ঢাকা, মঙ্গলবার ০৮, জুলাই ২০২৫ ১৮:২৪:১০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু ২৪ জুলাই চীনে স্কুলের খাবার খেয়ে হাসপাতালে ২৩৩ শিশু গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের প্রাণহানী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল দেখবেন যেভাবে দুপুরের মধ্যে ৭ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা

জেনে নিন কাবাবের ইতিহাস ও রেসেপি

নিপু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:২৭ পিএম, ১৩ জুন ২০২৫ শুক্রবার

বিফ বটি কাবাব।

বিফ বটি কাবাব।

কাবাব হল মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বিভিন্ন রকম রান্না করা মাংসের পদ। এই খাবারের বিভিন্ন ধরন বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়। অঞ্চল ভেদে সারা পৃথিবীর মানুষই কাবাব খেতে ভীষণ পছন্দ করে। 

বেশিরভাগ ইংরেজিতে বার্তালাপকারী দেশসমূহতে কাবাব সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে শিক কাবাব বা শাশলিক নামে পরিচিত। যদিও উত্তর আমেরিকার বাইরে কাবাব বলতে বোঝায় পথ চলতি খাবার বা ডোনার কাবাব বা এর বিভিন্ন বৈচিত্র্য। 

মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল এবং মুসলিম বিশ্বের ভাষায়, কাবাব হল বিভিন্ন ধরনের পোড়ানো মাংসের খাবারগুলোর মধ্যে একটি। মধ্যপ্রাচ্যের কাবাব থেকে প্রাপ্ত কিছু খাবারের স্থানীয় ভাষায় বিভিন্ন নাম থাকতে পারে, যেমন চৈনিক চুয়ান।

কাবাব পদগুলোতে কাটা বা পিষান মাংস বা সীফুড ব্যবহার করা হয়, কখনও কখনও নির্দিষ্ট রন্ধন প্রণালী অনুসারে এর সঙ্গে ফল, শাকসবজি এবং অন্যান্য বিভিন্ন অনুষঙ্গ ব্যবহার হয়। যদিও কাবাবগুলি প্রায়শই আগুনের উপরে লোহার শিকে গেঁথে রান্না করা হয়। এগুলো আগুনের ওপর এইভাবে না রেখেও রান্না করা যায়। আগুনে একটি পাত্রে রেখে শেঁকে (বেক) বা ভাপে সিদ্ধ করেও প্রস্তুত করা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাবাবের জন্য ব্যবহৃত মাংস ভেড়ার মাংস হয়। তবে আঞ্চলিক রন্ধন প্রণালীগুলোতে গরুর মাংস, ছাগল, মুরগী, মাছ, শূকরের মাংস ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

কাবাবের ইতিহাস:
মধ্যপ্রাচ্যে হোমিনিন প্রজাতির আগুনের ব্যবহার করে রান্নার প্রমাণ ৭৯০,০০০ বছর আগেও পাওয়া গেছে। কমপক্ষে ২৫০,০০০ বছর আগেকার প্রাগৈতিহাসিক আখা, মাটির উনুন এবং প্রাণীদের পোড়া হাড় ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে পাওয়া গেছে। 

আকরোতিরির মিনোয়ান বসতি খনন করে আগুনের ওপর শিক রাখার জন্য পাথর পাওয়া গেছে। যেগুলো খ্রিস্টপূর্ব ১৭শ শতকের আগে ব্যবহার হয়েছে। প্রাচীনকালে, হোমারের লেখা ইলিয়াড (১.৪৬৫) থেকে স্পিট-এ (একটি লম্বা কঠিন দণ্ড, যা খাদ্য ধরে রাখতে ব্যবহৃত হয়) রেখে মাংস পোড়ানোর কথা পাওয়া গেছে। প্রাচীন ভারতীয় রচনা মহাভারতেও স্পিট-এ পোড়ানো মাংসের কথা পাওয়া গেছে।

ইবনে সাইয়ার আল-ওয়ারাক-এর দশম শতাব্দীর বাগদাদী বই কিতাব আল-তাবিখ, যেখানে পরম্পরায় পাওয়া মেসোপটেমিয়া, পারস্য এবং আরব খাবারের একটি মিশ্রিত রন্ধন প্রণালী আছে, সেখানে কাটা মাংসের কাবাবের বর্ণনা রয়েছে, সেগুলো হয় পাত্রে রেখে ভাজা বা আগুনে পোড়ানো।এই অঞ্চলে, ছোট ছোট খণ্ড বা মাংসের টুকরোগুলো রান্না করার পদ্ধতিটির একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যেখানে কসাইয়ের দোকানে মাংসের ছোট ছোট টুকরো পাওয়া যেত এবং রান্নার জ্বালানী তুলনামূলকভাবে খুব কম পাওয়া যেত, সেই শহরগুলোতেই এগুলো তৈরি করা হত। তুলনামূলকভাবে ইউরোপে মাংসের বড় বড় টুকরো একসাথে পুড়িয়ে রান্না করা হত। প্রকৃতপক্ষে, বহু সংস্কৃতিতে পাওয়া গেছে লোহার শিকে মাংস গেঁথে আগুনের উপরে রেখে রান্না করা। এখানে অ্যান্টিকুচো’র  কথা বলা যায়। যেটি ইউরোপ এবং এশিয়ার সাথে যোগাযোগের অনেক আগে থেকেই দক্ষিণ আমেরিকায় রান্না করা হত।

তবে ইংরেজিতে কাবাব বা শিশ কাবাব বলতে কখনও কখনও একটি রন্ধনসম্পর্কীয় শব্দ হিসাবে ব্যবহার হয়। যেটি কোনও শিকের উপরে ছোট ছোট মাংস রান্না করাকে বোঝায়। কাবাব মূলত পারস্য এবং তুরস্কের মধ্যযুগীয় রান্নাঘরে তৈরি মাংসের বিভিন্ন খাবারগুলোর সাথে সম্পর্কিত। যদিও শব্দটির উৎস প্রাচীনকালের সঙ্গে সম্পর্কিত। তুর্কিরা একে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। যেগুলো লোহার শিকে রান্না করা হত, তবে স্টু, মাংসের বল এবং অন্যান্য ধরনেও রান্না হত। 

মুসলিম প্রভাবের সাথে সমান্তরালভাবে এই খাবারটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।মরক্কো ভ্রমণকারী ইবন বতুতার মতে, দিল্লি সুলতানির সময় (১২০৬-১৫২৬) রাজবাড়িতে কাবাব পরিবেশিত হত, এমনকি সাধারণ মানুষেরাও প্রাতঃরাশে নানের সাথে এটি উপভোগ করত। কাবাবের রন্ধন প্রণালী স্থানীয় রান্নার শৈলী এবং অভিনবত্বের সাথে গৃহীত হয়েছে এবং সংহত করা হয়েছে। এখনকার সর্বব্যাপী পথচলতি খাবার ডোনার কাবাব থেকে শুরু করে, সুতি কাবাব ও শিশ কাবাবের বিভিন্ন প্রকরণ সারা এশিয়াসহ বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়।

কাবাবের ইতিহাস তো জানলেন। এবার জেনে নিন বিফ বটি কাবার তৈরির রেসিপি:

আগেই বলেছি কাবাব সবার পছন্দের একটি খাবার। গরু, খাসি ও মুরগীর মাংস দিয়ে তৈরি করা যায় বিভিন্ন ধরণের মুখরোচক কাবাব। নিশ্চই বটি কাবাবের নাম অনেকে শুনেছেন এবং বাইরেও খেয়েছেন। বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে যদি বাসায় নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন বটি কাবাব তাহলে তো কোন কথাই নেই। তাই জেনে নিন বিফ বটি কাবাব বানাতে কি কি লাগবে।

উপকরণ
গরুর মাংসের মোটা টুকরা (আধা কেজি), ১/২ কাপ টকদই দেঢ় টেবিল চামচ, আদা বাটা আধা টেবিল চামচ, রসুন বাটা, লবণ (প্রয়োজনমত), গোলমরিচ গুড়ো ১/৩ চা চামচ, ২ টি বড় পেঁয়াজ (মোটা টুকরা করে কাটা), ১ টি ক্যাপসিয়াম টুকরা, ঘি ও সয়াবিন তেল।

প্রণালী
গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে ৮ টি মোটা ও ছোট টুকরা করে নিন। মাংসের টুকরা গুলো একটি কাটা চামচ দিয়ে ফুটো করে নিন। এতে মসলা মাংসের মধ্যে ঢুকবে। টকদই, আদা বাটা, রসুন বাটা, লবণ, গোলমরিচ গুড়া দিয়ে মাংসের টুকরা গুলো ভালো করে মাখিয়ে মেরিনেট করুন ১২ ঘন্টা। অন্তত ৬ ঘন্টা মেরিনেট করতে ববে।

মেরিনেট করা হয়ে গেলে মাংসের টুকরা গুলো কাঠির মধ্যে ঢুকিয়ে এর উপরে ভালো করে ঘি মাখিয়ে বারবিকিউ মেশিনে গ্রিল করে নিন। গ্রিল করতে না চাইলে ফ্রাইং প্যানে ঘি মাখিয়ে ভেজে নিতে পারেন। মাংস ঠিকমত গ্রিল/ ভাজা হলেই আপনার কাবাব তৈরী। পেঁয়াজ ও ক্যাপসিকাম হাল্কা তেলে ভেজে নিয়ে কাবাবের সাথে পরিবেশন করুন মজাদার এই বটি কাবাব।