কেউ হুমকি-ধামকিতে রাখা হয়েছিল। এমন কি একজন বিচারক দিয়ে বলা হয়েছিল পার্শ্ববর্তী দেশের থেকে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল। আমার প্রশ্ন পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কেন আমাদেরকে হামলা করা হবে? এটা তো কোনদিন হতে পারে না।

এরপর তারা কি করলো সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি এনে ঘটনাস্থলের সবকিছু ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। কোন আলামত তারা রাখতে দেয়নি। নোয়াখালীর একটা সাধারণ ছেলে জজ মিয়া, তাকে ধরে এনে বলা হয়েছে সেই নাকি এই হামলা করেছে। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলো তাকে জেলে নেওয়া হলো। এইভাবে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে তারা এই বিচারকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, এত কিছুর পরও আমি বেঁচে আছি। আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। মনে করি একটাই কারণ বাবার হাত ধরেই আমি এদেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্র।

আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এছাড়াও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন দলটির প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ স্থাপিত বেদীতে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

-জেডসি