ওপার বাংলার যেসব পর্যটনকেন্দ্র বেশ জনপ্রিয়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১২:৪২ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রবিবার

সংগৃহীত ছবি
পছন্দের সিনেমায় প্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রীকে যেসব মনোরম স্থানে শুটিং করতে দেখে মানুষ, অজান্তেই মনের মধ্যে সেই জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার শখ জাগে। শুধু জাগেই না, বাঙালি ঠিক খুঁজেও বের করে সেইসব স্থান যাকে বিখ্যাত করে দিয়েছে কিছু সিনেমা।
ফিল্ম ট্যুরিজম বা চলচ্চিত্র পর্যটন তত মারকাটারি জনপ্রিয় এখনও হতে পারেনি ঠিকই, তবে সম্ভাবনা চরম। সোজা কথায় বলতে গেলে, সিনেমায় যে স্থানে শুটিং হতে দেখা যায় ট্যুর ট্র্যাভেলস কোম্পানির দৌলতে বা একাই সেসব জায়গায় পৌঁছেও যেতে পারবেন। একেই বলে চলচ্চিত্র পর্যটন, যেখানে সিনেমা এবং ভ্রমণ একাত্ম হয়ে যায়।
যেমন ধরা যাক, সিনেমায় দেখা কলকাতার কিছু বনেদি বাড়ি! ‘পিকু’-র সেই বিরাট অট্টালিকার ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে বাড়ির ইতিহাসের পাশাপাশি শুটিংয়ের ইতিবৃত্ত শুনতে পেলে কেমন হয়? কিংবা ইটাচুনা রাজবাড়ি? সেটাই তো ছিল রণবীর সিং, সোনাক্ষী সিনহার ‘লুটেরা’ সিনেমার লোকেশন। অর্থাৎ বেড়াতে গিয়ে শুধু পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার মতো সিনেমার গল্প শুনে আসা নয়; সিনেমার স্মৃতিকে সঙ্গী করেই বেড়াতে যাওয়া।
পৃথিবীজুড়েই পর্যটন ব্যবসার এখন অন্যতম মূলধন হল সিনেমা। বলিউডের ছবিতে দেশ-দেশান্তরে নিত্য নতুন লোকেশন। পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে ঝাঁপি উজাড় করে দিচ্ছে সে সব দেশের পর্যটন মন্ত্রণালয়। সুইজারল্যান্ডে তো যশ চোপড়ার নামে বিশেষ ট্রেন আর হোটেল স্যুইটও রয়েছে! রয়েছে বিভিন্ন শুটিং স্পটে ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’র স্মারক! লাদাখ উপত্যকায় আলাদা করে চিহ্নিত করা আছে ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর শুটিং স্পট! লাদাখের পর্যটন যে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে ওই সিনেমার পর থেকেই, সে কথা এক বাক্যে মানেন স্থানীয়রা। আবার সিনেমা দেখেই অনেক সময় বেড়ানোর জায়গা ঠিক করে ফেলেন, এমন ভ্রমণপিপাসুও কম নেই!
দার্জিলিংয়ের সিনে-পর্যটন
দশকের পর দশক ধরে বলিউড এবং টলিউডের প্রিয় শুটিং স্পট দার্জিলিং। আবার নতুন করে পাহাড়ের রানির সেই পুরোনো গৌরব ফিরে আসছে। মাঝখানে বিক্ষোভ আন্দোলনের ফলে সিনেমার কাজকর্ম সেখানে বন্ধ ছিল অনেকদিন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দপ্তরও চেষ্টায় রয়েছে যাতে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে দার্জিলিংয়ের আত্মিক বন্ধন ফের গড়ে ওঠে।
টিনসেল টাউনের আনাগোনা বাড়তে থাকায় দার্জিলিং আবার চলচ্চিত্র পর্যটনের ম্যাপে জায়গা করে নিয়েছে। পর্যটকদের অনেকেই চান জনপ্রিয় শুটিং স্পটগুলো ঘুরে দেখতে। পুরোনো যে ক’টি সিনেমা এখানে শুট করা হয়েছে সেগুলি নস্টালজিয়া জাগিয়ে তোলে। যেমন ‘বরসাত’ (১৯৪৯), ‘যব প্যার কিসিসে হোতা হ্যায়’ (১৯৬১) ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ (১৯৬২), ‘আয়ে দিন বাহার কে’ (১৯৬৬), ‘হমরাজ’ (১৯৬৭), ‘বাহারোঁ কি মনজিল’ (১৯৬৮), ‘ঝুক গয়া আসমান’ (১৯৬৮), ‘মহল’ (১৯৬৯) এবং ‘আরাধনা’ (১৯৬৯)।
সত্তরের দশকে এক ঝাঁক বিখ্যাত বলিউড সিনেমার শুটিং হয় দার্জিলিংয়ে। তপন সিনহার ‘সাগিনা মাহাতো’ (১৯৭০) এবং তার হিন্দি রূপান্তর ‘সাগিনা’ (১৯৭৪)– দুটো ছবির বেশিরভাগ অংশ শুট করা হয় দার্জিলিংয়ের কাছে কার্শিয়াংয়ে। তারপর অমিতাভ বচ্চনের ‘দো আনজানে’ (১৯৭৬) এবং শক্তি সামন্তের ‘অনুরোধ’ (১৯৭৯), যা বাংলা ‘দেয়া নেয়া’-র হিন্দি রূপান্তর। ‘লহু কে দো রং’ (১৯৭৯) ছবির পুরোটাই শুট করা হয় দার্জিলিংয়ে।
১৯৮০ এবং ৯০-র দশকে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে কম। ‘বরসাত কি এক রাত’/ ‘অনুসন্ধান’ (১৯৮২) এবং ‘রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান’ (১৯৯২)-এর কথা বলা যেতে পারে। ২০০০ এবং ২০১০-এর দশকে আবার নতুন উন্মাদনা দেখা যায়। ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার’ (২০০২), ‘ম্যায় হুঁ না’ (২০০৪), ‘পরিণীতা’ (২০০৫), ‘ভায়া দার্জিলিং’ (২০০৮), ‘বরফি’ (২০১২), ‘কহানি ২’ (২০১৬) এবং ‘জগগা জাসুস’ (২০১৬)। টলিউডের এত সিনেমার শুটিং দার্জিলিংয়ে হয়েছে যে বলে শেষ করা যাবে না।
২০১৯ সালের নভেম্বর। ‘সাঁঝবাতি’ ছবির শুটিং করতে দার্জিলিং গিয়েছিলেন দেব এবং পাওলি দাম। কোভিড মহামারির মধ্যে ২০২০-র অক্টোবরে সেই সিনেমার ওয়ার্ল্ড টেলিভিশন প্রিমিয়ার হয়। প্রচুর স্থানীয় জনতা এবং পর্যটক তখন ভিড় করেন দার্জিলিং চৌরাস্তার শুটিং স্পটে। দার্জিলিং সদর মহকুমার তাকদা ক্যান্টনমেন্টের রংলি রংলিওট সিডি ব্লকে সম্ভবত রজত কাপুর এবং মুমতাজ সরকার শুটিং করতে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন হিসেবে তাকদার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে থাকে। তাপসী পান্নু এবং রবি মোহনের একটি ছবির শুটিংও তাকদায় হয়েছিল ২০১৯-এর নভেম্বরে। এই শীতে চাইলে এই জনপ্রিয় সিনেস্পটে ঘুরে আসতেই পারেন।
পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রাম পর্যটন
মনে আছে, ‘হীরক রাজার দেশে’র সেই পাহাড়! ঝোপজঙ্গল আর বড় বড় পাথরের চাঁই টপকে উঠে এসে গুপি-বাঘা দেখল, পাহাড়ের গুহায় এক মানুষ শুয়ে। তাঁদের দেখতে পেয়েই কাটারি হাতে তেড়ে এল যে, উদয়ন পণ্ডিত! পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়েই তো তাঁর সঙ্গে প্রথম আলাপ গুগাবাবার!
অন্য সিনেমা উত্তরা, আবার দু’জন মানুষ। প্রায় উলঙ্গ, খোলা মাঠে কুস্তি লড়ছেন। মাটির রং লাল। কুস্তির প্যাঁচে একজন ফেলে দিলেন অন্যকে। একজনের মনে পড়ল, ট্রেন আসার সময় হয়েছে। রেললাইন ধরে তাঁরা দৌড় লাগালেন। এদিকে ট্রেন আসছে। স্টেশনে গিয়ে তাঁরা জামাকাপড় পরে নিলেন। দু’জনে সিগন্যাল ম্যানের কাজ করেন।
এই দুই বিখ্যাত সিনেমার দৃশ্য শুটিং হয়েছে পুরুলিয়ায়। দুটি ছবিই সারা দুনিয়ায় বহুল প্রশংসিত। যেখানে যেখানে শুটিং হয়েছে, সেই জায়গাগুলি দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী হয়ে আছে। খোরলো ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস সংস্থার অন্যতম কর্ণধার নীলাঞ্জন বসু জানান, চলচ্চিত্র পর্যটনের উদ্যোগের পিছনে বাণিজ্যিক চিন্তাভাবনার থেকেও বেশি রয়েছে আবেগ। বছর তিনেক আগে তারা পুরুলিয়া দিয়ে শুরু করেছিলেন এই কাজ। তারপর ঝাড়গ্রাম, দার্জিলিং এবং হুগলিকেও বেছে নিয়েছেন চলচ্চিত্র পর্যটনের জন্য।
ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া, দু’জায়গাতেই ট্রিপ দু’রাত এবং তিন দিনের। নীলাঞ্জন জানান, সড়কপথেই যাওয়া বেশি সুবিধার, যে কারণে তাঁদের সংস্থা আরামদায়ক ‘মাইক্রো কোচ’ ভাড়া নেয়। কলকাতা থেকে পুরুলিয়া যেতে মাঝখানে বিরতি-সহ ৬ ঘণ্টার মতো লাগে। ঝাড়গ্রাম যেতে লাগে মোটামুটি সাড়ে ৩ ঘণ্টা। একদিনেই হুগলি ঘুরে আসা যায়। সেখানে দেখার জায়গা মূলত হাতুই গ্রাম, যেখানে মৃণাল সেনের ‘আকালের সন্ধানে’ (১৯৮০) সিনেমার শুটিং হয়েছিল। ছবির সঙ্গে যুক্ত সবাই ছিলেন একটি পুরোনো ভগ্নপ্রায় বিশাল জমিদার বাড়িতে। মৃণাল সেন ওই বাড়ি থেকেই নির্বাক যুগের নামকরা চলচ্চিত্র ‘জামাই বাবু’র (১৯৩১) তিনটি রিল খুঁজে পান।
পুরুলিয়ায় জয়চণ্ডী পাহাড় ‘হীরক রাজার দেশে’-র জন্য বিখ্যাত। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের জন্ম হয়েছিল এই জেলায়। ‘উত্তরা’ ছাড়াও বুদ্ধদেব এখানে নানা জায়গায় ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ (২০০২), ‘টোপ’ (২০১৭)-এর মতো সিনেমার শুটিং করেছেন। বলিউডেও পুরুলিয়াকে দেখা গিয়েছে সোনাক্ষী সিনহা, রণবীর সিং অভিনীত বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের ছবি ‘লুটেরা’তে (২০১৩)। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রেও পুরুলিয়া স্থান করে নিয়েছে। ইটালির পরিচালক ইতালি স্পিনেলির ছবি ‘গাঙ্গোর’ (২০১০) তৈরি হয়েছে মহাশ্বেতা দেবীর গল্প অবলম্বনে, যার শুটিং এখানেই হয়েছিল।
ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতেও অনেকগুলি ছবির শুটিং হয়েছে। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের বিখ্যাত ছবি ‘সন্ন্যাসী রাজা’ (১৯৭৫)। ভাওয়াল সন্ন্যাসী রহস্যের উপর ভিত্তি করে নির্মিত এই চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য যখন রাজবাড়িতে ছিলেন উত্তমকুমার, তাকে চিংড়ির মালাইকারি রেঁধে খাইয়েছিলেন এক ভদ্রমহিলা। তার সঙ্গে চাইলে আলাপ করাই যায়। এখানেই শুটিং হয়েছিল সন্দীপ রায়ের ‘টিনটোরেটোর যিশু’ (২০০৮) এবং ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ (২০১৯)।
হিট ছবির শুটিং লোকেশনের ফটোগ্রাফ দিয়ে কেউ সাজিয়ে তুলছেন রিসর্টের ডাইনিং স্পেস, বেডরুম, রিসেপশন। কেউ বা আবার শুটিং স্পটগুলি তুলে ধরছেন সংস্থার ওয়েবসাইট এবং ব্রোশিওরে। যাদবপুর ফিল্ম স্টাডিজের অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের মতে, সেলুলয়েডে মোড়া প্রকৃতির যে সৌন্দর্য, তার গুণগত মান অনেক বেশি। গল্পের অংশ হিসেবে দেখানো হয় বলে দর্শকদের তা অনেক বেশি আকর্ষণ করে। তাই বেশ কিছু দিন ধরেই বাংলা ছবির সেট ফেলা হচ্ছে নয়নাভিরাম সব জায়গায়। ঋতুপর্ণ ঘোষ, অঞ্জন দত্ত, গৌতম ঘোষ, সন্দীপ রায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবিগুলিতে প্রবল ভাবে উঠে এসেছে উত্তরবঙ্গের চা-বাগান, জঙ্গল, পাহাড়ি পথঘাট, বনবাংলো। সন্দীপ রায়ের ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’ ছবিতে দেখানো বৈকুণ্ঠপুর ফরেস্ট। সবই মন টেনেছে দর্শকদের।
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে তিন গাড়ির সংঘর্ষ, আহত ১২
- নার্সারিতে বাহারি ফুলের চাষ করে সফল দুলাল
- সবজিতে স্বস্তি, আগের দামে ফিরল গরু ও মুরগির মাংস
- কুম্ভমেলায় যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ১০
- দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বাড়তে পারে
- ছুটির দিনেও ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বায়ু
- বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জন্মদিন আজ
- ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তির লড়াইয়ে দেড় লাখ শিক্ষার্থী
- মেট্রোরেলে একদিনে যাত্রী পরিবহনে রেকর্ড
- সাভারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, শিশুসহ দগ্ধ ১১
- ফাল্গুনে ভালোবাসায় ঘোরাঘুরি
- যাদের আত্মত্যাগে এলো ভালোবাসা দিবস
- ভালোবাসা দিবসে শতাধিক নাটক
- খুলনায় একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম দিলেন নারী
- সংকট কাটেনি ভোজ্যতেলের, বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম
- জুরিবোর্ডে ইলিয়াস কাঞ্চন ও বাঁধন
- ফেসবুকে কত ভিউ হলে কত টাকা আয় হয়?
- নারী ক্রিকেটে জ্যোতির ইতিহাস
- ভয়ংকর মাদকে আসক্ত তিশা-টয়া-সাফা!
- বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়া কাপ নিয়ে গেল ভারত
- রাজধানীতে বুধবার যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ
- ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টাইগারদের সিরিজ জয়
- প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে স্মৃতি মান্ধানার কীর্তি
- দেশীয় ওটিটিতে জয়া আহসান
- অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপে সুপার ফোরে বাংলাদেশ
- নগরীর অভিজাত তারকা হোটেলে ক্রিসমাস
- নারীদের জন্য কঠোর পোশাকবিধি আইন স্থগিত করল ইরান
- সংসার পাততে সপরিবারে ভারত ছাড়ছেন কোহলি
- চলে গেলেন ভাষা সৈনিক মরিয়ম বেগম
- নারী এশিয়া কাপে ভারতের কাছে ৮ উইকেটের হার বাংলাদেশের