আমরা যারা বাঙ্গালী তাদের ছেলেবেলা থেকেই সবচেয়ে কাছের পোষাক শাড়ি। কারণ এটা আমার মায়ের পোষাক। এটা আমার মায়ের একমাত্র পোষাক।

ঋতুচক্রের কথা শুনলেই আমরা অজান্তেই ভ্রুযুগল কুচকে ফেলি। এসব গোপনীয় আলোচনা প্রকাশ্যে কেন? আড়ালে-আবডালে এসব নিয়ে কথা বলা যায় না? এসব ভাবতে থাকি।

ক্লাইমেট চেঞ্জ, বাংলায় জলবায়ু পরিবর্তন কোনটাই সহজভাবে বোঝার বিষয় নয় বলেই বিশেষজ্ঞরা একটা ভাব করে থাকেন। বুঝবে বিশেষজ্ঞরা আর ভুগবে সাধারণ মানুষ।

শুরুতেই ছোট্ট একটি ঘটনা বলি। গত ১০ আগস্ট আমার গৃহকর্মে সাহায্যকারী মেয়েটি এসে বললো, মেয়ের বিয়ে দিয়ে আসলাম কালকে। আমি আঁতকে উঠে জিজ্ঞাসা করলাম, সেকি! কেন? উত্তর দিল, ভাল ছেলে পাইয়াছি, বিয়ে দিয়ে দিনু।

প্রায় দশ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে শিক্ষকতা করছি। এখন পর্যন্ত যাদের পড়িয়েছি আর এখন যাদের পড়াচ্ছি, সেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের প্রায় শতভাগই বলে, তারা বাবা-মা এবং অন্য সবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়তে এসেছে।

কিছু দিন যাবত দেশের পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা, সমালোচনা হচ্ছে।

সম্প্রতি আমরা ধর্ষণসহ নানা ধরনের যৌন নির্যাতনের যেসব খবর গণমাধ্যমে দেখছি, তাতে এ দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে : এক. বর্তমান সময়ে এ ধরনের অপরাধের সংখ্যা বা পরিমাণ বেড়ে গেছে; এবং দুই. এ সংখ্যা বা পরিমাণ সবসময়ই এমন ছিল - এখন কেবল প্রকাশের সংখ্যা বেড়েছে। 

জেন্ডার বাজেট মানে নারীর জন্য আলাদা কোনো বাজেট নয়, বরং এটি একটি বিশেষ পদ্ধতি যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় হিসাব-নিকাশের সাহায্যে জাতীয় বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা বিশ্লেষণ করা যায়।

নারীর অধিকার অর্জনে তাদের শিক্ষিত করে তোলা খুব জরুরি। এর পাশাপাশি নারী যেন কর্মজীবনে প্রবেশের জন্যে দরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে, সেটিও নিশ্চিত করা চাই। তবে কর্মক্ষেত্রে সহজ প্রবেশই শেষ কথা নয়; নারীদের যেন অকারণ কর্মজীবন ত্যাগ করতে না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।

দুইদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত এক সহকর্মীর স্বামী কতৃক নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা পড়ছি আর ভাবছি - কি দারুন সমাজ সংসার!

অপরাধী শাস্তি না পেলে সে বার বার অপরাধমূলক কাজ করতে থাকে। যার ফলে সমাজে অপরাধ বৃদ্ধি পায় এবং এতে অন্যরা অপরাধে জড়াতে উৎসাহিত হয়। 

ভারতের পরাজয়। আবার প্রমান করিল যে, ক্রিকেটে শেষ কথা বলে কিছু নেই। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ভারত ছিটকে গেল ফাইনালের রেস থেকে।

ছোট্ট সায়মার বুঝি আকাশ দেখার ইচ্ছে হয়েছিলো। তাই ঘর ছেড়ে ও গিয়েছিলো ছাদে। নীল আকাশে নাচবে সে। বোঝেনি নিস্পাপ বালিকা, আকাশের নিচে সেদিন ছিলো কালো থাবা। সে থাবায় রক্তাত্ব হয় সে।

স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর ৪০% ভ্যাট গতবছরই আরোপ করা হয়। এবারও এ উচ্চকর অপরিবর্তিত  রাখা হয়েছে। এ নিয়েই বিতর্ক ও সমালোচনা উঠেছে।

প্রতি বছরের মত এবছরও রোজার মাসে ভোক্তা অধিকারের প্রতি প্রশাসনের উদ্যোগ যখন শুরু হয় তখন প্রথম দিকে হয়তো  বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব বেশি আগ্রহ প্রকাশ করিনি।

একটা শিশুর জীবনে পরিবারের ভূমিকা অশেষ। কিন্তু এই সম্পর্কে কতখানি সচেতন থাকে একজন বাঙ্গালী শিশু। যদি তাকে প্রশ্ন করা হয়, তোমার জীবনে পরিবার কতখানি গুরুত্বপূর্ণ।

তুমি কার সাথে এতক্ষণ মোবাইলে কথা বললা? আগেতো শুনিনি এ নামে কোনো বন্ধু বা কলিগ আছে?
এতো সাজগোজ করছো কেনো আজকাল?

শিরোনামটা মাথায় আসলো আমার এক সহকর্মীর ফেসবুক পোস্ট দেখে। সেখানে তিনি লিখেছেন, তার সরকারি চাকুরিজীবী এক রুমমেটকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রেমের বিয়ে হওয়া স্বত্ত্বেও যৌতুক ও স্বামীর পরকিয়ার জেরেই প্রাণ দিতে হল একজন শিক্ষিত নারীকে।    

ভারতীয় উপমহাদেশের বিগত কয়েক হাজার বছরের সংস্কৃতিতে আমরা দেখি, নারীকে এখানে ‘দেবি’ জ্ঞানে উপাসনা করা হয়ে আসছে। প্রাচীন শাস্ত্রের গাথা আর ধ্রুপদী সাহিত্যে আমরা এর অজস্র প্রমাণ পাই।

সমাজের বদলটা খাতা কলমে যেমন আছে তেমনি বাস্তবে দেখতে পাই নিজেকে দিয়ে। বলছিলাম নারীদের বিষয় নিয়ে। আমাদের পরিবারগুলো এখনও মেয়েদের একজন মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার পথে অনেক বাঁধা। সক্ষম মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার যে স্বপ্ন তা থেকে একটি মেয়েকে দূরে রাখা হয় এখনও।

এশিয়ায় নারীবাদ নিয়ে চর্চা হচ্ছে বহু যুগ থেকেই। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় এশিয়ার ফেমিনিজম বা নারীবাদকে পাশ্চাত্যবাসীরা সাধারণতঃ একটু অবজ্ঞার চোখেই দেখে।

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের জন্য কি একই কথা আমরা বারবার বলছি? আবার সভা, সেমিনার, গোলটেবিলের আলোচনা শুনতে শুনতে কি ত্যাক্ত-বিরক্ত হচ্ছি?

মানুষ হিসেবে অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়েই একসময় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন শুরু হয়েছিল। সেই লড়াই এখনও চলছে। আপাতদৃষ্টিতে গত দুশ বছরে নারীর অনেক অর্জন আছে।

একসময় পালিত হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস’। এখন তা পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে। অর্থাৎ দিবসটি একটি সার্বজনীন রূপ পেয়েছে, এর সরাসরি অংশীজনের আওতা বেড়েছে।