বিপন্নকালের ভেলা ও আমার মা উমা বসু
তপতী বসু | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:৩৪ এএম, ৯ জানুয়ারি ২০২২ রবিবার
সংগৃহীত ছবি
রাজা সীতারাম রায় (১৬৫৮–১৭১৪) ছিলেন বাংলার মাগুরার প্রামাণ্য ইতিহাসের নায়ক ৷ ‘ভূষণা’ এলাকার পরবর্তিতে নাম হয় মহম্মদপুর। মহম্মদপুরের রাজা ছিলেন তিনি৷ বাংলার তথা দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন যারা, তাদের মধ্যে রাজা সীতারাম রায় ছিলেন অন্যতম।
সীতারাম রায়ের আমলে ফকিরহাটের মূলঘর গ্রামে ‘মজুমদার’ পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এসে থাকতে শুরু করেন৷ হুগলি থেকে আসার পরে পরিবারটির শাখা-প্রশাখা ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে থাকে। নিজেদের শিক্ষা আর আভিজাত্যে উচ্চ মাত্রায় নিয়ে যান তারা৷ আমার মাতামহ ছিলেন বঙ্কিম মজুমদার৷ তিনি কলকাতার পাথুরেঘাটা জমিদারদের মূলঘরের সেরেস্তায় কাজ করতেন৷ কাজের সূত্রে বাগেরহাট থেকে ছেড়ে আসা রেলগাড়িতে যেতেন শিয়ালদা৷ কাজ শেষে কলকাতার বইয়ের দোকান ঘুরে ঘুরে কিনে আনতেন নানা বই৷ তার ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারের নাম ছিল ‘সরস্বতী লাইব্রেরী’!
এ লাইব্রেরীতে হাজারের কাছাকাছি বই ছিল৷ আমার মায়ের দাদামশাই উচ্চ শিক্ষিত এবং সরকারী অফিসার ছিলেন৷ নড়াইলের বাসিন্দা হলেও বদলির কারণে গয়ায় থাকার সময় আমার দিদিমা সুবর্ণা মজুমদারের জন্ম৷
মূলঘর গ্রামে ছিল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক, নারী কল্যাণ সমিতি এবং ‘পার্ক’! গ্রামের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত অসংখ্য মানুষ রেলে চাকরির সুবাদে ছড়িয়ে ছিলেন সমস্ত ভারতবর্ষের আনাচে-কানাচে৷ সে এক সমৃদ্ধির অসম্পূর্ণ ইতিহাস। কারণ দেশ একদিন ভাগ হয়ে যায়৷ দাদুর ছেলেরাও তখন গ্রামের আরো অনেকের মতন চাকরি বা লেখাপড়ার জন্যে কলকাতাবাসী ৷ বাধ্য হয়েই বিভক্ত দেশের ‘হিন্দুস্তান’-এ থাকতে হয় তাদের! দাদু বহুদিন জনশূন্য জন্মভূমিতে থাকার চেষ্টা করেছিলেন৷ চেয়েছিলেন তিনশত বছরের পুরাতন বাস্তুর প্রদীপ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জ্বালাতে!
যদিও তা আর সম্ভব ছিল না৷ তার কন্যা উমা বসুর লেখায়-‘১৯৬৩ সালে আমার বাবা-মা ঘরবাড়ি বিষয়-আশ্রয় ফেলে বলতে গেলে এক কাপড়ে ভারতে চলে গেলেন। দেশভাগ থেকেই মূলঘর গ্রাম ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। দু’এক ঘর যারা ছিল, তারা নানারকম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছিল। ইদানীং কেউ হয়তো বাড়ি ফেলে দু’চার ঘণ্টার জন্য কোথাও গেছেন। ফিরে এসে দেখেছেন ওটুকু সময়ের মধ্যেই বিহারি কোনো পরিবার সেই বাড়ির তালা ভেঙে ঢুকে সংসার সাজিয়ে রান্না-খাওয়া শুরু করেছে। এরকম ঘটনা সুধা দিদির। মূলঘর গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা সুধাদি সকালবেলার ট্রেনে বাগেরহাট এসেছিলেন। দুপুরবেলা বাড়ি ফিরে দেখেন তালা ভেঙে উঠে বসেছে এক পরিবার। সেদিন থেকে আইন আদালতের দরজায় দরজায় অনেক ঘুরলেন তিনি। কিন্তু ঘরে ফেরা আর হল না তার। এক কাপড়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। বুকটা ফাঁকা হয়ে গেল। কত উৎসাহ, কত আনন্দ। ছবির মতো চোখের সামনে সারাদিন ভেসে ভেসে আসতো। দুর্গামন্দিরের সামনে বিশাল উঠোন। একপাশে বড় বেলগাছ, যার তলায় বোধন হতো। পূজার সময় আত্মীয়স্বজনে ভরে যেত ঘর। অথচ গ্রামে মানুষের অভাবে বাবা দেশ ছাড়লেন ! ফেলে গেলেন আমাকে। প্রাণটা হু-হু করে। চোখটা বারবার অকারণে ঝাপসা হয়ে আসে...।’
দাদু মারা যান আশির দশকের শেষে। দেশ ছাড়ার প্রায় ত্রিশ বছরের ব্যবধানে এবং দিদিমাও তার কয়েক বছর পর৷ এই সুদীর্ঘ সময় তারা থাকতেন একটি ভাড়া বাড়িতে। যেখানে প্রাণ ধারণ ছাড়া প্রাণের আনন্দ ছিল অধরা৷ অসীম ধৈর্য নিয়ে তাদের সব কিছু মেনে নিতে হয়েছিল। কারোর কিছু করার ছিল না৷ অসংখ্য দেশভাসা মানুষের মতন একবার শেষ সাধ ছিল বাস্তুভূমির মাটিকে ছুঁয়ে দেখার৷ তা নিয়ে হতে পারে আলাদা আখ্যান৷
আমার মা ‘উমা বসু’র জন্ম হয়েছিল আজকের দিনে৷ মূলঘরের মজুমদারদের শেষ চিহ্ন বলতে এখন দাদু-দিদার প্রায় মুছে আসা এই ছবি আর মায়ের স্মৃতিচারণায় কিছু কথা৷ দেশভাগ শুধু মাটিকে ভাগ করেনি-মানুষের শত বছরের লালিত-পালিত-সংগৃহীত পারিবারিক আনন্দময় আভিজাত্যকেও ধরার ধূলি থেকে ধূয়ে-মুছে দিয়েছে৷
- ‘পদ্মশ্রী’ গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
- কেউ হিট স্ট্রোক করলে কী করবেন?
- সালমান আমার জীবন: ঐশ্বরিয়া
- দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে যশোর-চুয়াডাঙ্গা
- গোপালগঞ্জে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন
- দিনাজপুরে সজনের ডাটার বাম্পার ফলন
- জয়পুরহাটে পাকিস্তানী হানাদাররা প্রথম গণহত্যা শুরু করে ২৫ এপ্রিল
- কাতার-বাংলাদেশ ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই
- বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড
- কয়েক ঘণ্টায় ৮০ বারেরও বেশি কেঁপে উঠল তাইওয়ান
- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির
- কেএনএফের আরও ৩ নারী সহযোগী গ্রেপ্তার
- ঢাকায় কাতারের আমির, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক আজ
- ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল
- মাকে অভিভাবকের স্বীকৃতি দিয়ে নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- ২৯ ফেব্রুয়ারি বা লিপ ইয়ার নিয়ে ১০টি মজার তথ্য
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- জাপার সভায় গান গাইলেন রওশন এরশাদ
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
- গুলবদন বেগম: এক মুঘল শাহজাদির সাহসী সমুদ্রযাত্রার গল্প
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- রোমান্টিক যুগের অন্যতম কবি জন কিটস
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- দিনাজপুরে ব্যাপক পরিসরে শিম চাষের লক্ষ্য