ঢাকা, শনিবার ১১, মে ২০২৪ ৮:৩৫:৫০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ফের অস্থির ডিমের বাজার, স্বস্তি নেই মাছ-মাংসেও এখনও ভিসা পাননি ৩৮ হাজার হজযাত্রী ভেস্তে গেল যুদ্ধবিরতির আলোচনা, রাফায় ইসরায়েলের হামলা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা গুচ্ছের ‌‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বসছে ৪০ হাজার শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়ি গেলেন প্রধানমন্ত্রী

নকশিকাঁথা তৈরি করে সফল উদ্যোক্তা দেলোয়ারা

| উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:০১ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০২১ বুধবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নকশিকাঁথা জামালপুরের ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। দেশেবিদেশে ন্দনিকতার ছাপ পড়েছে হস্তশিল্পে। নানা বয়সের নারীরা বসে না থেকে এ শিল্পকে আজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দিচ্ছে তাদের হাতের কারু কাজ। এমনই একজন সফল উদোক্তার নাম দেলোয়ারা বেগম।
তার নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে ২০ বছরে আজ জামালপুর জেলার বিখ্যাত নকশিকাঁথা ও অন্যান্য হস্তশিল্প তৈরির এক সফল দক্ষ উদ্যোক্তা। এখন তিনি ‘দীপ্ত কুটির’ নামের কোটি টাকার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার ঘাম ঝড়ানো দীর্ঘ জীবনের পথচলায় আজ সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছে। দেলোয়ারা বেগমের বয়স ৪৮ হলেও আজো একজন তরুণীর মতোই ব্যবসা সামলাচ্ছেন।

দেলোয়ারা বেগম ছোট থেকেই চঞ্চল ছিলেন। প্রবল আগ্রহ ছিল তার নিজের চেষ্টায় কিছু করার। সে চেষ্টায় কিছুটা বাধা পেলেন ১৮ বছর বয়সে। এ সময় তার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর সংসারে সীমিত আয়ের ধাক্কা। উদ্যমী দেলোয়ারা কিছু করার চেষ্টা করলেন। সেই ‘কিছু’ করাটা ছিল সেলাই ও কাপড়ে নকশার কাজ। নিজে সেলাইয়ে হাতেখড়ি নিলেন। পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি আর পুরোনো একটি সেলাই মেশিন নিয়ে যাত্রা শুরু সেলাই-ফোঁড়াইয়ের। জীবনের লক্ষ্য ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে তিনি এখন দাঁড় করিয়েছেন কোটি টাকার ব্যবসা। একই সঙ্গে বহু নারীকে সেলাই, পোশাক তৈরি, নকশা, রং করা, বাটিকসহ নানা কাজ শিখিয়ে পারদর্শী ও স্বাবলম্বী করে তুলেছেন।

নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে ২০ বছরে আজ জামালপুর জেলার বিখ্যাত নকশিকাঁথা ও অন্যান্য হস্তশিল্প তৈরির এক সফল দক্ষ উদ্যোক্তা।
নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে ২০ বছরে আজ জামালপুর জেলার বিখ্যাত নকশিকাঁথা ও অন্যান্য হস্তশিল্প তৈরির এক সফল দক্ষ উদ্যোক্তা।


দেলোয়ারা বেগমের বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ শহরে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। ১৯৯০ সালে বিয়ে হয় চাকরিজীবী স্বামী নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে। শ্বশুরবাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউপির হাজিপুর এলাকায়। স্বামীর চাকরির সুবাদে বিয়ের সাত বছর পর ঢাকার বাসাবোতে থাকতে শুরু করেন। সংসারে তখন দুই সন্তান। স্বামীর সীমিত আয়ে ভালো চলছিল না সংসার। তাকে সহযোগিতার জন্য ঢাকায় যুব উন্নয়নের সেলাই প্রশিক্ষণ, পোশাক তৈরি, ব্লক বাটিক ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন পণ্যের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। 

এরপর ২০০০ সালে স্বামীর বদলিজনিত কারণে দেলোয়ারা বেগম চলে আসেন জামালপুর শহরের ঢাকাইয়া পট্টি এলাকায়। মাসখানেক পর পাঁচ হাজার টাকার পুঁজি ও একটি সেলাই মেশিন নিয়ে সেখানে গড়ে তোলেন দীপ্ত কুটির। এখন দীপ্ত কুটিরের পুঁজি গিয়ে দাঁড়িয়েছে কোটি টাকার বেশি। এছাড়া ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট ও মনিপুরে একটি শোরুম করেছেন দেলোয়ারা বেগম। জামালপুর শহরে ৩ শতাংশ জমির ওপর নির্মাণ করছেন ছয়তলা ভবন। এ ভবনে নতুন করে শুরু করেছেন বিশাল কর্মযজ্ঞ। এই ভবনে থাকবে নিজেদের থাকার ফ্ল্যাট, প্রশিক্ষণকেন্দ্র আর বিশাল শোরুম। দেলোয়ারার প্রতিষ্ঠানে এখন চাকরি করছেন ৪২ জন কর্মী। তাদের বেশির ভাগই নারী।

এ বিষয়ে দীপ্ত কুটিরের কর্ণধার নকশী সুচী শিল্পি ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সেরা নারী উদ্যোক্তা নির্বাচিত ব্যবসায়ী দেলোয়ারা বেগম জানান, দেশি ও বিদেশি ক্রেতাদের নকশী পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট করতে সুঁই সতার নানান বৈচিত্র এনে দীপ্ত কুটির দ্বিতীয় শাখার উদ্বোধন করা হয়। যাতে ক্রেতাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে পছন্দের পণ্যটি প্রিয়জনের জন্য কিনতে পারে। আর নতুন এ শাখায় থাকবে নকশী শাড়ি, থ্রি পিস,টু পিস, লেহেঙ্গা, পাঞ্জাবি, ফতুয়াসহ নানা সূতি পণ্য।

নকশিকাঁথা পাশাপাশি পরিধানের বস্ত্র হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে নারীদের হাতের করুকাজ করা থ্রি পিস, শাড়ি, ওড়না, বেড কভার, কুশন কভার, ওয়াল মেট, বালিশের ওয়ার, শাল ও চাদর। নকশিকরা পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টিসার্ট গেঞ্জিসহ নানা রকমের পরিধানের বস্ত্রের প্রতিও আকর্ষণ বেড়েছে। চাহিদার ব্যাপ্তি দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।