ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৫২:৩৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট তীব্র তাপপ্রবাহ, সতর্ক থাকতে মাইকিং ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপ আজ শুরু জাতির পিতা বেঁচে থাকলে বহু আগেই দেশ আরও উন্নত হতো টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা

ন্যান্সি অ্যাস্টর: দুনিয়ার আইনসভায় প্রথম নারী

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৪৫ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০১৯ রবিবার

ন্যান্সি অ্যাস্টর: দুনিয়ার আইনসভায় প্রথম নারী

ন্যান্সি অ্যাস্টর: দুনিয়ার আইনসভায় প্রথম নারী

একশো বছর আগে আজকের দিনেই ব্রিটেনের পার্লামেন্টে আসন গ্রহণ করেন ন্যান্সি অ্যাস্টর। দুনিয়ার আইনসভায় প্রথম নারী। আজকের তারিখটি পৃথিবীর ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ। এর গুরুত্ব সম্ভবত ৮ মার্চ, বিশ্ব নারী দিবসের চেয়েও বেশি। এ দিনই, ১৯১৯ সালের পয়লা ডিসেম্বর, হাউস অব কমন্‌স-এর প্রথম নারী সদস্য হিসেবে আসন গ্রহণ করেন লেডি ন্যান্সি উইচার ল্যাংহর্ন অ্যাস্টর।

১২৬৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট তৈরির পর কোনও নারী সেখানে পদার্পণ করেননি। গণতন্ত্রের সেই সৌধে প্রথম নারীর পদক্ষেপ ঘটল পার্লামেন্ট-প্রতিষ্ঠার ৬৫৪ বছর পর— ন্যান্সি অ্যাস্টর!

আমেরিকার ভার্জিনিয়া প্রদেশে ১৮৭৯ সালের ১৯ মে ন্যান্সির জন্ম। মা-বাবার এগারোটি সন্তানের মধ্যে তিনি অষ্টম। নিউ ইয়র্ক সিটিতে লেখাপড়া করতে গিয়ে ন্যান্সির সঙ্গে প্রেম হয় মার্কিন সোশ্যালাইট দ্বিতীয় রবার্ট গোল্ড শ-এর। ১৮৯৭-এর ২৭ অক্টোবর তারা বিয়ে করেন। কিন্তু সেই বিয়ে পাঁচ বছরও টেকেনি, ১৯০৩ সালে বিচ্ছেদ। বাবার কাছে ফিরে এলেন ন্যান্সি।

দু’বছর পর ইংল্যান্ডে চলে এলেন ন্যান্সি। তার বুদ্ধিদীপ্ত রসবোধ ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের চুম্বকে ঘায়েল হল অভিজাত ব্রিটিশ সমাজ। আলাপ হল ধনী পরিবারের সন্তান ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টরের সঙ্গে। অতঃপর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হল না তাদের।

কনজ়ারভেটিভ পার্টি অব প্লাইমাউথ, সাটন-এর তরফে এমপি ছিলেন ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টর। ১৯১৯ সালে পারিবারিক কারণে তিনি পদত্যাগ করলে, ওই আসনের জন্য প্রার্থী হন ন্যান্সি। তখন তার বয়স ৪০। সকলকে অবাক করে দিয়ে বিপুল ব্যবধানে ভোটে জিতে পার্লামেন্টের সদস্য হলেন তিনি। অ্যাস্টর পরিবারের পরিচিতিই তার সাফল্যের মূলে, এই কথার উত্তরে তার সরস মন্তব্য, ‘‘আমি আমার স্বামীকে ছাপিয়ে গিয়েছি, সব বিবাহিত মহিলারাই তা-ই করেন।’’

নিজস্ব ভঙ্গিতে নারীমুক্তির কথা বারবার বলেছেন ন্যান্সি। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা ছেলেদের টেক্কা দেওয়ার কথা বলছি না, সেটা আমরা চিরকালই দিয়ে এসেছি, আমাদের দাবি সমান অধিকার।’’ এ বিষয়ে একবার উইনস্টন চার্চিলের সঙ্গে তার বাগ্‌যুদ্ধ হয়। ব্লেনহেম প্যালেসে উইনস্টন চার্চিলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও ন্যান্সি নারীমুক্তির নানা অ্যাজেন্ডা তুলে ধরেন। প্রতিটি বক্তব্যেরই বিরোধিতা করেন চার্চিল।

হাল ছেড়ে দিয়ে ন্যান্সি বলেন, ‘‘উইনস্টন, তুমি যদি আমার স্বামী হতে, আমি নিশ্চিত তোমার কফিতে বিষ মিশিয়ে দিতাম!’’ চার্চিলও পাল্টা বলেছিলেন, ‘‘যদি তুমি আমার স্ত্রী হতে, আমি কফিটা খেয়ে নিতাম।’’

১৯১৯ সাল থেকে টানা ২৬ বছর পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন ন্যান্সি অ্যাস্টর। ১৯৪৫ সালে অবসর নেওয়ার সময় তার বয়স ৬৬। তারপরও ১৯ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি। স্বভাবসিদ্ধ রসবোধ হারাননি মৃত্যুশয্যাতেও। বিছানার চারপাশে মানুষের জমায়েত দেখে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আজ কি আমি মারা যাচ্ছি! না কি আজ আমার জন্মদিন?’’

পঁচাশি পূর্ণ হওয়ার আগেই, ১৯৬৪ সালের ২ মে ন্যান্সি অ্যাস্টরের মৃত্যু হয়।