ঢাকা, শুক্রবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৩২:১৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে জুবাইদা রহমান ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের ইতিবাচক সাড়া নেই’ বেশির ভাগ সবজিই ৬০-৮০ টাকার ওপরে বন্যায় সহায়তা: বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানালেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

কবর দেওয়ার পরেও ৪০ বছর বেঁচেছিলেন  যে নারী !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:২৯ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২২ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কবর দেওয়ার পরও প্রায় ৪০ বছর বেঁচেছিলেন এক নারী। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এই ঘটনা কিন্তু বাস্তবে ঘটেছিল। ঐ নারীর নাম এসি ডানবার। এই ঘটনা আজও মানুষকে ভাবায়। ইতিহাসের অন্যতম সৌভাগ্যবতী হিসাবেও তার নাম বার বার উঠে আসে।
১৮৮৫ সালে কানাডার দক্ষিণ ক্যারোলিনার ব্ল্যাকভিলে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোট থেকেই তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ১৯১৫ সালে তার যখন ৩০ বছর বয়স, হঠাৎই এক দিন দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে চোখ উল্টে পড়ে যান তিনি। মৃগীর কারণেই তার এই দশা হয়। এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে, দীর্ঘ সময় তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন। তাকে এই অবস্থায় দেখে দক্ষিণ ক্যারোলিনার এক চিকিৎসককে ডেকে পাঠান পরিবারের সদস্যেরা। তিনি এসে ডানবারের শ্বাস-প্রশ্বাস এবং নাড়ির গতি পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ডানবারের পরিবারের সদস্যেরা। শেষকৃত্যের জন্য একটি কাঠের কফিনে তার মৃতদেহটি রাখা হয়। ঘটনার পরের দিন বেলা ১১টার দিকে ফুল, মালা দিয়ে সুন্দর ভাবে সাজানো হয় ডানবারের মৃতদেহ। তখনকার দিনে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে খুব বেশি আয়োজন হতো না। তাই প্রস্তুতির পরিমাণও ছিল সামান্য। সব প্রক্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করার চেষ্টা করতেন মৃতের পরিবারের লোকজন। ডানবারের ক্ষেত্রে এর অন্যথা হয়। তাকে সমাধিস্থ করার সময় তিন জন মন্ত্র পড়েন। তাই ডানবারকে সমাধিস্থ করার পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে বেশ খানিকটা সময় লাগে।

ডানবারের কফিনটি সমাধিস্থ করতে ছয় ফুট লম্বা গর্ত করা হয়। মন্ত্র পড়া শেষ হলে কফিনটি এই গর্তে নামিয়ে মাটি দিয়ে চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। ডানবারের বোন থাকতেন পাশের শহরে। দুই বোনের মধ্যে সখ্য ছিল প্রবল। সেই কারণে তাকে ডানবারের আকস্মিক মৃত্যুর বিষয়ে অনেক দেরিতে জানানো হয়েছিল। ডানবারকে সমাধিস্থ করার কিছু পরেই এসে পৌঁছন তার বোন। উপস্থিত সবাই অনুরোধ করেন, তাকে যেন অন্তত এক বার ডানবারকে দেখতে দেওয়া হয়। অনেক বিবেচনার পর স্থানীয় গির্জার তরফে কফিনটি খুঁড়ে বার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মাটির নীচে থেকে কফিন তুলে আনার পর উপস্থিত সবাইকে দেখেন, সেই কফিনের ঢাকনা খোলা!

কফিনের ঢাকনা তুলতেই ডানবারের বোন দেখেন ডানবার তার দিকে প্রাণবন্ত হাসি নিয়ে তাকিয়ে আছেন। এই ঘটনায় ভয় পেয়ে যান সবাই। মনে প্রশ্ন জাগে যাকে দেখছেন তিনি কি আদৌ জীবিত? মৃত ডানবারকে হাসতে দেখে ভয় পেয়ে যান উপস্থিত সবাই। স্থানীয় গির্জার তিন সদস্য ভয়ে কবরে পড়ে যান। এর মধ্যে বাকি দুই জনের চাপে এক জনের পাঁজরের হাড়ও ভাঙে। ডানবার জীবিতই ছিলেন। তিনি মৃগী রোগে এতটাই কাবু হয়ে পড়েন যে, তার শ্বাস-প্রশ্বাস খুব ক্ষীণ ভাবে চলছিল। আর তা দেখেই তাকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসক।

কবর থেকে উঠে আসার পর অবশ্য আবার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে জানানো হয়, ডানবার মারা যাননি, তিনি জীবিতই আছেন। পরে নিজের ভুল স্বীকার করে নেন সেই চিকিৎসক। এই ঘটনার পর আরো ৪০ বছর বেঁচে ছিলেন ডানবার। ১৯৫৫ সালে বার্ধক্যজনিত সমস্যার কারণে তিনি স্বাভাবিক ভাবেই মারা যান। তবে এই ঘটনার পর থেকে ব্ল্যাকভিলের সবাই এসি ডানবারকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেন। অনেকেই তাকে অশরীরী বলে মনে করতেন।

ডানবারের কাহিনি বছরের পর বছর ধরে ব্ল্যাকভিলের মানুষের গল্পে বেঁচে রয়েছে। জ্যান বন্ডেসন নামে এক লেখকের বই ‘বারিড অ্যালাইভ: দ্য টেরিফাইং হিস্ট্রি অব আওয়ার মোস্ট প্রাইমাল ফিয়ার’-এ ডানবারের কাহিনি বর্ণনা করা রয়েছে।

সূত্র: আনন্দবাজার