ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ১৭:০২:২৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
শিশু হাসপাতালের আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে শিব নারায়ণ দাশের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক পরলোকে জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ন মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট

বীর মুক্তিযোদ্ধা নিবেদিতা: নারী মুক্তিফৌজের অন্যতম সংগঠক

অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:৪৯ পিএম, ৭ মার্চ ২০২১ রবিবার

বীর মুক্তিযোদ্ধা নিবেদিতা: নারী মুক্তিফৌজের অন্যতম সংগঠক

বীর মুক্তিযোদ্ধা নিবেদিতা: নারী মুক্তিফৌজের অন্যতম সংগঠক

সিলেটে ১৯৫৪ সালের ৭ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন নিবেদিতা দাস৷ বাবা নলিনী কান্ত দাস এবং মা স্নেহলতা দাস৷ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নিবেদিতা পরিবারসহ ছাতক হয়ে ভারতের চেলা শিবিরে চলে যান৷

ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সিলেট থেকে প্রথমে ছাতক যাই৷ সিলেট থেকে নদীর তীরে কারিগরি বিদ্যালয়ের কাছে যেতেই প্রচন্ড গোলাগুলি শুরু হয়৷ এর মধ্যেই আমরা কোনমতে একটি রাত ওই বিদ্যালয়ে কাটাই৷ পরের দিন নৌকায় করে ছাতকে সিমেন্ট কারখানায় চলে যাই৷ কিন্তু পাঞ্জাবিরা হামলা চালিয়ে সেখানকার সেতুটি ভেঙে ফেলে৷ এরপর আমরা দোয়ারা বাজার যাই৷’

তিনি আরও বলেন, ‘দোয়ারা বাজারে আমরা যে বাড়িতে উঠেছিলাম সেখানে ডাকাত ছিল৷ আমাদের সবকিছুই তারা নিয়ে নেয়৷ প্রায় শূন্য অবস্থায় মাত্র তিন মাসের শিশু ছেলেটিকে নিয়ে ছুটতে ছুটতে শেষ পর্যন্ত চেলা শিবিরে পৌঁছাই৷'

শরণার্থী শিবিরে শুধু বসে বসে দিন পার না করে দেশের মুক্তির জন্য কাজ করার কথা ভাবতে থাকেন নিবেদিতা দাস৷

যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। এ সময় জাতীয় পরিষদ সদস্য আব্দুল হক এবং আওয়ামী লীগ নেতা হেমেন্দ্র দাস পুরকায়স্থের সহায়তায় সিলেটের নারীদের নিয়ে মহিলা মুক্তি ফৌজ গঠন করেন৷ একদল সাহসী নারী নিয়ে গঠিত এই বাহিনীর প্রধান ছিলেন প্রীতিলতা দাস পুরকায়স্থ এবং সম্পাদিকা ছিলেন নিবেদিতা দাস৷

তারা পাঁচ নম্বর সেক্টরের আওতায় থেকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য কাজ শুরু করেন৷ মহিলা মুক্তি ফৌজের কাজে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন ভারতের সমাজসেবী ও নারীনেত্রী অঞ্জলি লাহিড়ী৷ মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এমএজি ওসমানী এবং প্রবাসী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মহিলা মুক্তি ফৌজের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তারা অর্থ সহায়তাও করেন৷

নিবেদিতা দাস এবং তার সঙ্গীরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য তরুণদের উৎসাহিত করতেন। তাদের প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতেন৷ আহত মুক্তিসেনাদের চিকিৎসা সেবা দিতেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার তৈরি ও সরবরাহ এবং নারীদের কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ দিতেন৷ এছাড়া নারীদের তৈরি হস্তশিল্প বিক্রি করে যুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন তারা৷

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার চার দশক পেরিয়ে গেলেও এখনও সরকারিভাবে স্বীকৃতি ও কোন সুযোগ-সুবিধা পাননি নিবেদিতা দাস৷

তার ভাষায়, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার কাজের দলিল-পত্র রয়েছে৷ সেসব কাগজসহ আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছি৷ অথচ এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে স্বীকৃতি পাইনি৷’

তিনি বলেন, ‘সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাহেবের নির্দেশ মত সমাজকল্যাণ দপ্তরের জেলা কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম আমার সাথে যোগাযোগ করেন। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে আমন্ত্রণ জানান৷ কিন্তু শুধু সভা আর বৈঠকে গিয়ে কী হবে৷ তারা তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে স্বীকৃতি দেননি৷'