ঢাকা, মঙ্গলবার ১৬, এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৩০:০৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে ফিরেছেন ২১ লাখেরও বেশি সিমধারী ভাসানটেকে আগুন: মায়ের পর মারা গেলেন মেয়েও ফরিদপুরে বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১১ রাজধানীতে ফিরছে মানুষ লক্ষ্মীপুরে ঘরে ঢুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে ১৫ জনের মৃত্যু

নারীদের বেকারত্ব দূর করার স্বপ্ন উদ্যোক্তা রোমেনার

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:২৯ পিএম, ৮ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার রোমেনা আক্তার মনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তিনি। তার সেলাই কারখানায় কাজ করেন চারজন কারিগর। কর্মীদের পারিশ্রমিক দিয়েও মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। শখের বশে সেলাই শিখে আজ তিনি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি গত ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয় মনির পথচলা। বিয়ের পর নিজ কন্যা সন্তানের পোশাকাদি তৈরি করবেন, এমন শখের বশে বড় বোনের কাছ থেকে সেলাইয়ের কাজ শেখেন তিনি। পরবর্তী সময়ে সেই শখের শেখা কাজ এখন পেশায় রূপ নিয়েছে।
গত ২০১১ সাল থেকে শখের সেলাইকে কাজে লাগান রোমেনা। শুরু করেন নিজ হাতের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের লেডিস পোশাক অনলাইন-অফলাইনে বেচাকেনা। তখন থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। চলছেন আপন শক্তিতে।
মনি জানান, তার ইচ্ছা নিজেকে স্বাবলম্বীর পাশাপাশি এই হাকিমপুরের বেকার নারীদেরও স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলবেন। তাই তিনি হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরাম নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই সংগঠনের তিনি সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনে রয়েছেন ৩৬ জন নারী সদস্য। এখন সদস্য সংখ্যা আরও বেড়েই চলছে। নতুন করে সদস্য হওয়ার জন্য অনেকেই আবেদন করেছেন। প্রত্যেক নারীই একেকজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠেছেন।
দিনাজপুর হাকিমপুর হিলি স্থল বন্দরে রোমেনা আক্তার মনির বসতবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন পোশাকের শো-রুম। সেলাই কারখানা। সেখানে কাজ করেন ৪ জন পুরুষ কারিগর। রোমেনা একজন দক্ষ কাটিং মাস্টার। তার কারখানায় তৈরি হয় নারীদের সব ধরনের পোশাক। বিভিন্ন ডিজাইনে কাপড় কাটেন তিনি, আর কারিগররা তা সেলাই করেন। আবার কাপড়ে নানা রকমের ফুলও তৈরি করেন তিনি। এসব ডিজাইনের পোশাকের ব্যাপক চাহিদা তার অনলাইন ও অফলাইনের ক্রেতাদের কাছে। তার একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে। সেখান থেকেই তিনি প্রচুর অর্ডার পান। 
এ ছাড়াও, শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আসছে কাজের অর্ডার। অনেক সময় নিজে কাপড় কাটতে এবং কারিগররা তা সেলাই করতে হিমশিম খাচ্ছেন। সকাল ৯টা থেকে সেলাই কাজ শুরু হয়, চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রত্যেক কারিগরের মজুরি প্রতিদিন দিয়ে দেন তিনি। তারা পান ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা মজুরি। সব মিলে রোমেনা আক্তার মনি প্রতি মাসে বেচা-বিক্রি ও অর্ডারি কাজ করেন ১ লাখ ৫০ থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তা থেকে তার মাসিক আয় হয়ে থাকে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। স্বামী-সন্তান ও সংসারের সব চাহিদা মিটিয়ে এসব কাজ করেন তিনি। নিজেকে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি কয়েকজন কারিগরেরও সুন্দর একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এই নারী উদ্যোক্তা। 
কারিগর সাহেলা বেগম, মর্জিনা বেগম ও পুরুষ কারিগর রুবেল বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ মনি আপার সেলাই কারখানায় কাজ করে আসছি। এখানে আমাদের কাজের কোনো অভাব হয় না। প্রতিদিন হাতে অনেক কাজ পেয়ে থাকি। তবে আগে যখন বাজারে বিভিন্ন কারখানায় কাজ করতাম, তখন অনেক সময় হাতে তেমন কাজ থাকতো না। এখানে আমরা অনেক ভালো আছি, প্রতিদিন প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার সেলাই কাজ করে থাকি।
রোমেনা আক্তার মনি বলেন, শুরুটা শখের বশে, পরে পেশা হিসেবে নেয়া। আমার ইচ্ছা হাকিমপুরের নারীদের নিয়ে কাজ করবো। তাই হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরাম তৈরি করেছি। আমরা নারীরা অবহেলিত নই, পুরুষের মতো আমরাও নিজেদের স্বাবলম্বী করতে পারি। আমি আমার কারখানায় নিজের কাজের পাশাপাশি নারীদেরও সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। আমি চাই নারীদের বেকারত্ব দূর করতে। তারা কাজ শিখে নিজ বাড়িতে বসে কাজ করবেন এবং তাদের সংসারকে সহযোগিতা করবেন। সেইসঙ্গে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলবেন।