পাঠক নেই নাটোর ভিক্টোরিয়া পাবলিক লাইব্রেরিতে
ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১১:৩০ পিএম, ২ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার
বইয়ের মাঝে লুকিয়ে থেকে আনন্দ কুড়াতে পাঠকরা আর ভিড় করেন না লাইব্রেরিতে। রাশি রাশি বইয়ের অক্ষরে অক্ষরে তাই চাপা কান্নার আর্তনাদ। পাঠক সংকটে এমনই প্রাণহীন অবস্থা দেশের অন্যতম প্রাচীন নাটোরের ভিক্টোরিয়া পাবলিক লাইব্রেরির।
নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায় এর আমন্ত্রনে ১৮৯৮ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাটোরে আসেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরামর্শে ১৯০১ সালে সাহিত্যিক ও শিক্ষানুরাগী মহারাজা জগদিন্দ্র নাথ প্রতিষ্ঠা করেন ভিক্টোরিয়া পাবলিক লাইব্রেরি। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এ লাইব্রেরি হয়ে ওঠে শিক্ষিত সচেতন গণমানুষের প্রিয় পাঠস্থান। রাজা, জমিদার ও শিক্ষিত এলিট শ্রেণীর আনুকুল্যে গড়ে ওঠে ধনাঢ্য সংগ্রহশালা। অক্ষয় কুমার মৈত্র ও রায় বাহাদুর জলধর সেন পালন করেন বই নির্বাচনের দায়িত্ব। স্যার যদুনাথ সরকার, প্রমথ বিশি’র মত বরেণ্য ব্যক্তিদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে লাইব্রেরি আঙ্গিনা।
ত্রিশের দশকে প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ কাজী আবুল মসউদ ও লেখক গোবিন্দ সাহার মত ব্যক্তিদের গতিশীল নেতৃত্বে লাইব্রেরিটি হয় সমৃদ্ধ। নিয়মিত আয়োজন হতে থাকে পূর্ণিমা তিথিতে বিশেষ সাহিত্য সভা। বিভিন্ন সময়ে সাহিত্য সভায় অতিথি হয়ে আসেন কথা সাহিত্যিক তারা শংকর বন্দোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় এবং যুগান্তর সম্পাদক বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়, আনন্দবাজার সম্পাদক চপলাকান্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ।
’৪৭-এর ভারত বিভক্তির শূণ্যতার পর ষাটের দশকে লাইব্রেরি পুনরায় প্রাণ ফিরে পায়। ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয় এ লাইব্রেরি। আশির দশকে এসডিও এ,এইচ,এস সাদেকুল হকের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং কথা সাহিত্যিক শফী উদ্দিন সরদারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে প্রাণ ফিরে আসে লাইব্রেরির। আর ১৯৮৬ সালে জেলা প্রশাসক জালাল উদ্দিন আহামেদ এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিদ্যমান নতুন ভবনের নির্মান কাজের মধ্য দিয়ে লাইব্রেরির নতুন যাত্রা শুরু হয়। পাঁচ শতাংশ জমির উপর দাঁড়িয়ে থাকা বর্তমানে লাইব্রেরি ভবনের তৃতীয় তলাজুড়ে মিলনায়তন নির্মাণের কাজ এখন শেষের পথে।
পাঠক সমাগমে ভরপুর নব্বই এর দশক ছিল লাইব্রেরির সোনালী সময়। বিভিন্ন দিবস উদযাপন, সাহিত্য আসর আয়োজন, দেয়াল পত্রিকার প্রকাশনা ছিলো চোখে পড়ার মত। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এককভাবে আয়োজন করা হয় একুশের বই মেলার। এক্ষেত্রে দক্ষ সংগঠকের স্বাক্ষর রেখেছেন আলী আশরাফ নতুন ও মরহুম রশীদুজ্জামান সাদী।
কালের পরিক্রমায় বর্তমানে লাইব্রেরিতে এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা, বাংলাপিডিয়া, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসহ ১২ হাজার বই রয়েছে। জেলা প্রশাসনের সাথে যৌথভাবে একুশের বইমেলা আয়োজন ছাড়াও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বিজয় দিবস উদযাপন ছাড়াও অনিয়মিত আয়োজনে রয়েছে সাহিত্য আসর।
প্রতি বছর ডিসেম্বরে আলোচনা-সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে বার্ষিক সাধারণ সভাটি। গত বার্ষিক সাধারণ সভাতে পাঠকদের লাইব্রেরিমুখী করতে অংশগ্রহণকারীদের প্রস্তাবনায় উঠে আসে বেশ কিছু প্রস্তাবনা। এরমধ্যে ই-বুক চালু ও শিক্ষার্থীদের জন্যে বইপড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন উল্লেখযোগ্য। নির্বাহী কমিটিতে একই মুখের আগমন না ঘটিয়ে নতুন মুখ সংযোজন ও কমিটির মেয়াদ তিন বছর থেকে কমিয়ে দুই বছর করার প্রস্তাবও দেয়া হয়।
এসব প্রস্তাবনার ব্যাপারে লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বলেন, প্রয়োজনীয় কম্পিউটার সংগ্রহ করা গেলে ই-বুক এর পরিকল্পনা করা যেতে পারে। এর আগে বইপড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন, স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচিত্র প্রদর্শনসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেও পাঠক বৃদ্ধি পায়নি বলে জানান তিনি।
লাইব্রেরীর পাঠক রেজিষ্টারে দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে সাতজন পাঠকের উপস্থিতি, তাও একই ব্যক্তিদের আগমন এবং তারা মূলত সংবাদপত্রের পাঠক। প্রতিদিন ১টি ইংরেজীসহ মোট ১০টি দৈনিক নেয়া হয়। লাইব্রেরিয়ান অসীম অধিকারী প্রতিদিন গড়ে ৫-৭ জন সদস্য বই নেন বলে দাবি করেন।
নিয়মিত পাঠক কবি গনেশ পাল বলেন, পড়ার নেশা থেকেই আসা। পাঠক না আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন পাঠ্য বই এর চাপে অস্থির, রয়েছে কোচিংয়ের চাপ। ওদের আর সময় নেই। মুহাম্মদ রবিউল হক বই এর সংগ্রহ আরো বৃদ্ধির পরামর্শ দেন।
লাইব্রেরির আজীবন সদস্য মুজিবুল হক নবী নিয়মিত লাইব্রেরিতে না আসা প্রসঙ্গে বলেন, ব্যস্ততা। ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা এবং ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের কারণে লাইব্রেরিতে পাঠক থাকছে না।
লাইব্রেরির আজীবন সদস্য, গবেষক ও উপসচিব মখলেছুর রহমান বলেন, ই-বুক চালু, সাম্প্রতিক প্রকাশনা সংযোজনের মাধ্যমে সংগ্রহ বৃদ্ধিসহ গবেষণাধর্মী বই এর উপর গুরুত্ব প্রদান করে লাইব্রেরিকে যুগোপযোগী করতে পারলে অবশ্যই লাইব্রেরি জমজমাট হবে।
আমাদের শিক্ষিত সম্প্রদায় মোটের উপর বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করেন না- প্রমথ চৌধুরীর একথা মিথ্যা প্রমান করে দিয়ে লাইব্রেরি হয়ে উঠুক পাঠকের পদচারণায় মুখরিত-বোদ্ধা পাঠকের এ প্রত্যাশা। লাইব্রেরি হয়ে উঠুক সমাজ গঠনের হাতিয়ার।
সূত্র : বাসস
- সবজির বাজারে স্বস্তি নেই
- যুদ্ধকে ‘না’ বলতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছি
- তীব্র গরমে শরীর ঠান্ডা রাখবে যে পানীয়
- এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ আজ
- সারাদেশে আজ স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ
- ঢাকাসহ ৫ বিভাগে বজ্রসহ শিলা বৃষ্টির সম্ভাবনা
- নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনপন্থী ৩০০ বিক্ষোভকারী আটক
- আজ প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
- উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যার সতর্কতা জারি
- হবিগঞ্জে ট্রাক-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, এক নারীসহ ৫জনের প্রাণহানী
- ভারী বর্ষণে মহাসড়কে ধস, চীনে ২৪ প্রাণহানি
- জাতীয় সংসদ বসছে আজ
- রাজবাড়ীতে ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল যোগাযোগ বন্ধ
- এভারকেয়ারের সিসিইউতে ভর্তি খালেদা জিয়া
- ফারিণের সফলতায় যা বললেন তাহসান
- খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়ল
- জমজমাট ফুটপাতের ঈদ বাজার
- দেশে ধনীদের সম্পদ বাড়ছে
- বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
- যে বিভাগে বিচ্ছেদের হার বেশি
- ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
- ৭ই মার্চ পরিস্থিতি, কেমন ছিলো সেই দিনটি
- সদরঘাট ট্র্যাজেডি: সপরিবারে নিহত সেই মুক্তা ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা
- শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে
- দিনাজপুরে ব্যাপক পরিসরে শিম চাষের লক্ষ্য
- জিমন্যাস্টিকসে শিশু-কিশোরদের উৎসবমুখর দিন
- বিশ্বে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হয় ১০০ কোটি জনের
- ‘এক মাসে ৫৩ নারীর আত্মহত্যা’
- বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি