নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক ‘জয়িতা’
অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৭:৪৩ পিএম, ৫ মার্চ ২০২১ শুক্রবার
নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের মূর্ত প্রতীক ‘জয়িতা’
জয়িতা। যিনি সকল বাঁধা-বিঘ্ন জয় করে সাফল্যের চরম স্বর্ণ-শিখরে আরোহন করেন তিনি-ই জয়িতা। অর্থাৎ একজন সংগ্রামী অপ্রতিরোধ্য নারীর প্রতীকী নাম জয়িতা। বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে এগিয়ে গেছেন নারীরা। জয়িতা-ই তার প্রধান উদাহরণ।
সংসারের চার দেয়াল থেকে পেরিয়ে বহু আগেই বাংলার ভগিনারা এখন আকাশে যেমন উড়িয়ে নিচ্ছেন প্লেন, তেমনই ঘোরাচ্ছেন অর্থনীতির চাকা। আর এই নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের মূর্ত প্রতীক জয়িতা। কেবল নিজের অদম্য ইচ্ছাকে সম্বল করে চরম প্রতিকূলতাকে জয় করে তারা তৃণমূল থেকে সবার অলক্ষ্যে সমাজে নিজের জন্য জায়গা করে নিয়েছেন, বদলে দিচ্ছেন আরও অনেকের জীবন-যাপন। নিজেদের অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে বলিয়ান হয়ে তৃণমূলের জয়িতারা এখন নারীদের আইকন।
সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এই জয়িতাদের খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এই উদ্যোগটির নাম ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’।
সরকার জয়িতাদের পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে পুরস্কৃত করছে। এগুলো হচ্ছে- অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী; শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী; সফল জননী নারী; নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন যে নারী এবং সমাজ উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যে নারী।
পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগভিত্তিক জয়িতা বাছাই কাজটি পরিচালিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বাছাইয়ের কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে রাজশাহী বিভাগে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ক্যাটাগরিভিত্তিক মনোনীত ১ হাজার ৪৪১ জন জয়িতার মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে ৩২৬ জন, জেলা পর্যায়ে ৪০ জন ও বিভাগীয় পর্যায়ে পাঁচজন জয়িতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সাহসী নারীর প্রতীক ‘জয়িতা’ সাথী রানী ।
এমনই একজন সাহসী নারীর প্রতীক সাথী রানী। জন্ম থেকেই তার একটি পা নেই। তার ওপর জীবন-যাপনকে চরম কষ্টকর করে তুলেছে দারিদ্র্য। তবু থেমে যাননি তিনি। নিজের চেষ্টাতেই দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে ফেলেন। এ অবস্থায় ভিটেমাটি বিক্রি করে মা-বাবা তাকে বিয়ে দেন।
স্বামী ছিলেন মাদকাসক্ত। স্বামীর সংসারে একটি ছেলে হয় সাথীর। যৌতুকের জন্য দিনের পর দিন অমানুষিক নির্যাতন করতেন স্বামী। কিন্তু থেমে থাকে না সাথীর পথচলা। ২০০৪ সালে সাথী এসএসসি পাস করেন। তার মাদকাসক্ত স্বামী নির্যাতন করে তাকে ঘর থেকে বের করে দেন। চোখে সমুদ্র দেখলেও যেন এতে তিনি আরও আত্মবিশ্বাসী হন। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। সাথী সারাদিন টিউশনি করেন। কলেজে ভর্তি হন। সংসার চালান।
খুব ইচ্ছে ছিল জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবেন। আবার স্বামীর ঘরে ফিরে আসার। কিন্তু পাষ- স্বামী তাকে ছেড়ে দেন। ভীষণ কষ্ট পান সাথী। কিন্তু ভেঙে পড়েন না। সাথীর ভাষ্য, একটি ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে দেখি একজনের হাত নেই। কিন্তু পা দিয়ে সব কাজ করছে। তখন আমার মনে- প্রশ্ন জাগলো? তাহলে আমি কেন পারবো না?
‘অনেক কষ্ট করে সেলাই শিখি। টিউশনির জমানো টাকা দিয়ে একটি পুরোনো মেশিন কিনি। এর আয় দিয়ে আরও একটি মেশিন কিনি।’
পরবর্তীতে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর থেকে একটি মেশিন পান সাথী। সাথী এখন নিজে স্বাবলম্বী। পাশাপাশি গ্রামের দরিদ্র নারী-পুরুষদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরও স্বাবলম্বী করেছেন। ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। সাথী নিজে উচ্চশিক্ষিত হতে চান। সন্তানকেও উচ্চশিক্ষিত করতে চান।
সাথী বলেন, নারীরা নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে সম্মানিত হোক, এটাই আমার প্রত্যাশা। আর্থিকভাবে নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতেও কাজ করতে চাই।
সফল জননী রওশন আরা মুক্তিযুদ্ধে স্বামীকে হারানোর পর তিন সন্তান নিয়ে দুঃস্বপ্নের মতো পথ চলা শুরু করেন। এর শেষ কোথায় জানতেন না তিনি। তবুও সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে মনের শক্তিতে কাজ করে গেছেন রওশন আরা। সৃষ্টিকর্তাও তার দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছেন। এখন তিনি সফল জননী, সাবলম্বী নারী।
প্রবল ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও নিজে পড়ালেখা করতে পারেননি। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন সন্তানদের দিয়ে। জীবন সংগ্রামে জয়ী তাকে হতেই হবে। হলোও যেন তা-ই।
নারী জাগরণের অগ্রদূত পায়রাবন্দের বেগম রোকেয়া পড়ালেখা শুরু করেছিলেন অন্দরমহলে। রওশন আরাও রোকেয়ার মতো বাড়িতেই পড়ালেখা শুরু করেন। এভাবে বিয়ের পর তিন সন্তান জন্ম নেয়ার পর পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েন।
রওশন আরা বলেন, তার যখন বিয়ে হয় তখন তার বয়স ১০-১১। পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে স্বামী শহীদ হওয়ার পর সন্তানদের দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি।
এরপর একটার পর একটা লড়াই করতে হয়েছে রওশনকে। স্বামীর সংসারে টিকে থাকার লড়াই। টাকাপয়সা সংগ্রহের লড়াই। সন্তানদের মানুষ করার লড়াই। স্বামীর মৃত্যুর পর কোনো আর্থিক সঞ্চয় ছিল না। কেবল মাথা গোঁজার একটি ছোট্ট ভিটে, সাড়ে তিন বিঘা কৃষিজমি। এই নিয়ে শুরু করেছেন জীবনযুদ্ধ। বাবা ও একমাত্র ভাই মারা যাওয়ায় বাপের বাড়ি থেকেও সাহায্যের কোনো সুযোগ ছিল না।
ছোট ছেলে রাজশাহী বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। আটটি বিষয়ে লেটার মার্কস পান। সম্মিলিত মেধা তালিকায় ২০তম স্থান অধিকার করেন। তার এক ছেলে প্রকৌশলী, এক ছেলে সেনা কর্মকর্তা এবং মেয়ে স্কুল শিক্ষিকা।
কথাপ্রসঙ্গে রওশনারা বলছিলেন, ‘আসমান-জমিন যদি কাগজ হয়, বৃক্ষলতা যদি কলম হয়, তারপরও আমার কষ্টের কথা লিখে শেষ করা যাবে না।’
তবে এখন তিনি সুখী। সফল জননী। জীবনযুদ্ধে তিনি জয়ী হয়েছেন। তিনি একজন জয়িতা।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা বলেন, বর্তমান সরকার নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যেই নারীদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন ‘সরকার এসব উদ্যোক্তার নিজ-নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অর্জনের যথাযথ স্বীকৃতি হিসেবে এই সম্মাননা প্রদান করছে। যার মাধ্যমে অন্যান্য নারীরাও অনুপ্রাণীত হচ্ছে,।’
- ভৈরবে বোরো ধানের বাম্পার ফলন
- রোববার যেসব এলাকায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে
- কোলে চড়ে ভোট দিলেন বিশ্বের সবচেয়ে খর্বকায় নারী
- সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের রহস্য ফাঁস
- নিয়োগ দেবে হীড বাংলাদেশ, যারা আবেদন করবেন
- অন্দরে সবুজের ছোঁয়া, গরমে মিলবে স্বস্তি
- কুমিল্লায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে
- যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না, এটা বন্ধ হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী
- ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা
- বিরল এক মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হলো দেশ
- কাপ্তাই হ্রদে ৩ মাস মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু
- পার্টিতে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে : রওশন এরশাদ
- বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ
- আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
- গরমে শিশু ও নবজাতকের যত্ন কীভাবে নিবেন
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- ২৯ ফেব্রুয়ারি বা লিপ ইয়ার নিয়ে ১০টি মজার তথ্য
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- এবার বাংলা একাডেমি গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার পাচ্ছেন যারা
- গুলবদন বেগম: এক মুঘল শাহজাদির সাহসী সমুদ্রযাত্রার গল্প
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- দিনাজপুরে ব্যাপক পরিসরে শিম চাষের লক্ষ্য
- জিমন্যাস্টিকসে শিশু-কিশোরদের উৎসবমুখর দিন
- শবে বরাত যেভাবে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে উৎসবে পরিণত হলো