ঢাকা, শুক্রবার ২৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৩:১৪:০৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান… পূর্বাচল ৩০০ ফিটে নেতাকর্মীদের ঢল মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত পোস্টাল ভোটে নিবন্ধনের সময় বাড়লো হাদি হত্যায় মোটরসাইকেল চালকের সহযোগী গ্রেপ্তার ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে নিষিদ্ধ করল সরকার

সহিংসতার শিকার ৯৭ ভাগ নারী ‘বিচার’ পান না

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:০১ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার

বাংলাদেশে সহিংসতার শিকার ৯৭ শতাংশ নারী ‘বিচার’ পান না। দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার দুই-তৃতীয়াংশই পারিবারিক। আর সহিংসতার শিকার প্রায় ৯৭ শতাংশ ভুক্তভোগীর অভিযোগ আদালতে শুনানির পর্যায়ে যায় না বা গেলেও বাতিল হয়ে যায়। মাত্র ৩ শতাংশ ভুক্তভোগী নিজেদের পক্ষে বিচার পান।


আজ সোমবার রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে ‘বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার উপর দৃষ্টিপাত : প্রবণতা এবং সমাধান’ শীর্ষক একটি গবেষণায় এমন তথ্য তুলে ধরে একশন এইড বাংলাদেশ ও জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম (জেএনএনপিএফ)। 

একশন এইড বাংলাদেশ এবং জেএনএনপিএফ ১৬ দিনব্যাপী নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপনের প্রেক্ষাপটে ২০টি জেলার ২ হাজার ৮০০টি ঘটনার তথ্য নিয়ে এই গবেষণা করে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন গবেষক আহমেদ ইব্রাহীম।

গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা সম্পর্কিত মামলাগুলোর প্রতি পাঁচটির মধ্যে চারটি মামলাই আদালতে উত্থাপিত হতে ২ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যায়। তারপর বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। 

এতে আরো বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ৭৫ শতাংশ প্রতিবেদনই ধর্ষণ সম্পর্কিত। যেখানে এই প্রতিবেদন বলছে, বেশিরভাগই পারিবারিক সহিংসতার বিষয়। অর্থাৎ, গণমাধ্যম বাড়ির বাইরের সহিংসতা এবং যৌন সহিংসতাকে অধিক হারে তুলে ধরে। এভাবে ‘নারীরা বাড়িতে নিরাপদ’- এই ধারণাকে স্থায়ী করে রাখা হয়েছে। তবে গবেষণা বলছে, নারীরা ঘরেই বেশি অনিরাপদ।

একশন এইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ঘরে-বাইরে সব জায়গায় আমরা নির্যাতন মেনে নিচ্ছি। আবার যেখানে গিয়ে নির্যাতনের সুরাহা বা বিচার পাওয়া উচিৎ তা পাওয়া যাচ্ছে না। যখনই আমরা কোনো না কোনো নির্যাতনকে মেনে নিচ্ছি তখনই আসলে আমরা সহিংসতাকে সমর্থন করছি। 

দৈনিক ইত্তেফাক-এর সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, নারীদের ছোটবেলা থেকেই যেকোন সমস্যা লুকিয়ে রাখার শিক্ষা দেওয়া হয়। যতদিন পর্যন্ত আমাদের বিচার ব্যবস্থা ন্যূনতম পর্যায়ের নিরপেক্ষ না হবে ততদিন এই সমস্যার সমাধান হবে না। 

নারীনেত্রী ও নিজেরা করি-এর সমন্বয়ক খুশি কবির বলেন, নির্যাতনের শিকার নারী থানায় গিয়েও অভিযোগ দিয়ে সহযোগিতা পান না। আইনি জটিলতায় বিচার পেতে অনেক সময় লাগে। একজন নারী বা একটি পরিবারের পক্ষে টাকা খরচ বা সময় দিয়ে পরিশেষে বিচার পাওয়া খুবই কঠিন। সে কারণে অধিকাংশ মামলার বিচার আলোর মুখ দেখে না।

সেমিনারে গবেষণায় কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো হলো, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ঘরে এর ব্যাপকতাকে নির্মূল করার জন্য আইন করা এবং তার বাস্তবায়ন করা; জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নারীরা যেন ঘরে সংঘটিত সব ধরনের সহিংসতা চিহ্নিত করতে পারে সে বিষয়ে তাদের সচেতনতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করা; নারীরা যাতে সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদ, প্রতিরোধ কিংবা অভিযোগ করতে পারে তার জন্য সব তথ্য দিয়ে সহযোগিতা নিশ্চিত করবে সরকার; নারীরা যাতে সঠিক উপায়ে আইনগত অভিযোগগুলো দাখিল করতে পারে সে বিষয়ে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া এবং গণমাধ্যমের উচিৎ পারিবারিক সহিংসতার বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচারে নজর দেওয়া।